শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

বায়তুল মোকাররমের ইসলামি বইমেলা ঢেলে সাজাতে ধর্ম উপদেষ্টার কাছে প্রকাশকদের ১৭ প্রস্তাব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| কাউসার লাবীব ||

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সৃজনশীল ইসলামি পুস্তক প্রকাশক সমিতির নেতারা।

সোমবার (০২ আগস্ট) দুপুর ৩ টার দিকে তারা সচিবালয়ে ধর্ম উপদেষ্টার কার্যলয়ে সাক্ষাতের জন্য যান।

এ সময় তারা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেনের কাছে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে রবিউল আউয়াল ও রমজানকে কেন্দ্রে করে অনুষ্ঠিত ইসলামি বইমেলাকে ঢেলে সাজানোর লিখিত প্রস্তাবনা পেশ করেন।

বাংলাদেশ সৃজনশীল ইসলামি পুস্তক প্রকাশক সমিতির পক্ষ থেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন গারডিয়ান পাবলিকেশন্স’র স্বত্বাধিকারী নূর মুহাম্মাদ, সিয়ান পাবলিকেশন’র স্বত্বাধিকারী আহমেদ রফিক, রাহনুমা প্রকাশনী’র স্বত্বাধিকারী মাহমুদুল ইসলাম (তুষার), রুহামা পাবলিকেশন’র স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম ও  সমকালীন প্রকাশন’র স্বত্বাধিকারী এস এম আকসারুল হক (আনাস)।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, বইমেলা প্রতিটি শিক্ষিত জাতির একটি সংস্কৃতিক উপলক্ষ। বাংলাদেশে বাংলা একাডেমির সাধারণ বইমেলা যেমন তেমনই ইসলামি ফাউন্ডেশনের ইসলামি বইমেলা । কিন্তু অত্যন্ত দু:খজনক বিষয় হলো, বছরের পর বছর ধরে ইসলামি বইমেলা মারাত্মকভাবে অবহেলিত হয়ে আছে। নেই কোনো নীতিমালা, নেই কর্তৃপক্ষের স্বদিচ্ছা এবং নেই সত্যিকার মানসম্মত সৃজনশীল প্রকাশকদের অংশগ্রহণের সুযোগ।

প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়, বিগত কয়েক বছর ধরে আমরা সৃজনশীল প্রকাশকদের পক্ষ থেকে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের সাথে অনেকবার বসেছি, অনুরোধ করেছি, সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কর্তৃপক্ষের কোনো সহযোগিতা আমরা পাইনি; উলটো এসব দাবিদাওয়া নিয়ে সোচ্চার হওয়ার কারণে আমরা নানারকম অবিচার ও নিগ্রহের শিকার হয়েছি।

প্রস্তাবনায় প্রকাশকরা বলেন, দেশের সামগ্রিক অবস্থার পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে আমরা আশা করছি যে, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশি মুসলমানদের সাংস্কৃতিক মিলনমেলা ‘বাইতুল মুকাররম ইসলামি বইমেলা’কে একটি জাতীয় বইমেলার মতো সুন্দর সুশৃঙ্খল করে আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা সংস্কার ও প্রনয়নের আন্তরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এছাড়া এই প্রস্তাবনায় যুক্ত হয় ১৫টি প্রস্তাবনা —

১. বইমেলা বস্তুত প্রকাশকদের মেলা, বই বিক্রেতাদের নয়। তাই প্রকৃত প্রকাশকরা যেন স্টল বরাদ্দ পান সেজন্য তাদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করা, যেন নকলবাজ প্রকাশক, হকার, লাইব্রেরি ও পুস্তক বিক্রেতাদের স্টল বরাদ্ধ দিয়ে মেলার দাবী ও সৌন্দর্য নষ্ট করা না হয় ।

