সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকে লন্ডন মহানগরের সীরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত ‘শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ ছিল দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ’ ২৪ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে ইসলামী আলোচক আব্দুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ প্রকাশিত হচ্ছে আল্লামা মাহমুদুল হাসানের ‘হাসানুল ফতোয়া’ তাড়াইলে মাদক-জুয়া ও অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিবাদে আলেমদের সমাবেশ নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে, দ্রুতই রোডম্যাপ : ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শনিবার বাংলাদেশ সফরে এলেন দেওবন্দের উস্তাদ মুফতি ফখরুল ইসলাম এলাহাবাদী আগামীকাল শরীফগঞ্জে আসছেন সাইয়েদ আরশাদ মাদানী

পুরো বিশ্বে একই দিনে রোযা ও ঈদ পালন কী সম্ভব?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মুফতী মনসূরুল হক ||

সমগ্র বিশ্বে একই দিনে রোযা ও ঈদ পালন করা শরীয়তের দলীল-প্রমাণ, ভৌগোলিক ও জ্যোতির্শাস্ত্রীয় বাস্তবতা কোন দিক থেকেই সম্ভবই নয়। কার্যত যা সম্ভব নয়, শরীয়ত নাযিলের সময় সে বিষয়ের ধারণা থাকলেও, শরীয়ত এর হুকুম দেয় না। আর একে তো অসম্ভব, আবার সে সময় এর ধারণাও ছিল না, এমন বিষয়ের হুকুম শরীয়ত কীভাবে দেবে?

রোযা ও ঈদের ঐক্যের ডাক বেশি আগের নয়, আবার বেশি নতুনও নয়, ষাট/সত্তরের বছরের কিছু বেশি এর বয়স। প্রথমে যারা এই আওয়াজ তুলেছেন তারা শুধু মুসলিম বিশ্বব্যাপী ঐক্যের প্রস্তাব পেশ করেছেন। পরবর্তীরা বিশ্বব্যাপী এক করার জন্য পীড়াপীড়ি করছেন এবং এখনও করে চলেছেন।

আমরা নিম্নে বিষয়টি দালীলিক বিশ্লেষণ পেশ করছি-
স্ব স্ব এলাকায় চাঁদ দেখে রোযা ও ঈদ পালন করার দলীল:

এক নং দলীল : নববী যুগের আমল
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাঁদ দেখার জন্য অথবা চাঁদের সংবাদ বা সাক্ষ্য সংগ্রহ করার জন্য এক/দুই দিন দূরত্ব নয়; পাঁচ-দশ মাইল দূরত্বের কোনো এলাকায়ও কোনো লোক পাঠিয়েছেন? হাদীস, সীরাত ও ইতিহাসের গ্রন্থাবলীতে এর একটিও কি দৃষ্টান্তও কেউ দেখাতে পারবে না।
এখানে একটি বিষয় বুঝতে হবে যে, এক হল সাক্ষ্য এসে গেলে সাক্ষ্য কবুল করা, আরেক হল সাক্ষ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা করা, দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। একই হিলাল এবং প্রথম হিলালের ভিত্তিতে রোযা ও ঈদ করা যদি কুরআন ও হাদীসের নির্দেশ হয়ে থাকে তাহলে অন্যান্য অঞ্চল থেকে নতুন চাঁদের সংবাদ এবং সাক্ষ্য সংগ্রহ করাও তো ফরয হবে। কিন্তু নবী-যুগে এর উপর আমল হল না কেন? এসে যাওয়া সাক্ষ্য গ্রহণেই কেন ক্ষ্যান্ত থাকা হল?

