|| এম মাআয ||
সূর্য তখনও ডোবেনি। তেজ কমেছে মাত্র। রামপুরা থেকে আফতাবনগরের পথে রওনা করলাম। ঢাকার পথের চিরচেনা জ্যাম ঠেলে গিয়ে নামলাম আফতাবনগরের বিশাল গেটের সামনে। রিক্সাযোগে পৌঁছালাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া ইদারাতুল উলুম আফতাবনগর মাদরাসায়। চারোপাশে সবুজের সুনসান পরিবেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে নির্মাণাধীন মাদরাসা-মসজিদ কমপ্লেক্স।
পহেলা রমজান থেকে এখানে এতেকাফ করছেন আওলাদে রাসুল মাওলানা সায়্যিদ মাহমুদ মাদানি দা. বা.। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তার বহু ভক্তবৃন্দের সমাগম ঘটেছে এখানে। দিনের বেশিরভাগ সময় বয়ান, জিকির, কোরআন তেলাওয়াত ও বিভিন্ন আমলে মুখরিত হয়ে থাকে খানকার পরিবেশ।
ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে মাদরাসায় প্রবেশ করলাম। পশ্চিমের টিনশেডে হিফজখানা। পাশের গেট দিয়ে ঢুকে পড়লাম মুল ভবনে। অফিসের পাশে প্রশস্ত ফ্লোরে ইফতারের আয়োজন চলছে। আগত মেহমান ও মু’তাকিফ(ই’তিকাফকারী) ৪জন করে বসে পড়ছে ইফতারের দস্তরখানে। সারাদিন সিয়াম সাধনা শেষে সকলে হাত তুলছে রবের দরবারে। দোয়া ও কান্নাকাটির মৃদু গুঞ্জন। এ যেন এক স্নিগ্ধময় জান্নাতি পরিবেশ।
ইফতার শেষে সিঁড়ি বেয়ে উঠে গেলাম মসজিদে। দ্বিতীয় তলায় মুল মসজিদ। সুপ্রশস্ত মসজিদে ছড়িয়ে আছে নয়ন জুড়ানো শুভ্রতা। মাথার উপর ঝুলছে সারি সারি সিলিং এয়ারকন্ডিশন। এককোণে মেহমানদের বিছানাপত্র। উত্তরপূ্র্ব কোণে একটি বিশেষ কামরায় অবস্থান করেন শায়েখ মাহমুদ আসআদ মাদানি। পাশেই পর্দা ঘেরা একটি কামরায় মুরিদদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন শায়েখ।
ইফতার শেষে মাগরিবের নামাজ শুরু হল। নামাজের পর সকলে ব্যক্তিগত আমলে মশগুল হয়ে গেলেন। কিছু মুরিদান খানকার পরিচালক ও মাদরাসার মুহতামিম মুফতি মোহাম্মদ আলী সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাত করলেন। মুফতি সাহেব সবার খোঁজ-খবর নিলেন। সুবিধা-অসুবিধার সঠিক পরামর্শ দিলেন।
কিছুক্ষণপর রাতের খবারের আয়োজন করা হল। মু’তাকিফরা একে একে এসে শাহী দস্তরখানে বসে পড়লেন। খাবারেরপর হালকা বিশ্রাম। কেউ কেউ ব্যক্তিগত আমলে মনোযোগী হলেন। এরই মধ্যে ঈশার আযান হল। নামাজের পর তারাবি। হাফেজ সাহেবের মনোমুগ্ধকর তেলাওয়াতে মসজিদময় এক মোহনীয় পরিবেশ বিরাজ করছে।
নামাজেরপর শুরু হয়ে যায় জিকিরের আমল। দোয়ার মাধ্যমে শেষ হয়। রাতের বিশ্রাম শেষে ভোরে সেহরির আমল। এছাড়াও দিনে বিভিন্ন সময় বয়ান, তালিম ও যিকিরের পরিবেশে কাটছে আফতাবনগরের খানকায়ে মাদানির মেহমানদের মূল্যবান সময়গুলো।
এমএইচ/