বাইডেনকে যে আল্টিমেটাম দিল মার্কিন মুসলিমরা
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর, ২০২৩, ১১:৪৮ রাত
নিউজ ডেস্ক

যুদ্ধবিরতি কার্যকর না করলে বাইডেনের জন্য কাজ করবেন না মুসলিমরা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি ইসরায়েলের সরকারকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার জন্য প্রভাবিত না করতে পারেন, তাহলে আগামী নির্বাচনে তার পক্ষে ভোট ও তহবিলের জন্য কাজ করবেন না বলে আল্টিমেটাম দিয়েছেন তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মুসলিম সদস্যরা।

ডেমোক্রেটিক পার্টির মুসলিম সদস্যদের জোট দ্য ন্যাশনাল মুসলিম ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে ‘২০২৩ যুদ্ধবিরতি আল্টিমেটাম’ নামে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেছে।

সেখানে বাইডেনের উদ্দেশে কাউন্সিলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘(ইসরায়েলের সরকারে প্রতি) আপনার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের নিঃশর্ত সমর্থন, অর্থ ও সামরিক সহায়তা ফিলিস্তিনের বেসামরিক লোকজনদের ওপর পরিচালিত সহিংসতাকে স্থায়ী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং একই সঙ্গে, গত নির্বাচনে যেসব মার্কিন মুসলিম ভোটার আপনার পক্ষে ছিলেন— আপনার প্রতি তাদের আস্থা দিন দিন কমে আসছে।’

‘তাই ন্যাশনাল মুসলিম ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইসরায়েলের সরকারকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার জন্য আপনি যদি নিজের প্রভাব ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকেন, সেক্ষেত্রে ডেমোক্রেটিক পার্টির মুসলিম সদস্যরা আগামী নির্বাচনে আপনার জন্য প্রচার-প্রচারণা এবং তহবিল ও ভোট সংগ্রহ সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে।’

২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুসারে, দেশটির যে কোনো নাগরিক পর পর দুই বার প্রেসিডেন্ট হতে পারেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রথম মেয়াদ পার করছেন। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচনেও বাইডেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন।

এবং বাইডেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ব্যক্তিগতভাবে খুবই ইচ্ছুক। তবে এ ক্ষেত্রে বয়স একটি বড় বাধা। ২০২৪ সালে তার বয়স হবে ৮২ বছর এবং তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই চাইছেন, তিনি যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত থাকেন।

আগামী নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য দলীয় সমর্থন নিশ্চিত করতে সম্প্রতি ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি।

২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ের পর বাইডেন বলেছিলেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের স্থায়ী সমাধান হলো ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধান’ (টু স্টেট সলিউশন); কিন্তু ইসরায়েল কিংবা ফিলিস্তিন— কোনো পক্ষই তখন তার এই প্রস্তাবকে তেমন আমল দেয়নি।

সম্প্রতি স্মরণকালের ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হয়েছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে । গত ৭ তারিখ থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক।

যুদ্ধের শুরু থেকেই গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে চীন, রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ এমনিক জাতিসংঘও। কিন্তু ইসরায়েল তা বারবার নাকচ করে দিচ্ছে এবং এক্ষেত্রে যেসব দেশ ইসরায়েলকে অকুণ্ঠভাবে সমর্থন করছে, তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

সূত্র : রয়টার্স

এনএ/