|| হাসান আল মাহমুদ ||
ছাত্রদের জন্য আসা টাকা ভবন নির্মাণে ব্যয় না হয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের জন্যই ব্যয় করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন রাজধানীর ঢালকানগরের পীর বিশিষ্ট আলেম বাইতুল উলুম ঢালকানগর মাদরাসার মুহতামিম মুফতি জাফর আহমাদ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অধিকাংশ মাদরাসার মহতামিমগণ যে টাকা আসে ছাত্রদের জন্য, তার ব্যাপক অংশ খরচ করেন মাদরাসার ভবন নির্মাণের জন্য। মাদরাসা সুন্দর করা, অফিস সুন্দর করা, চেয়ার-টেবিল, সোফা ইত্যাদি বাহ্যিক রূপ সৌন্দর্য’র জন্য। এসব করা আমি ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করি না।’
মুহতামিমদের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমি মুহতামিমদের প্রতি অনুরোধ রাখব- যে ফান্ডের জন্য টাকা আসে তা যেন ওই ফান্ডের জন্যই খরচ করেন। অধিকাংশ টাকাইতো আসে জাকাত ফান্ডের। সেগুলো ‘তামলিক’ করে আমরা খরচ করে থাকি। সেই ‘তামলিক’রে বিল্ডিং না বানিয়ে, ‘তামলিক’ করে যদি শিক্ষকদেরকে দেই, তাহলে ছাত্রদের কাজেই লাগবে।’
২ জুন ২০২৪ রোববার সন্ধায় আওয়ার ইসলামের সঙ্গে রাজধানীর ঢালকানগর মাদরাসায় এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে মুফতি জাফর আহমাদ এই কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন আওয়ার ইসলামের বার্তা সম্পাদক কাউসার লাবীব।
মুফতি জাফর আহমাদ মনে করেন, ‘আমাদের মাদরাসাগুলোর মুহতামিম হজরতদের মনটা একটু বড় হওয়া দরকার। তাঁদের মনে রাখা দরকার, আমার যেমন ফ্যামিলি আছে, তেমনি আমার উস্তাদদেরও আছে। আমার যেমন চাহিদা আছে, তাদেরও চাহিদা আছে। মুহতামিমরা যদি মাদরাসার জন্য আসা টাকা ছাত্র-উস্তাদদের জন্যই খরচ করতো, উস্তাদদের সময়যোপযোগী বেতন-ভাতায় খরচ করতো, তাহলে কোনো মাদরাসার শিক্ষক শিক্ষকতা ছেড়ে চলে যাবে বলে আমার মনে হয় না।’
‘ছাত্রদেরকে মুহসিন মনে করতে হবে। ছাত্র না থাকলে টাকা আসবে না। তাদের জন্য আসা টাকাটা যদি ছাত্রদের জন্য খরচ করতো, ভালোভাবে তারা খেতে পারতো। ভালো খাবার তারা পেতো। আর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে হলে শিক্ষক লাগে। টাকা ছাত্রদের জন্য। তাদের পড়ালেখার খরচ, তাদের থেকে এ টাকা দিয়েই মাদরাসায় উপযুক্ত বেতন নিলে উপযুক্ত বেতনও শিক্ষকদের দেয়া যায়।’- যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘জাকাত ফান্ডে আসা টাকা ‘তামলিক’ করে ভবন নির্মাণে ব্যয় না করে উস্তাদদের জন্য খরচ করলে তাদের বেতন মোটামুটি এমন পর্যায়ের হত যা দিয়ে তারা ভালো চলতে পারতো।
এসময় তিনি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, ‘প্রশ্ন হতে পারে যে, বিল্ডিংয়ে তো ছাত্ররাই থাকবে। হ্যাঁ, ছাত্ররাই থাকবে, তাতে কোনো সন্দেহ নাই। কিন্তু ‘তামলিক’ বানানো টাকায় মাদরাসার ভবন হলো, ছাদের উপর ছাদ তৈরী হল, অথচ উস্তাদদের দুই-তিন মাস বেতন বাকি, এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করি না। এবং আমি নিজেও করি না, আলহামদুলিল্লাহ’।
হাআমা/