পাগলা মসজিদের দান বাক্সে মিলল ২৩ বস্তা টাকা, চলছে গণনা
প্রকাশ:
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০৯:৪৪ সকাল
নিউজ ডেস্ক |
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের নয়টি লোহার দানবাক্স ৩ মাস ২০ দিন পর আবারও খোলা হয়েছে। দানবাক্স থেকে এবার পাওয়া গেছে ২৩ বস্তা টাকা। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্স কমিটির আহ্বায়ক ও কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে বাক্সগুলো খোলা হয়। অন্যান্ন সময় আটটি থাকলেও এবার আরেকটি বাড়ানো হয়েছে। ফলে নয়টি দান সিন্দুক থেকে এবার পাওয়া গেলো ২৩ বস্তা টাকা। এর আগে চলতি বছরের ১৯ আগস্ট দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ৩ মাস ১৩ দিনে ওই দানবাক্সগুলোতে জমা পড়েছিল রেকর্ড পরিমান টাকা। তখন দিনভর গণনা শেষে এতে টাকার পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫। এ ছাড়া আরও জমা পড়েছিল বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা। আজ সকাল ৮টার দিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছে। দানবাক্সগুলো খুলে ২৩টি বস্তায় ভরে টাকাগুলো মসজিদের দোতলায় নেওয়া হয় গণনার জন্য। এখন গণনার কাজ চলছে। এবারও দান সিন্দুকের টাকা গণনার সময় অনেক চিঠি-পত্র পাওয়া গেছে। সেসব চিঠিতে দানকারীরা নিজেদের মনের বাসনার কথা লিখে জানিয়েছেন।
প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দানবাক্সগুলোতে টাকাপয়সা ছাড়াও স্বর্ণালংকার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন। কথিত আছে, খাস নিয়তে এ মসজিদে দান করলে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়। সে জন্য দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এখানে এসে দান করেন। জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, দানের টাকা মসজিদের উন্নয়ন কাজসহ আর্ত মানবতার সেবায় ব্যায় করা হয়। এছাড়াও ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন আন্তর্জাতিক মানের ইসলামি কম্প্লেক্স স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। কথিত আছে, প্রায় ৫০০ বছর আগে বাংলার বারোভূঁইয়া বা প্রতাপশালী ১২ জন জমিদারের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে ‘দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিলকদর পাগলা’ নামের একজন ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তী সময়ে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। সেই থেকে মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ নামে পরিচিতি পায়। পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা জানান, ব্যাংকে জমা রাখা টাকার মুনাফা থেকে দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ও অসহায় মানুষদের সহায়তাসহ জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, টাকা গণনার কাজ চলছে। গণনা শেষে সব টাকা পূর্ণ নিরাপত্তার সঙ্গে ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে। এনএ/ |