কে এই ইসমাইল হানিয়া?
প্রকাশ:
৩১ জুলাই, ২০২৪, ১০:৫৩ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
ইরানের তেহরানে গুপ্ত হত্যার শিকার হয়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া। আজ বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে তেহরানে তার বাসভবনে হামলা হলে হানিয়াহ ও তার এক দেহরক্ষী নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস। খবর প্রেস টিভির। ইসমাইল হানিয়া হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধানের পদে থাকলেও তাকেই এই গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মনে করা হয়। গত শতকের আশির দশকে হামাসের উত্থানকালে ফিলিস্তিনি সুন্নি মুসলিমদের এই রাজনৈতিক ও সামরিক আন্দোলনের সামনের কাতারে ছিলেন তিনি। ইসমাইল হানিয়া মিশর অধিকৃত গাজা উপত্যকার আল-শাতি উদ্বাস্তু শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধের সময় তার বাবা-মা বর্তমান ইসরায়েলের অন্তর্গত আসকালানের নিকটের বাড়ি থেকে উদ্বাস্তু হন। জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলে পড়াশোনা করেছেন তিনি। এরপর গাজা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি সাহিত্যে স্নাতক হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে তিনি হামাসে যোগ দেন। ১৯৮৫ সালে মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতিনিধি ছাত্র কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন হানিয়া। বিক্ষোভে অংশ নেয়ার কারণে ইসরায়েলে স্বল্পকালীন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি। ১৯৮৮ সালে তিনি পুনরায় গ্রেপ্তার হন এবং ছয় মাস কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। ১৯৮৯ সালে হানিয়াকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় ইসরায়েল। এরপর ১৯৯২ সালে আরো কয়েকজন হামাস নেতার সঙ্গে হানিয়াকে ইসরায়েল ও লেবানন সীমান্তের শূন্যরেখায় ছেড়ে দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এক বছর নির্বাসনে থাকার পর ইসমাইল হানিয়া গাজায় ফেরেন। ১৯৯৭ সালে হামাসের মতাদর্শিক গুরুর কার্যালয়ের প্রধানের দায়িত্ব পান তিনি। এতে হামাসে পদমর্যাদা বাড়ে হানিয়ার। ৫৮ বছর বয়সী হানিয়া হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের ডানহাত ছিলেন। আহমেদ ইয়াসিন ২০০৪ সালে একটি ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন। ফিলিস্তিনের জাতীয় নির্বাচনে হামাস বেশির ভাগ আসনে জয় পাওয়ার পর ২০০৬ সালে ইসমাইল হানিয়াকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। কিন্তু সপ্তাহব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর গাজায় মাহমুদ আব্বাসের দল ফাত্তাহর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হানিয়াকে সরিয়ে দেয়া হয়। তবে হানিয়া ওই সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, তার সরকার ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি তাদের জাতীয় দায়িত্ব থেকে সরবে না এবং তিনি গাজা শাসন করতে থাকেন। পরে ২০১৭ সালে ইসমাইল হানিয়া হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান নির্বাচিত হন। পরের বছর ইসমাইল হানিয়াকে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। কয়েক বছর ধরে ইসমাইল হানিয়া কাতারে বসবাস করে আসছিলেন। এনএ/ |