দুই নং দলীল : সাহাবায়ে কেরামের আমল
হাদীসের বিখ্যাত কিতাব তিরমিযী শরীফে ইমাম তিরমিযী রাহ. স্বতন্ত্র একটি অধ্যায় এনেছেন, যার শিরোনাম দিয়েছেন- باب ما جاء لكل أهل بلد رؤيتهم
অর্থাৎ প্রত্যেক অঞ্চলের লোকেরা তাদের চাঁদ দেখা অনুযায়ী রোযা-ঈদ পালন করবে। এই অধ্যায়ে তিনি সহীহ সনদে একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন। হাদীসটি এই-
عن كريب أن أم الفضل بنت الحارث، بعثته إلى معاوية بالشام قال: فقدمت الشام، فقضيت حاجتها، واستهل علي هلال رمضان وأنا بالشام، فرأينا الهلال ليلة الجمعة، ثم قدمت المدينة في آخر الشهر، فسألني ابن عباس، ثم ذكر الهلال، فقال: متى رأيتم الهلال، فقلت رأيناه ليلة الجمعة، فقال: أأنت رأيته ليلة الجمعة؟ فقلت: رآه الناس، وصاموا، وصام معاوية، قال: فقلت: ألا تكتفي برؤية معاوية وصيامه، قال: لا، هكذا أمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم.
অর্থাৎ বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত কুরাইব রাহ. কে উম্মুল ফযল বিনতুল হারিছ রাযি. কোন একটি কাজে দামেস্ক, যা তখন ইসলামী খেলাফতের রাজধানী ছিল, সেখানে পাঠান। তখন আমীরুল মুমিনীন ছিলেন হযরত মুআবিয়া রাযি.। তো দামেস্কে শুক্রবার চাঁদ দৃষ্টিগোচর হওয়ায় আমীরুল মুমিনীনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক একদিন আগে রমযান শুরু হয়। তো কিছুদিন পর হযরত কুরাইব কাজ শেষে মদীনায় ফিরে আসলে তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি.কে দামেস্কে শুক্রবার চাঁদ দৃষ্টিগোচর হওয়ার সংবাদ প্রদান করেন। ইবনে আব্বাস রাযি. সেদিকে মোটেই দৃষ্টিপাত করেননি। বরং তিনি বলেছেন-
لكن رأيناه ليلة السبت، فلا نزال نصوم حتى نكمل ثلاثين يوما، أو نراه،
আমরা তো শনিবার সন্ধ্যায় হিলাল দেখেছি। এইজন্য আমরা ত্রিশ রোযা পূর্ণ করব। তবে নিজেরা যদি হিলাল দেখি সেটা ভিন্ন কথা। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল-
ألا تكتفي برؤية معاوية وصيامه، قال: لا، هكذا أمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم.
মুআবিয়া রাযিআল্লাহু আনহুর হিলাল দেখা এবং রোযা রাখা কি আপনি যথেষ্ট মনে করেন না?
তিনি বললেন, না, আমাদেরকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবেই আদেশ করেছেন। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ৬৯৩)

ইমাম তিরমিযী রাহ. হাদীসটি বর্ণনা করার পর বলছেন-
والعمل على هذا الحديث عند أهل العلم أن لكل أهل بلد رؤيتهم.
অর্থাৎ প্রত্যেক অঞ্চলের লোকেরা স্ব স্ব চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোযা/ঈদ পালন করবে, এর উপরই সকল উলামায়ে কেরাম আমল করে আসছেন। এই হাদীসটি তিরমিযী শরীফ ছাড়াও মুসলিম শরীফেও এসেছে। হাদীস নং- ১০৮৭

