ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার ষড়যন্ত্র দেশবাসী মেনে নিবে না : মুফতী ফয়জুল করীম
প্রকাশ:
২৪ জুন, ২০২৪, ১০:৩১ রাত
নিউজ ডেস্ক |
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলাফল অশ্বডিম্ব। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার ব্যাপারে কোন কথা নেই। ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির অধিকার থেকে আমরা বঞ্চিত। সীমান্ত হত্যার ব্যাপারে কোন আলোচনা নেই। ১০টি সমঝোতা চুক্তি দেশ-বিরোধী নতুন দাসখত। নতজানু ডামি সরকারের পক্ষে ভাল কিছু করা সম্ভব নয়। নয়াদিল্লীর কালো চুক্তির নামে ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার ষড়যন্ত্র দেশবাসী মেনে নিবে না। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশপ্রেমিক জনতা প্রতিহত করবে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় লাগামহীন দুর্নীতির কারণে মানুষ চরম কষ্টকর জীবন-যাপন করছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ কষ্টে আছে। অপরদিকে পানি-গ্যাসের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনকে বিষিয়ে তুলছে। ব্যাংক লুটপাটসহ শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, বিদেশে অর্থ-পাচার ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় লাগামহীন দুর্নীতির কারণে চরম কষ্টকর জীবন-যাপন করছেন। বাজার সিন্ডিকেটের কাছে মানুষ চরম অসহায়। সিন্ডিকেট না ভাঙতে পারলে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে না।’ সোমবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলা জেলা শাখার সদর উপজেলার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত নবীন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই এসব কথা বলেন। সদর উপজেলার শহরের বাংলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এইচ এম আব্দুর রব। মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম আরও বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেটে সাধারণ মানুষের ওপর করের বোঝা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিদিনের জীবন-যাপনে অপরিহার্য নানা পণ্যের সেবার ওপর বাড়তি কর চাপানো হয়েছে। মোবাইল-ফোনে কথা বলার ওপর অতিরিক্ত কর বসানো হয়েছে। পানি শোধন যন্ত্র, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বা এসি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন গৃহস্থালি দ্রব্যের উপর শুল্ক কর বাড়ানো হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের কষ্ট ও দুর্ভোগ বাড়াবে।সরকার ঋণ-নির্ভর বাজেট দিয়ে জাতিকে ঋণের বোঝায় জর্জরিত করে তুলছে। সরকারের ঘোষিত নতুন বাজেট জনগণের উপর নতুন করে দ্রব্যমূল্যের খড়গ চাপিয়ে দেয়ার বাজেট। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান মোমতাজী, সহসভাপতি ওবায়েদ বিন মোস্তফা, সেক্রেটারি মাওলানা তরিকুল ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারি মুফতি আবদুল মমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইউসুফ আদনান, ইসলামী যুব আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন,শ্রমিক আন্দোলন সহ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল) অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাজেটে কালো টাকা সাদার করার সুযোগ মানে দুর্নীতির টাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে করে ভবিষ্যতে আরো দুর্নীতি-গ্রস্ত জাতি তৈরি সুযোগ করে দিলো সরকার। তিনি বলেন, দুর্নীতির টাকা সাদা করার সুযোগ না দিয়ে বরং দুর্নীতি টাকা ফিরিয়ে এনে জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা উচিত। অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে তা বার্ষিক লুটপাটের বরাদ্দ-পত্র। ঋণ-নির্ভর বাজেটের সর্বোচ্চ বরাদ্দ ঋণের সুদ প্রদানের জন্য রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এ বছর আগের ১২ বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে, যা মোট রাজস্ব আয়ের প্রায় এক তৃতীয়াংশ। এতে করে জনগণকে সুদের সাথে সম্পৃক্ত করার গভীর ষড়যন্ত্র। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে সুদ দেয়া, নেয়া, সুদের সাক্ষী হওয়া সবই গুনাহের কাজ। সরকার কৌশলে জনগণকে সুদে সম্পৃক্ত করার নীল নকশা বন্ধ করতে হবে। সরকারি কাজে ব্যয় কমানো কিংবা আর্থিক খাতের সংস্কার নিয়ে এদের কোনো উদ্যোগ নেই, এদের আগ্রহ অনুৎপাদনশীল উন্নয়ন প্রকল্পে। হাআমা/ |