|| হাসান আল মাহমুদ ||
দেশের বাজারে ফের বেড়ে গেলো দ্রব্যমূল্য। লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলছে নিত্যপণ্যের দাম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পেশাজীবী, নিম্ন-আয়ের জনগোষ্ঠীর জীবন ওষ্ঠাগত। লাগামহীন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে দেশের সিংহভাগ মানুষ তাদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। দেশের সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে বর্তমানের দ্রব্যমূল্য।
এদিকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ইসলামিক রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। তারা আওয়ার ইসলামকে আজ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বর্তমান সরকারের জন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ অন্যতম চ্যালেঞ্জ। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে বিপদ হতে পারে বলে সতর্ক করে পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, যে কোন মূল্যে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসুন। দেশের ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সদ্য স্বাধীনতাকে অর্থবহ ও টেকসই করার জন্য জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা এখন সময়ে সর্বোচ্চ ও অগ্রাধিকারমূলক দাবী। এক্ষেত্রে যারা সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের উদ্যোগ সমর্থ করি, কিন্তু দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা প্রত্যাশা করি না।
তিনি বলেন, এই সরকার সময় চেয়েছে, সময় দিতে রাজি, তবে সাধারণ মানুষ যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে বিপদ হবে। দাম যে হারে বাড়ছে, তা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে কোনো কথা বলে রক্ষা করা যাবে না। এজন্য যে কোনো মূল্যেই হোক দাম নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে।
তিনি জানান, দুটো পয়েন্ট জরুরি ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। এক- দাম নিয়ন্ত্রণ। দুই- আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ। এ দুটো পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে, পাশাপাশি মৌলিক সংস্কারগুলো করতে পারলে আমি আশা করি আমাদের দেশ দাঁড়িয়ে যাবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম বলেছেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়াটা ফ্যাসিবাদ আমল থেকেই আছে। তবে, ওই সময় সরকার ও আমলারা ভালো ছিল, সাধারণ মানুষ খারাপে ছিল। আর এখন, সরকারি-আমলা-সাধারণ মানুষ সবাই একটু অসুবিধায় পড়েছে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারকে বলব আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সাথে সমন্বয় করে দেশে বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখা। সে সঙ্গে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেয়া। বাজারে মনিটিরং সেল বসানো।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামবাদী বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে দেশের মানুষের কোনো কল্যাণ আসবে না। দ্রব্যমূল্যের এখন যে ঊর্ধগতি, তা থামানো না গেলে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা হারাবে।
এজন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে আমার পরামর্শ থাকবে, প্রথমত আমাদের উপদেষ্টা মহোদয়গণকে এক্টিভ হতে হবে।
দ্বিতীয়ত, যারা ব্যবসায়ী আছে, তাদের সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। সিন্ডিকেট কোথায় কোথায় আছে তা সনাক্ত করে ভাঙতে হবে।
হাআমা/