তিন নং দলীল: নববী যুগ থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত মুসলমানদের কর্মধারা
ইসলামের বয়স প্রায় সাড়ে চৌদ্দশ বছর হতে চলেছে। ইসলাম প্রায় এক হাজার বছর পর্যন্ত বিশ্ব শাসন করেছে। এই সুদীর্ঘ ইতিহাসে কোন অঞ্চলের মুসলমানরা সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা বা ঈদ পালনের জন্য কোন চিন্তা করেছেন বা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এর কোন ইতিহাস নেই। প্রত্যেক অঞ্চলের মুসলমানরা স্ব স্ব অঞ্চলের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোযা/ঈদ পালন করেছেন। এটাকে তারা কোন সমস্যা মনে করেননি। যদি সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা বা ঈদ পালন জরুরী বা কমপক্ষে উত্তম কোন আমল হতো তাহলে ৬৯/৭০ বছর আগ পর্যন্তও কেন এ ব্যাপারে কোন আওয়াজ উঠলো না? এর দ্বারাই বিষয়টির বাস্তবতা বুঝে আসে।

এছাড়াও বিশ্বব্যাপী একই দিনে বা একই তারিখে রোযা ও ঈদ করাকে ফরয/জরুরি সাব্যস্ত করার শরয়ী দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনা করার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সামনে রাখতে হবে :

১. যে বিষয় গোড়া থেকেই সম্ভব নয় বা যে বিষয় পালনে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হয়, শরীয়ত কখনো এমন বিষয়ের আদেশ করে না। এজন্য যে কোনো সমঝদার ব্যক্তির কাছে প্রথম ধাপেই এই ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, বিশ্বব্যাপী একই দিনে রোযা ও ঈদ করা শরীয়তের নির্দেশ হতেই পারে না। অসম্ভব অথবা প্রায় অসম্ভব কোনো কাজের আদেশ শরীয়ত করতে পারে না।

২. শরীয়ত নাযিলের সময় যে বিষয়ের কোনোও ধারণা-কল্পনাও ছিল না, এরকম বিষয় শরীয়তের নির্দেশ হওয়ার কথা ভাবাই যায় না। সুতরাং এখানে তো একথা পরিষ্কার যে, এই কাজ শরীয়তের নির্দেশ হতে পারে না।

৩. নব উদ্ভাবিত কোনো কাজকে ফরয-ওয়াজিব তো দূরের কথা; সুন্নতের মর্তবাও যদি দেওয়া হয় তাহলেও এটা বিদআত হয়ে যায়। আর বিদআত তো গোমরাহী আর ভ্রষ্টতা।

৪. যে কাজের বিশেষ কোনো সওয়াব বা ফযীলত কুরআন হাদীসে বর্ণিত হয়নি আবার এই কাজ করতে গেলে অনেক কষ্ট ও অসুবিধা দেখা দেয় এরকম কাজ তো নিঃসন্দেহে ‘তাকাল্লুফ’ তথা লৌকিকতা ও নিরর্থক আয়োজন ছাড়া কিছু নয়। আর এ উম্মতকে এসব তাকাল্লুফ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। হাদীস শরীফে এসেছেÑ نهينا عن التكلف আমাদেরকে তাকাল্লুফ থেকে নিষেধ করা হয়েছে।

৫. বিশ্বব্যাপী এই ঐক্যের শরয়ী কোনো মানদণ্ড নেই। এটা যদি শরীয়তে নির্দেশিত হতই তাহলে শরীয়তে এর কোনো মানদণ্ডও থাকত। এই প্রসঙ্গে যে তিনটি মানদণ্ড বলা হয়, এর একটাও আমলযোগ্য নয়!

সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা-ঈদ পালনের দাবীদারদের উত্থাপিত মানদণ্ড:

ক. জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব
যদি জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাবের ভিত্তিতে চান্দ্রমাসের সূচনা ধরা হয় তাহলে এতে শরীয়তের বিধান পরিবর্তন হয়ে যায়। সুতরাং এটা সম্পূর্ণ না-জায়েয। শরীয়ত-নির্ধারিত ভিত্তি ‘হিলাল দেখা’ পরিবর্তন করার ইখতিয়ার কারো নেই। কেউ যদি পরিবর্তন করে দেয়ও তাহলেও আহলে হক মুসলমানরা একে গ্রহণ করবে না। তাহলে ঐক্য কীভাবে হবে।

