সৌদিতে সম্মান কুড়ালেন আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার বাংলাদেশি বিচারক
প্রকাশ:
০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ০৮:৪২ রাত
নিউজ ডেস্ক |
সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় যথাযথভাবে বিচারকের দায়িত্ব পালন করে বিশেষ সম্মাননা পেলেন খ্যাতিমান ইসলামিক স্কলার, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রধান মুহাদ্দিস হাফেজ ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খান। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বিচারক প্যানেলে প্রথম বারের মতো একজন বাংলাদেশি আলেম দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিযোগিতার বিচারকার্য যথাযথ পালন করায় অনুষ্ঠানে তাঁকেও বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এশার নামাজের পর বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের পক্ষ থেকে এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও বিচারকদের হাতে পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দিয়েছেন মক্কার ডেপুটি গভর্নর প্রিন্স বদর বিন সুলতান। ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খান বিগত ১৮ বছর যাবত বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআনুল কারিম হিফজ, তিলাওয়াত ও তাফসির প্রতিযোগিতার বাছাই পর্বে বিচারকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ওআইসি যুব ক্বিরাআত প্রতিযোগিতার বিভিন্ন অধিবেশনে এবং জাতীয় শিশু-কিশোর কোরআন প্রতিযোগিতায় তিনি ন্যায়নিষ্ঠভাবে বিচারকার্য সম্পাদন করে সংশ্লিষ্ট সবার আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছেন। ইতঃপূর্বে তিনি মিসর, জর্দান, আলজেরিয়া ও সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হিফজুল কোরআন ও ইলমি সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। ড. ওয়ালী খান এই মর্যাদাপূর্ণ দায়িত্বে তাকে নিয়োগ দেওয়ায় মহান আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করেন। পাশাপাশি তিনি মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও সৌদি আরব সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এদিকে সহোদরের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাপরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী। তিনি বলেন, দেশের একজন আলেম, কুরআনের এতো বড় আসরে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা দেশের জন্য সম্মানের বিষয়। আমি ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খানকে অভিনন্দন জানাই। দেশে হিফজ শিক্ষার উৎকর্ষতায় তার অবদান আমরা আজীবন মনে রাখব। তিনি আরও বলেন, সারাবিশ্বের মুসলিমদের ভালোবাসার জায়গা মক্কা-মদিনা। সেই দেশের প্রতিযোগিতায় প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশী প্রতিযোগিদের সাফল্য আমাদের জন্য গৌরবের। তাদের প্রতি ভালোবাসা এবং অভিনন্দন।এটা যেমন আমাদের জন্য গৌরবের, তেমনি দেশের সব মানুষের জন্য আনন্দের বিষয়। সবাই তাদের জন্য দোয়া করবেন, হাফেজ ফয়সাল ও মুশফিককে আল্লাহ তায়ালার দীনের দাঈ হিসেবে কবুল করুন। প্রসঙ্গত, প্রতিযোগিতার পূর্ণ কুরআন হিফজ বিভাগে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে ফয়সাল আহমেদ। পুরস্কার হিসেবে সে পেয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ৫২ লাখ ৬২ হাজার ৫৭৯ টাকা) ও সম্মাননা পদক। প্রতিযোগিতার চতুর্থ বিভাগে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে মো. মুশফিকুর রহমান। পুরস্কার হিসেবে সে পেয়েছে এক লাখ ২০ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ৩৫ লাখ ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা) ও সম্মাননা পদক। হাফেজ ফয়সাল আহমেদ রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় পড়াশোনা করেছে। তার বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়ায়। হাফেজ ফয়সাল চলতি বছরের মার্চ মাসে লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন তিনি। সে পূর্ণ কুরআন হিফজ বিভাগে অংশ নিয়েছে। অপর প্রতিযোগী মো. মুশফিকুর রহমান পবিত্র কোরআনের ১৫ পারা হিফজ বিভাগে অংশ নিয়েছে। সে কক্সবাজারের মা’হাদ আন-নিবরাসে কুরআন হিফজ সম্পন্ন করেছে। সে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ও নিউজ টোয়েন্টিফোর কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় যথাক্রমে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ হয়। এছাড়াও কক্সবাজার জেলা হুফফাজুল কুরআন সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত জেলাভিত্তিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় একাধিকবার ১ম স্থান অর্জন ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় (২০২২) সারাদেশে ২য় স্থান(ঘ)অর্জন করে। এমআর/ |