শিক্ষাব্যবস্থা যুগোপযোগী করতে ১৫ দফা প্রস্তাবনা খেলাফত আন্দোলনের
প্রকাশ:
০৯ অক্টোবর, ২০২৪, ০৮:৩৩ রাত
নিউজ ডেস্ক |
শিক্ষাব্যবস্থা যুগোপযোগী করতে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করেছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। বুধবার (০৯ অক্টোবর ) বিকাল ৩ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মিয়া হলে ‘বিপর্যস্ত শিক্ষাব্যবস্থা : উত্তরণের পথ ও পন্থা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ প্রস্তাব পেশ করে দলটি। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে দলটির মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, দেড় হাজার বছর আগে ছিল আইয়্যামে জাহেলিয়্যাতের যুগ। মূর্খতা, অজ্ঞতার যুগ। অন্ধকারাচ্ছন্ন সেই অবস্থা থেকে কুরআনি শিক্ষার আলোকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি আলোকিত সোনালী সমাজ গঠন করেছিলেন। পরবর্তীতের তাঁর সাহাবায়ে কেরাম সেই আলোকে সারা পৃথিবীকে আলোকিত করেছেন। এই শিক্ষার আলোকেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। আমরা এমন শিক্ষাব্যবস্থা চাইনা যে শিক্ষা অর্জন করতে সন্তানকে পাঠিয়ে অভিভাবকরা সন্তান মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে কিনা, অশ্লীলতা, মাদক, অপসংস্কৃতির খপ্পরে পড়বে কিনা সেই দুশ্চিন্তায় থাকে। দলটির নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, পাঠ্য বই থেকে বাংলাদেশের মানুষের ধর্ম ইতিহাস ঐতিহ্য সাংস্কৃতি কৃষ্টি কালচার সবকিছু বাদ দেওয়া হচ্ছে। এতে কিশোর অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় তরুণ প্রজন্মকে জ্ঞানী দক্ষ ভালো মন্দ বোঝার মতো করে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদের মাঝে আল্লাহর ভয়, উত্তম চরিত্র, হৃদয়বান, রচিশীল, নন্দনিক, নৈতিক ও মানবিক বোধসম্পন্ন ধার্মিক দেশপ্রেমিক ও সর্বোপরি আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হলে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট, দুর্নীতিসহ সবধরনের অপরাধ বন্ধ হবে। যুগ্ম মহাসচি আলহাজ্ব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি বলেন, পশ্চিমাদের এবং ব্রাহ্মণ্যবাদীদের চাপিয়ে দেওয়া শিক্ষা ব্যবস্থা জাতির কোন কল্যাণ বয়ে আনতে পারবে না আল্লাহ প্রদত্ত কোরআন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর শিক্ষা ব্যবস্থায়ী দেশকে একটি আদর্শ জাতি উপহার দিতে পারে। প্রস্তাবনা সমূহ- ১. শিক্ষাক্রম প্রণয়নে পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণ থেকে বের হয়ে আসা ২. শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল কমিটিতে যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের অন্তুর্ভুক্তকরণ এবং বিতর্কিত ব্যক্তিদের ছাঁটাইকরণ ৩. বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠানে রুপদান, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবে কওমী সনদপ্রাপ্তদের নিয়োগদান ৪. ১ম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলকভাবে পাঠ্যক্রমে রাখা ৫. কওমী সনদপ্রাপ্তদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার পথ সুগম করা ৬. আলিয়া মাদ্রাসা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবজেক্ট প্রদানে বৈষম্য দূরীকরণ,জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, স্কুল-কলেজে বিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয়ের ব্যবহারিক ক্লাসের যথাযথ বাস্তবায়ন করা ৭. প্রজনন ও স্বাস্থ্য শিক্ষার নামে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিব্রতকর বিষয়বস্তু শিশু ও টিনেজ বয়সী শিক্ষার্থীদের সিলেবাস থেকে বাদ দেয়া ৮. ছেলে-মেয়েদের উন্নত চরিত্র গঠন ও নৈতিকতা বিকাশের স্বার্থে সহশিক্ষা বন্ধ করা, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইনের মাধ্যমে সরকারের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার পথ বের না করে এই আইনকে আরও উদ্যোক্তাবান্ধব করা ৯. অটোপাশের ধারা চিরতরে বন্ধ করা ১০. উচ্চতর পড়াশোনায় প্রত্যেক প্রোগ্রামে বিদ্যমান পাঠ্যসূচিতে প্রাসঙ্গিক ধর্মীয় কোর্স অন্তর্ভুক্ত করা ১১. পাঠ্যপুস্তকের সকল সংস্করণ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা এনসিটিবির ওয়েবসাইটে উপলভ্য রাখা ১২. শিক্ষাব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রের সকল বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ১৩. জবাবাদিহিতা নিশ্চিত করাসহ ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রচার সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন দলের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান রহমান হামিদী, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি, হাজী জালালুদ্দীন বকুল, বিশিষ্ট আইনজীবি অ্যাডভোকেট মো: লিটন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দীন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর আমির মাওলানা মাহবুবুর রহমান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর সেক্রেটারি মোফাচ্ছির হোসাইন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুফতি আফম আকরাম হোসাইন, মহানগর নায়েবে আমীর মুফতী আখতারুজ্জামান আশরাফি, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী আবুল হাসান কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মুফতী জসীম উদ্দীন প্রমূখ। এনএ/ |