সন্তানের আশায় বটগাছের তলে আঁচল বিছিয়ে নারীরা
প্রকাশ:
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৫:৪৯ বিকাল
নিউজ ডেস্ক |
কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের অন্ধবিশ্বাসের বিষয়টি নতুন নয়। দেশের বড় একটি জনগোষ্ঠীর ধর্ম সম্পর্কে যথেষ্ঠ জ্ঞান না থাকায় জড়িয়ে পড়ছে নানা কুসংস্কারে। গ্রাম বাংলায় রয়েছে কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের ব্যাপক প্রচলন। তেমনি এক অন্ধবিশ্বাস হলো বটবৃক্ষের তলে আঁচল বিছিয়ে সন্তান লাভের আশায় ভিখ! ভিখ মানে ভিক্ষা। ভক্তদের বিশ্বাস নিঃসন্তান বন্ধ্যা মহিলারা আশ্রমের অক্ষয় তলা নামক স্থানে বটগাছের নিচে ভেজা কাপড়ে বসে আঁচল বিছিয়ে সন্তান লাভের জন্য ভিখ মাগবেন। তাদের বিশ্বাস, যদি গাছের ফল বা পাতা আঁচলের ওপর পড়ে তাহলে নিঃসন্তান নারী সন্তান লাভ করবে। নাটোরের লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের গোঁসাইজীর আশ্রমে এই দৃশ্য চলছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় ওই বটগাছের নিচে চারজন নারী ভক্তি ভরে চাদর বিছিয়ে গাছ থেকে পাতা পড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। আর তাদের কর্মকাণ্ড পেছনে ও পাশ থেকে দেখছেন অনেক নারী-পুরুষ। আশ্রমের এক নারী বৈষ্ণব তাদের দেখভাল করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, অনেকের মুখে শুনেছি আঁচল বিছিয়ে মানত করলে সন্তান হয় বা হয়েছে।সে আশায় এখানে এসেছি। খুলনা থেকে আসা আরেক নারী জানান, দীর্ঘ ৮ বছর ধরে আমার সন্তান হয় না। অনেক চিকিৎসা করেও ফল পাইনি। এজন্য এখানে এসেছি । আশ্রম কমিটির সভাপতি সঞ্জয় কুমার জানান, দুই দিনব্যাপী নবান্ন উৎসবে নিঃসন্তান নারীরা তাদের মানত করে এখানে আসেন। পরে আগত ভক্তদের কলাপাতায় করে প্রসাদস্বরূপ খিচুড়ি খাওয়ানো হয়। আশ্রমের প্রধান সেবাইত পরমানন্দ সাধু জানান বাংলা ১২১৭ সালে উপজেলা প্রায় ৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে দূড়দুড়িয়া ইউনিয়নের পানসি পাড়া গ্রামে গহীন অরণ্যের একটি বটবৃক্ষের নিচে আস্তানা করেন শ্রী ফকির চন্দ্র বৈষ্ণব। এখান থেকে সাধু ধ্যান তাপস্য ও বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার শুরু করেন। প্রতিবছর দোল পূর্ণিমা গঙ্গাস্নান ও নবান্ন উৎসব উপলক্ষে হাজারো ভক্তবৃন্দ, দর্শনার্থী ও সাধকরা উপস্থিত হন।
এনএ/ |