খ. প্রথম চাঁদ দেখা
এটা এ জন্য মানদণ্ড হতে পারে না যে, প্রথমবার কোথায় হিলাল দৃষ্টিগোচর হয়, তা অনুসন্ধান করার হুকুম শরীয়ত দেয়নি। আর বাস্তবে দূর-দূরান্তের অঞ্চলের জন্য প্রথম হিলাল কোথায় কখন দেখা গিয়েছে তা অনুসন্ধান করা অনেক জটিল বিষয়। তারপরও যদি হিলাল সাব্যস্ত হয়েও যায়, তাহলেও সেটাকে বিশ্বব্যাপী কার্যকর করতে গেলে অনেক জটিলতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এজন্য এই পদ্ধতিও আমলযোগ্য নয়।

গ. সৌদি আরবের হিলাল দেখাকে ভিত্তি বানানো
সৌদিআরবের চাঁদ দেখার ভিত্তিতেও বিশ্বব্যাপী আমল করা সম্ভব নয়। তাছাড়া কোনো এক জায়গার হিলালকে সমগ্র বিশ্বের জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া, শুধু এতটুকু নয় যে, তা দলীলবিহীন, বরং এটা দলীলবিরোধী। সুতরাং এই পদ্ধতিই আসলে গ্রহণ করা উচিত যে, প্রত্যেক অঞ্চলের বাসিন্দারা নিজ নিজ অঞ্চলের হিলাল দেখা অনুসারে আমল করবে।
সুতরাং যেহেতু বিশ্বব্যাপী ঐক্যের শরয়ী কোনো মানদণ্ড নেই তাহলে এটা শরীয়তে ফরয /ওয়াজিব বা সুন্নত তো দূরের কথা; অন্তত শরীয়তের কাম্যও হয় কীভাবে?

তাদের পেশকৃত দলীল-প্রমাণ এবং এর বিশ্লিষণ:
এক-
তারা বলে, কুরআন কারীমের আয়াত فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْیَصُمْهُ (সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৫) তে এবং -صوموا لرؤيته وأفطروا لرؤيته শীর্ষক হাদীসে এই হুকুম দেওয়া হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী একই দিনে রোযা শুরু করতে হবে, একই দিনে রোযা শেষ করে ঈদ করতে হবে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
আয়াতের সঠিক মর্ম

কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা বলেন-
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِیْۤ اُنْزِلَ فِیْهِ الْقُرْاٰنُ هُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰی وَ الْفُرْقَانِ، فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْیَصُمْهُ ، وَ مَنْ كَانَ مَرِیْضًا اَوْ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ اَیَّامٍ اُخَرَ، یُرِیْدُ اللهُ بِكُمُ الْیُسْرَ وَ لَا یُرِیْدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَ لِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَ لِتُكَبِّرُوا اللهَ عَلٰی مَا هَدٰىكُمْ وَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ.
“রমযান মাস- যে মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছে। যা মানুষের জন্য আদ্যোপান্ত হিদায়াত এবং এমন সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী সম্বলিত, যা সঠিক পথ দেখায় এবং সত্য-মিথ্যার মাঝে চূড়ান্ত ফায়সালা করে দেয়। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এই মাস পাবে সে যেন এই সময় অবশ্যই রোযা রাখে। আর তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অসুস্থ হয় বা সফরে থাকে তবে অন্য সময় সে সমান সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের পক্ষে যা সহজ, সেটাই করতে চান। তোমাদের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করতে চান না। যাতে তোমরা রোযার সংখ্যা পূরণ করে নাও এবং আল্লাহ তোমাদের যে পথ দেখিয়েছেন সে জন্য আল্লাহর তাকবীর পাঠ কর এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।”

