নগদ-রকমারি বেস্টসেলার অ্যাওয়ার্ড পেলেন ১৮ জন লেখক ও ২১টি বই
প্রকাশ:
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ০৮:৩৮ রাত
নিউজ ডেস্ক |
বাংলাদেশে অনলাইন বই বিপণনের সবচে’ বড় প্রতিষ্ঠান রকমারি ডট কমের উদ্যোগে আয়োজিত হলো ‘নগদ-রকমারি বইমেলা বেস্টসেলার অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ অনুষ্ঠান। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত রকমারি থেকে সর্বোচ্চ বিক্রিত বইয়ের লেখকদের দেওয়া হয় এ পুরস্কার। ফিকশন, নন ফিকশন, ধর্মীয় এবং ক্যারিয়ার ও একাডেমিক- এ চার শাখায় রকমারিতে সর্বোচ্চ বিক্রি হওয়া বইয়ের ৪ জন লেখক ও ৪টি বইকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়া একইসঙ্গে ২১টি ক্যাটাগরির ২১ জন লেখক ও ২১টি বইকেও সম্মাননা জানানো হয় এ অনুষ্ঠানে। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর খামার বাড়ি রোডে অবস্থিত কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ফিকশন বিভাগে বেস্টসেলার লেখক হিসেবে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন জনপ্রিয় তরুণ তাসরিফ খান। একই বিভাগে বেস্টসেলার বই ছিল কিংবদন্তী পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত বাইশের বন্যা। নন-ফিকশন শাখায় বেস্টসেলার লেখক হিসেবে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন মুহাম্মদ ইলিয়াস কাঞ্চন। নন-ফিকশন বিভাগে বেস্টসেলার বই হিসেবে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে পেয়েছে আদর্শ থেকে প্রকাশিত বিজনেস ব্লুপ্রিন্ট। ধর্মীয় বিভাগে বেস্টসেলার লেখক হিসেবে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন আরিফ আজাদ। একই বিভাগে বেস্টসেলার বই হয়েছে সত্যায়ন থেকে প্রকাশিত ‘কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ’। ক্যারিয়ার ও অ্যাকাডেমিক ‘ম্যাজিক ম্যাথ’ বই লিখে অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন মোত্তাসিন পাহলভী। ইনফিনিটি পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত তার বইটিও একই বিভাগে বেস্টসেলার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বেস্টসেলার হয়েছেন উপন্যাসে সাদাত হোসাইন, সায়েন্স ফিকশনে মুহম্মদ জাফর ইকবাল, কমিক ও রম্যতে অন্তিক মাহমুদ, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধে আসিফ নজরুল, জীবন ইতিহাসে মহিউদ্দিন আহমদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন ফকির, আত্ম-উন্নয়ন ও মোটিভেশনে প্রিতম মুজতাহিদ, বিবিধ শাখায় ড. আমিনুল ইসলাম, কুরআন ও হাদিসে জোবায়ের আল মাহমুদ, ইসলামি ইতিহাস-ঐতিহ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে মাহমুদ, ইসলামী আদর্শ ও মতবাদে মিরাজ রহমান, ভাষা ও অভিধানে সাইফুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ভর্তি শাখায় বিজ্ঞানবিদ্যা টিম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথপ্রযুক্তিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)’র প্রতিষ্ঠাতা অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান, কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রয় সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল, একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুক এবং রকমারি ডট কমের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সূচনা বক্তব্য রাখেন রকমারি ডট কমের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল আনাম রনি বলেন, রকমারি.কম এর সহ প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা খায়রুল আনাম রনি বলেন, “এক যুগ পার করা রকমারি.কম এর আজকের এই অবস্থানে আসাটা কল্পনাতীত ছিলো। বইয়ের সাথে যারা কানেক্টেড তাদের সম্মান জানানোই এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য। পাঠক, প্রকাশক ও লেখকদের সুবিধার জন্যই রকমারি.কম কাজ করে যাচ্ছে।“ রকমারি.কম এর সহ প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জুবায়ের বিন আমিন বলেন, “বাংলাদেশে ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা বাড়াতে আমরাই প্রথম অনলাইনে ক্যাশ অন ডেলিভারি সার্ভিসের মাধ্যমে বই ডেলিভারি শুরু করি।“এছাড়াও তিনি ২০৩০ সালের মধ্যে সকল বাংলা বই ডিজিটাল করে বিশ্বব্যাপি ৩৬ কোটি বাঙালির কাছে ছড়িয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বই নিয়ে পিছিয়ে থাকা একটা জাতি আমরা। তবে আমাদের জন্য আনন্দের বিষয় এটা, বাংলাদেশের একটা ইকমার্স কোম্পানি তাদের পণ্য হিসেবে বই নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকাশকদের জন্য সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ বই বিক্রি করা। সেই কাজটি সহজ করে দিয়েছে রকমারি ডট কম। বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন বলেন, “বই পড়ার মধ্য দিয়ে মানুষের মনলোক আলোকিত হয় ও চেতনা সমৃদ্ধ হয়। আমরা যদি যার যার যায়গা থেকে কিছু করি তাহলে সবাইকে বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে পারবো। কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, একটা সময় আজিজ সুপার মার্কেট, নিউ মার্কেট, শাহবাগসহ বিভিন্ন নামিদামি জায়গায় বইয়ের দোকান থাকলেও তা ধীরে ধীরে বিভিন্ন কারণে হারিয়ে গেছে। সেই জায়গাটা দখল করেছে অন্যকিছু। ফলে যারা বই পড়েন, তারা খুঁজে খুঁজে বই এনেছেন বিভিন্ন জায়গা থেকে। সেদিক থেকে বই আহরণের কাজটিকে সহজ করেছে রকমারি। অন্যান্য পণ্য আনলেও বইয়ের প্রতি তাদের যেন আলাদা নজর থাকে, তার জন্য আলাদা প্রত্যাশা থাকবে।” একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, ”আমার বই কেউ খোজ করলে আমি বলি রকমারিতে খুঁজতে।“এছাড়া তিনি অনুষ্ঠানে মেয়ে পাঠকের সংখ্যা কম হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। সমাপনী বক্তব্য দেন রকমারি ডট কমের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ। তিনি বলেন, প্রকাশকরা একসময় আমাদের নিয়ে হাসতেন তবে এখন তারা আমাদের তাদের বন্ধু মনে করে। আমরা শুরু থেকে গুটি গুটি করে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশের বাইরেও ৩০টি দেশে আমরা এখন বই পাঠাচ্ছি। এতদিন মনে করা হতো যে রকমারি একটা প্ল্যাটফর্ম যারা বই ডেলিভারি করি। তবে আগামীতে আমরা উদ্যোক্তা প্রকাশকদের নিয়ে কাজ করতে চাই। আগামীতে আমরা ই-বুক, অডিও বুক আনতে যাচ্ছি। অনুষ্ঠানের টাইটেল পার্টনার ছিল ডাকবিভাগের ডিজিটাল লেনদেন নগদ। পাওয়ার্ড বাই ইস্পাহানি এবং গিফট পার্টনার ছিল কেয়ার নিউট্রিশন, ন্যাচারালস, অর্গানিকাওন, সেভেন ডেজ নোটস ও যাদরো ডট কম। লাইভ কুইজ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়, তাতে ৪০ জন দর্শককে পুরস্কৃত করা হয় এবং আয়োজনের শেষে অনুষ্ঠিত হয় র্যাফেল ড্র। এতে অনুষ্ঠানে আসা দর্শক ও অতিথিদের মধ্য থেকে ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। কেএল/ |