কওমি মাদরাসার সিলেবাসে পরিবর্তন নয় : মুফতী জাফর আহমাদ
প্রকাশ: ২৪ জুন, ২০২৪, ০৪:৫৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

|| হাসান আল মাহমুদ ||

কওমি মাদরাসার সিলেবাসে কোনো পরিবর্তন নয় বলে মন্তব্য করেছেন রাজধানীর ঢালকানগরের পীরখ্যাত বিশিষ্ট আলেম বাইতুল উলুম ঢালকানগর মাদরাসার মুহতামিম মুফতী জাফর আহমাদ

তিনি বলেন, ‘কওমি মাদরাসার সিলেবাস পরিবর্তন করার আওয়াজ ওঠে মাঝে মাঝে। আমার মতে তা একবারেই ঠিক না। তার কারণ হল, কওমি মাদরাসার সিলেবাস পরীক্ষিত সিলেবাস। এ সিলেবাস পড়েই বড় বড় আলেম হয়েছেন। কওমি মাদরাসার উদ্দেশ্য ডাক্তার বানানো না, ইঞ্জিনিয়ার বানানো না, সাংবাদিক বানানো না। আলেম তৈরী করী করাই কওমি মাদরাসার প্রধান লক্ষ্য।

২ জুন ২০২৪ রোববার সন্ধায় আওয়ার ইসলামের সঙ্গে রাজধানীর ঢালকানগর মাদরাসায় এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুফতী জাফর আহমাদ এই কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন আওয়ার ইসলামের বার্তা সম্পাদক কাউসার লাবীব

তিনি বলেন, ‘আমার ইচ্ছে হল কওমি মাদরাসাকে কওমি মাদরাসাই থাকতে দেওয়া। এখান থেকে ডাক্তার হবে, ইঞ্জিয়ার হবে বা সাংবাদিক হবে এ বুঝটাই ভুল। কারণ এটার নাম মাদরাসা; স্কুল-কলেজ না।’

মুফতী জাফর আহমাদ-এর মতে, ‘কওমি মাদরাসার উদ্দেশ্য হল এমন কিছু আলেম তৈরী করা, যারা দ্বীনকে সামনে রেখে চলবে। তাদের মাকসাদই দ্বীন হবে। আর দ্বীনের সম্পর্ক হল ৬ জিনিসের সাথে। এক- কুরআনুল কারিম। দুই- হাদিস শরীফ। তিন- ফিক্বাহ। চার- উসুলে তাফসীর। পাঁচ- উসুলে হাদিস। ছয়- উসুলে ফিকাহ। এই ছয় জিনিসের মাধ্যমে আল্লাহ পাক মেহেরবানি করে আমাদেরকে দ্বীনদার করেছেন।’

আকাবিরদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের আকাবিররা যখন এই কওমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন, যেমন হজরত মাওলানা কাসেম নানুতুবী রহ. দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা করার পর থেকেই একটা নেসাব চলে এসেছে পুরো বিশ্বে এই নেসাব ছড়িয়ে পড়েছে। এই নেসাব সম্পর্কে বড় এক ব্যক্তি (নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছি না) বললেন, তিনি এই নেসাব পড়ে দুনিয়ার কোনো জায়গায় গিয়ে দাম পাবে না, চাকরি পাবে না। তখন হজরত হাসি দিয়ে বললেন, আলহামদুলিল্লাহ! তাহলে আমরা কামিয়াব। কারণ আমোদের উদ্দেশ্য, এমন কিছু আলেম তৈয়ার করে দেয়া, যারা দ্বীনের ধারকবাহক হয়, তারো যেন দ্বীন শিখে। এই নেসাব পড়ে যদি দ্বীন শিখতে পারে, তাহলে এই দ্বীনকে আগে বাড়াতে পারবে। নতুন প্রজন্মকে তারা দ্বীন দিতে পারবে। তারা অন্য কোথাও চাকরি করবে না, তারা কেবল মুদাররিস হবেন।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যারা তাখাচ্ছুছ পড়ছেন, তারা কিন্তু সেই পুরনো নেসাবে পড়ুয়া আলেমদের কাছেই পড়ছেন। পুরাতন নেসাবে (আমার বর্ণিত) ছয়টি বিষয় পড়ে যারা আলেম হয়েছেন, তাদের কেউ কিন্তু তাখাচ্ছুছ পড়েন নাই। অথচ, নতুন নেসাবে যারা পড়ে আলেম হয়েছেন, ১০ তাখাচ্ছুছ পড়েও তাদের দ্বারা কোনো কাজ হয়েছে বলে মনে পড়ছে না। হ্যাঁ, কিছু অনুবাদ করার যোগ্যতা তাদের হয়েছে। উল্লেখযোগ্য দ্বীনি কোনো প্রতিষ্ঠানে মুহাদ্দিস কি না তা আমি জানি না। বরং আল্লাহর মেহেরবানিতে আমি যতটুকু বুঝি, আমি মনে করি তা সঠিক।’

হাআমা/