গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে ১ হাজার মরদেহ: ডব্লিউএইচও
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর, ২০২৩, ০১:২০ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বোমা হামলায় ধসে পড়া ভবনগুলোর নিচে এক হাজারেরও বেশি মরদেহ পড়ে আছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। যেসব মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে সেগুলো মৃতের সংখ্যার সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি বলেও জানায় জাতিসংঘের সহযোগী এ সংস্থাটি। খবর আল-জাজিরার।

গাজায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিচার্ড পিপারকর্ন শুক্রবার এমন তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘আমরা হিসাব পেয়েছি যে, এক হাজারেরও বেশি মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে। যাদের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি।’ তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য দেননি তিনি। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, তিন সপ্তাহ ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলায় সমুদ্র তীরবর্তী ছোট এ উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ২৮ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও ১ হাজারের বেশি মরদেহ পড়ে থাকার অর্থ হলো গাজায় মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ট বলেছেন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরবর্তী ধাপের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি। তিনি ইঙ্গিত দেন, উপযুক্ত সময়ে গাজা উপত্যকায় তাদের স্থল অভিযান শুরু হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি জটিল হলেও তাদের সেনারা প্রস্তুত আছেন। এর আগে গত বুধবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘হামাসে ওপর নরকের আগুনের বৃষ্টি হচ্ছে এবং আমরা স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ নেতানিয়াহুর সুরেই কথা বলেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট। তার দাবি, তারা গাজায় বর্তমানে যে বিমান হামলা চালাচ্ছেন সেটি বেশ ভালোভাবে কাজ করছে। ইয়োয়াভ গ্যালান্ট বলেন, ‘হামাসের বিরুদ্ধে তাদের চলমান এ যুদ্ধের ফলাফলই আগামী ৭৫ বছরের জন্য ইসরায়েলের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেবে। এ কারণে হামাসের বিরুদ্ধে এ মুহূর্তে যুদ্ধ করা ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় নেই। গত ৭ অক্টোবর হামাস যেসব ইসরায়েলিকে ধরে নিয়ে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনতে যা প্রয়োজন তার সবই করবেন তারা।’

ইসরায়েলের অবৈধ বসতিগুলো লক্ষ্য করে গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস চালানোর পরই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তাদের এসব নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন, যার বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ ও শিশু। গাজায় পূর্ণমাত্রার সম্ভাব্য স্থল অভিযান চালানোর আগে এখন ট্যাংক নিয়ে ছোট ছোট অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। বুধ এবং বৃহস্পতিবার টানা দুই রাত তারা ট্যাংক ও অন্যান্য সাঁজোয়া যান নিয়ে গাজার ভেতর প্রবেশ করেছিল।

এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ নিয়ে ২১ দিনের এ যুদ্ধে গাজায় নিহতের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়াল। গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সাত হাজার ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ নারী ও শিশু।

সুত্র:  আল-জাজিরার।

এনএ/