আয়াতে কারিমায় فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْیَصُمْهُ অংশটির এক অর্থ তো এটাই, যা উক্ত তরজমা থেকে বুঝে আসছে। অর্থাৎ যে ব্যক্তিই এই মাস পাবে, অন্য কথায় যে ব্যক্তিই এই মাসে উপনীত হবে সে যেন অবশ্যই এই মাসের রোযা রাখে।
এর আরেক অর্থ এটাও হতে পারে যে, যে ব্যক্তি এই সময় ‘মুকীম’ অবস্থায় থাকবে সে যেন অবশ্যই এই মাসের রোযা রাখে। (যে সফরে থাকবে তার জন্য ঐ সময় রোযা ফরয নয়, তার জন্য পরবর্তীতে কাযা করে নেওয়ার অনুমতি আছে।) যে অর্থই গ্রহণ করা হোক, এখানে তো দূর থেকেও এ কথা বের করা যায় না যে, বিশ্বব্যাপী একই হিলাল এবং প্রথম হিলালের ভিত্তিতে রোযা রাখা ফরয। বিশ্বব্যাপী একই তারিখে রোযা শুরু করা এবং একই তারিখে ঈদ করা ফরয। এই প্রসঙ্গ আয়াতের কোন্ শব্দ থেকে বুঝে আসে? আয়াতে তো রমযান শুরু হলে শরীয়ত পালনে আদিষ্ট প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য রোযা রাখা ফরয- এটুকুই বলা হয়েছে। রমযান কীভাবে শুরু হবে সে বিষয়ে এ আয়াত নীরব। তাহলে এ আয়াতের ঐ অর্থ কীভাবে বানানো হচ্ছে?

রমযান কীভাবে শুরু করতে হবে সে আলোচনা তো ২ : ১৮৯ আয়াতে এসেছে।
یَسْـَٔلُوْنَكَ عَنِ الْاَهِلَّةِ قُلْ هِیَ مَوَاقِیْتُ لِلنَّاسِ وَ الْحَجِّ
অর্থাৎ মানুষ আপনাকে হিলালসমূহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে দিন সেগুলো মানুষের জন্য (অর্থাৎ তাদের ইবাদত ও লেনদেনের জন্য, বিশেষ করে) হজ্বের জন্য সময় নিরূপণের মাধ্যম।
তো রমযান কীভাবে শুরু হবে তার বিবরণ এই আয়াতে এবং হাদীস শরীফে এসেছে।

দুই-
তারা আরও বলে, صوموا لرؤيته-এর মধ্যে صوموا (তোমরা রোযা রাখ) হচ্ছে আদেশসূচক সম্বোধন এবং বহুবচনের শব্দ। এতে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদেরকে সম্বোধন করে হুকুম করেছেন যে, তারা যেন হিলাল দেখে রোযা রাখে! এই কথা শত ভাগ সঠিক, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এই জন্যই সমগ্র বিশ্বের সকল মুসলমানদের উপর রোযা ফরয। কোনো অঞ্চলের মুসলমানরাই এই হুকুমের বাইরে নয়। সবার উপরই রোযা ফরয। আর হিলাল দেখার পরই রোযা ফরয । কারও জন্য এটা জায়েয নেই যে, হিলাল দেখা ছাড়া শুধু হিলালের সম্ভাবনার ভিত্তিতে মাস শুরু করবে এবং এটা জায়েয নেই যে, হিলাল দেখা বাদ দিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাবের ভিত্তিতে মাস শুরু করবে। রোযা সব অঞ্চলের সব মুসলমানের উপর ফরয। আর হিলাল দেখার পরই রোযা ফরয, এর আগে নয়।