২. মেলার পরিসর ও পরিধি বৃদ্ধি করা। কারণ, খুবই অল্প একটু জায়গার মধ্যে মেলা আয়োজন করার কারণে স্টলের সাইজ খুবই ছোট থাকে, পাঠকদের চলাচলের জায়গা থাকে না; সবমিলিয়ে একটা দমবন্ধ গুমোট পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

৩. প্রকাশনার মান অনুযায়ী মেলার স্টলের সাইজ বৃদ্ধি করা, প্যাভিলিয়ন ও বড় স্টলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৪. মেলা বাস্তবায়ন কমিটিতে এই বছর থেকেই দুই তৃতীয়াংশ প্রকাশকদের প্রতিনিধি রাখা; যেন তারা প্রকাশকদের স্বার্থ রক্ষায় কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারে।

৫. লটারি প্রক্রিয়া সংশোধন করা। জাতীয় একুশে বইমেলায় আমরা অংশগ্রহণ করি। সেখানে একবার যে স্টল পায় তাকে পরবর্তী বছর আর লটারিতে অংশগ্রহণ করতে হয় না। সে নিশ্চিত জানে যে সে স্টল পাবে এবং সেমতে সে সারাবছর মেলাকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এই মেলায় প্রতি বছর এতিমের মতো লটারির দিকে চেয়ে থাকতে হয় স্টল পাবে কি না — তাতে সে যত বড় প্রকাশনাই হোক না কেন। এই নীতি জাতীয় বইমেলার নীতির আলোকে সংশোধন করা।

৬. বইমেলার ফর্ম থেকে ভ্যাটের শর্ত প্রত্যাহার করা। কারণ বইয়ের ওপর কোনো ভ্যাটই প্রযোজ্য নয় ।

৭. ফরমে উল্লেখিত বেশ কিছু বিষয় সংশোধন করে নতুন করে ফরম ছাড়া। বর্তমান সার্কুলেশন বন্ধ করে নতুন করে সার্কুলেশন দেওয়া।

৮. এক প্রকাশনীর বই অন্য প্রকাশনীতে বিক্রি বন্ধ করা। এই অন্যায় সুযোগ থাকার কারণেই মূলত হকার ও লাব্রেরিয়ানরা স্টল নিতে চায়। এই নীতিমালাও জাতীয় বইমেলার আলোকে সংশোধন করা।

৯. রমজানের মেলা রমজানের আগেই শেষ করে দেওয়া। কারণ রমজানে মানুষ ব্যস্ততা, তারাবী, ইফতার ইত্যাদি কারণে মেলায় আসে না; প্রকাশকদের জন্য এটা একটা ক্ষতি শিকারের মেলায় পরিণত হয়। (যেমন শবে বরাতের ৫দিন আগে শুরু হতে পারে, ১লা রমজানের আগের দিন শেষ হবে।)

১০. চুরি এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য মেলার স্টলগুলোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা ।

১১. স্টলের ভাড়া ও ফরমের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা ।

১২. বিভাগীয় পর্যায়ে ইসলামি বইমেলার আয়োজন করা।

১৩. ইসলামি ফাউন্ডেশন থেকে দুর্ণীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারণ করা ।

১৪. পরের বছর থেকে সিরাত বইমেলাকে আন্তর্জাতিক বইমেলায় রূপ দেওয়া ।

১৫. ইসলামি বইমেলা প্রচার-প্রসারে ব্যাপক প্রস্তুতি ও বাজেট প্রণয়ন করা এবং সে অনুপাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দেশের প্রধান সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা করা।

১৬.বইমেলার চত্বরে বিভিন্ন ধরনের হকার প্রতিষ্ঠান অসাধু উপায়ে শরবত, জামা-কাপড়, মেসওয়াক ইত্যাদি বিক্রি করে মেলার পরিবেশ নষ্ট করে। এসব না হতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা রাখা ।

১৭. ইসলামি বইমেলায় ইসলামি বই প্রকাশক ছাড়া অন্য কোনো জেনারেল বই প্রকাশকদের অংশগ্রহণ যেন না থাকে — তার জন্য আইন প্রণয়ন করা।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