|| হাসান আল মাহমুদ ||
জাতীয় দ্বীনি শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব, আওলাদে রাসুল সাইয়্যেদ মাহমুদ মাদানির খলিফা, রামপুরা আফতাবনগর আল জামিয়াতুল ইলামিয়া ইদারাতুল উলুমের মুহতামিম দেশের বিশিষ্ট আলেম মুফতি মোহাম্মদ আলী বলেছেন, `আকাবির চর্চা মানে ইসলাম চর্চা। এজন্য আকাবিরদের জীবনী জানা ও হৃদয়ে লালন করা আমাদের সবার জন্যই প্রয়োজন'।
তিনি বলেন, ‘আকাবির চর্চা কারো নিজস্ব বাপ-দাদা চর্চা না। আকাবির চর্চা মানে সাহাবায়ে কেরাম চর্চা। আকাবির চর্চা মানে তাবেঈ, তাবে-তাবেঈ, আইম্মায়ে মুজতাহিদ, আইম্মায়ে মুহাদ্দিসসহ দ্বীনের জন্য যারা নিজেদের ঢেলে দিয়েছেন, তাদের চর্চা। এটা কারো বাপ-দাদা চর্চা না। আকাবির চর্চা মানে ইসলাম চর্চা। আকাবির চর্চা নিয়ে যারা অশোভন কথা বলে তারা দ্বীনের ধারক-বাহক হতে পারে না।’
পড়ুন : প্রজন্মকে সঠিক পথে ধরে রাখতে আকাবির-মনীষী চর্চা অতীব প্রয়োজনীয় : মাওলানা আফেন্দী
পড়ুন : ‘আকাবির-মনীষী চর্চা কেন প্রয়োজন : দুই আলেমের মতামত
মঙ্গলবার ২ জুন সন্ধায় রাজধানীর আফতাবনগর মাদরাসায় আওয়ার ইসলামের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন মুফতি মোহাম্মদ আলী। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন আওয়ার ইসলামের বার্তা সম্পাদক কাউসার লাবীব।
মুফতি মোহাম্মদ আলী’র মতে, ‘আকাবির বলতে যারা বড়, তাদের বুঝায়। এই বড়’ র সুনির্দিষ্ট মেসদাক আছে। সাহাবা, তাবেঈ, তাবে-তাবেঈ থেকে শুরু দারুল উলম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা ও তৎপরবর্তী আমাদের মুরব্বি আলেমগণ, যাদের মাধ্যমে আমরা দ্বীন বুঝেছি, তারা সবাই আমাদের আকাবির।’
‘আমাদের কাছে কুরআন-সুন্নাহ টপকে আসে নাই। কুরআন-সুন্নাহ এসেছে মাধ্যম হয়ে। রাসূল সা. এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে কুরআন। আর তাঁর থেকে শিখেছেন সাহবায়ে কেরাম। সাহাবারা নবীজি থেকে সবকিছু শিখেছেন। রাসূল সা. এর প্রতিটি কথা-কাজ শুনে-দেখে আমল করেছেন। আর তাঁদের থেকে পরবর্তী তাবেঈরা শিখেছেন। আর এভাবে আমাদের পর্যন্ত এসেছে ইসলাম।’- যোগ করেন তিনি।
আকাবির চর্চার প্রয়োজনীয়তা কী কারণে ও তাঁদের থেকে আমাদের শেখার কী আছে ? প্রশ্নে মুফতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাদের আকাবিররা দ্বীনের সব শাখায় মেহনত করে গেছেন। ইলমি-আমলি হার লাইনে তাদের ত্যাগ রয়েছে অতুলনীয়। ইসলামবিরোধী বাতিল মোকাবেলায় তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। দ্বীনের প্রচার-প্রসারসহ নানামুখী আয়োজনে সমৃদ্ধ তাদের জীবন। এজন্য, তাদের জীবনী না পড়লে, চর্চা না করলে আমর চলব কিভাবে।’
‘তাদের জীবনী থেকে আমরা ইলম, আমল শিখব এবং ইসলামবিরোধী শক্তির মোকাবেলায় তাদের ভূমিকা অনুসরণ করব। তাদের জীবনী থেকে আমরা চেতনা নিয়ে ইসলামের জন্য নিজেদের বিলিয়ে দিব’।– বলেন তিনি।
এসময় মুফতি মোহাম্মদ আলী উপমহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ আকাবির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তাঁদের জীবনী চর্চার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘উপমহাদেশে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ আকাবির হচ্ছেন ওলামায়ে দেওবন্দ। তাঁদের জীবন, ইতিহাস জানা, চর্চা করা আমাদের জন্য বর্তমানে অনেক প্রয়োজন। করণ, উপমহাদেশে দ্বীনের অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে গেছেন তাঁরা। তাঁদের মাধ্যম হয়েই আমরা দ্বীন পেয়েছি। এজন্য, তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক থেকে শুরু করে জাতীয় জীবনে সেমিনার, গবেষণা, লেখালেখি, পাঠ্যপুস্তকে তাঁদের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করাসহ নানা আয়োজনে তাদের জীবনী চর্চাকে আরও বেগবান করা যেতে পারে।’
হাআমা/