রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ।। ১৯ মাঘ ১৪৩১ ।। ৩ শাবান ১৪৪৬


প্রতিষ্ঠাতার উসুলের ওপর থাকলেই তাবলিগ হবে ফেতনামুক্ত: মুফতি মুবারকুল্লাহ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার মুহতামিম ও শাইখুল হাদিস এবং দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম মুফতি মুবারকুল্লাহ। দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের সঙ্গেও রয়েছে তাঁর সম্পৃক্ততা। মোবারক এই কাফেলার কর্মপদ্ধতি, প্রভাব এবং প্রাসঙ্গিক নানা বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন বিশ্ব ইজতমা উপলক্ষে আওয়ার ইসলামের ইজতেমা প্রতিদিনের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এইচ এম জাবেদ হোসাইন


ইজতেমা প্রতিদিন: তাবলিগে কখন সময় লাগিয়েছেন? এই মোবারক কাফেলা সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?

মুফতি মুবারকুল্লাহ: হ্যাঁ, ছোটকাল থেকেই তাবলিগের এই মোবারক কাফেলার সাথে আমি জড়িত। আজ থেকে ৫২/৫৩ বছর আগে যখন মালিহাতা তাজুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসাতে পড়াশোনা করি তখন থেকেই তাবলিগের সাথে জড়িত। মাঝে-মধ্যে ২-৩ দিন অথবা পাঁচ দিন সাত দিন সময় লাগাতাম। এক সময় পুরো রমজান মাস আমি তাবলিগে সময় দিয়েছি। তখন আমাদের রুখ পড়েছিল পটুয়াখালীতে।

তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসায় মাসিক ইজতেমা হতো। আমি নিয়মিত ইজতেমায় আসা-যাওয়ার চেষ্টা করতাম এবং ওই সময় থেকেই এখন পর্যন্ত প্রতি বছর ইজতেমায় যাওয়ার চেষ্টা করি। বিশেষ কারণ ছাড়া সাধারণত মিস হয় না। এটা একটা বরকতময় কাফেলা, উপকারি কাফেলা, কল্যাণকর কাফেলা, যার দ্বারা ঈমান আমল হেফাজত হয়।

ইজতেমা প্রতিদিন: আমাদের সমাজে তাবলিগ জামাতের প্রভাব কতটা বিস্তৃত বলে মনে করেন?

মুফতি মুবারকুল্লাহ: তাবলিগ জামাতের প্রভাব আমাদের সমাজে খুবই বিস্তৃত। এ কাজের দ্বারা স্কুল কলেজ ভার্সিটি সব লেভেলের স্টুডেন্ট এবং সাধারণ জনগণ উপকৃত হচ্ছে। উলামায়ে কেরাম দ্বারা ওয়াজ, দরস ও তালিম হচ্ছে। কিন্তু তাবলিগ জামাত দ্বারা একদম তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত মানুষ ব্যাপকভাবে উপকৃত হচ্ছে।

ইজতেমা প্রতিদিন: তাবলিগ জামাতে আলেমদের পৃষ্ঠপোষকতা কেন জরুরি?

মুফতি মুবারকুল্লাহ: তাবলিগ জামাতে আলেম-উলামাদের পৃষ্ঠপোষকতা নিতান্তই জরুরি। কারণ এটা হলো দীনি কাজ। আলেম-উলামাই এই কাজ ভালো বোঝেন। ভালো জানেন। সেই হিসেবে আলেম-উলামাদের মাতাহাতে থেকে এই কাজ অনেক সুন্দর হয়, অনেক ভালো হয়। বিভিন্ন ফাসাদ থেকে হেকমতে বাঁচা যায়।

ইজতেমা প্রতিদিন: সময়ের প্রেক্ষাপটে তাবলিগের দাওয়াতি কাজে কোনো পরিবর্তন আনা প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন?

মুফতি মুবারকুল্লাহ: কোনো পরিবর্তন নয়। যেভাবে আছে সেভাবেই রেখেই কাজ করা। এটা একটি প্রাথমিক দীনি কাজ। এটার মধ্যে পরিবর্তন করতে গেলে বিভিন্ন ফেতনা ফাসাদ সৃষ্টি হবে। প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস রহ. যে ছয় উসুলের ভিত্তিতে তাবলিগের কাজ করেছেন, ওই উসুল মোতাবেক কাজ করলেই আমরা তাবলিগের মূলে যেতে পারবো এবং বিভিন্ন ফেতনা-ফাসাদ থেকে হেফাজত থাকবে।

ইজতেমা প্রতিদিন: দাওয়াতের সঙ্গে ইলমের একটি যোগসূত্রতা রয়েছে। বর্তমানে তাতে ভাটা পড়েছে বলে মনে করেন কি?

মুফতি মুবারকুল্লাহ: দাওয়াতের সাথে ইলমের যোগসূত্রতা রয়েছে। এজন্য আলেমদের সাথে সম্পর্ক রেখে পরামর্শ করে চলতে পারলে ওই যে সমস্যাটা তৈরি হয়েছে, সেই সমস্যা আর হবে না। তাদের নেগরানিতে আমাদের চলতে হবে। বর্তমানে ইলমে ভাটা পড়েছে। উলামায়ে কেরাম ঐক্যবদ্ধ হয়ে মেহনত করতে পারলে ওই ভাটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।

ইজতেমা প্রতিদিন: তাবলিগের চলমান বিরোধ নিরসনে কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

মুফতি মুবারকুল্লাহ: আমার মনে হয় আগে যেভাবে চলছিল, ওইভাবে শুরায়ি নেজামে চললে তাবলিগের চলমান বিরোধ নিরসন হবে। এক আমিরের নেতৃত্বে না, সবার পরামর্শক্রমে চললে সুন্দর চলবে। আর কোনো সমস্যা হবে না।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