এ হল হাদীসের সরল অর্থ। এখানে এ কথা কোত্থেকে এল যে, বিশ্বব্যাপী সমস্ত মুসলমানকে একই হিলাল এবং প্রথম হিলালের অথবা বিশেষ কোনো অঞ্চলের হিলালের ভিত্তিতে একই তারিখে রোযা শুরু ফরয? বহুবচনের শব্দ দিয়ে সবাইকে রোযা রাখতে বলা হয়েছে। সেখান থেকে এটা কীভাবে সাব্যস্ত হল যে, সবার রোযার সূচনা একই তারিখে হওয়া জরুরি। আচ্ছা أقيموا الصلاة (তোমরা নামায আদায় কর) এ কথার অর্থ কি এই যে, সবাই একই সময়ে নামায আদায় কর? অথবা آتوا الزكاة (তোমরা যাকাত আদায় কর) এর অর্থ কি এই যে, সবাই একই তারিখে যাকাত আদায় কর? أقيموا ও آتوا শব্দদ্বয় সম্বোধনসূচক বহুবচন। উভয় শব্দের সম্বোধনই ব্যাপক। বিশ্বের সকলকে সম্বোধন করা হচ্ছে। কিন্তু এখানে কি এ অর্থ হতে পারে যে, সবাই একই সময়ে নামায আদায় কর, সবাই একই তারিখে যাকাত আদায় কর? ওখানে যদি এ অর্থ হয় যে, সবাই নিজ নিজ সময়ে নামায আদায় কর এবং সবাই নিজ নিজ নেসাবের বছর পূর্ণ হলে যাকাত আদায় কর, তাহলে صوموا لرؤيته -এর ক্ষেত্রে কেন এই অর্থ হবে না যে, সকল মানুষ নিজ নিজ অঞ্চলের হিলাল দেখে রোযা শুরু করবে।

সুতরাং এ কথা বলা যে, ‘صوموا’ বলে সব অঞ্চলের সমস্ত মুসলমানকে সম্বোধন করা হয়েছে। আর সে জন্য বিশ্বব্যাপী এক হিলাল এবং প্রথম হিলাল দেখার ভিত্তিতে সমস্ত মুসলমানের উপর রোযা শুরু করা ফরয’Ñ সম্পূর্ণ ভুল। সম্বোধন সবাইকে করা হয়েছে এ কথা তো ঠিক আছে, কিন্তু শুধু ‘হিলাল দেখা’ এতটুকু বিধানের সাথে তারা যে এক হিলাল দেখা এবং প্রথম হিলাল দেখা অথবা সৌদিআরবের হিলাল দেখার কথা বলছেন তা তো হাদীসে নেই। এসব তো তাঁদের সংযোজন। শরীয়তের কোনো দলীলের আলোকে তাঁরা হাদীসের মর্মের মধ্যে এসব কথা যুক্ত করছেন? জানা কথা যে, এসব তাঁদের নিজেদের থেকে সংযোজন। এসব না কোনো আয়াতে আছে, না কোনো হাদীসে!

তিন-
তারা এটাও দাবি করেন যে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য এলাকা থেকে আগত হিলালের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে রোযা ও ঈদ করেছেন। তাহলে বুঝা গেল, যে কোনো এলাকাতে হিলাল দেখা গেলে সব এলাকায় রোযা ও ঈদ করা উচিত।

পর্যালোচনা :
হিলাল দেখার সাক্ষ্য কবুল করার হাদীসসমূহের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে চিন্তা করা উচিত। শা‘বানের ২৯ তারিখ, রমযানের ২৯ তারিখ, অথবা যিলকদের ২৯ তারিখ এসব তারিখে কখনো কি এমন হয়েছে যে, নবীজী চাঁদ দেখা বা চাঁদের সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে কাউকে মদীনার বাইরে পাঠিয়েছেন। সুতরাং মদীনা মুনাওয়ারার আশেপাশেও কাউকে না পাঠানো এবং মদীনায় হিলাল দেখা গেলেই রোযা শুরু করা /ঈদ করা এবং মদীনায় হিলাল দেখা না গেলে রোযা শুরু না করা এবং শাওয়ালের হিলাল দেখা না গেলে ত্রিশ রোযা পূর্ণ করা, এগুলোই তো দলীল যে, নিজ নিজ এলাকার হিলাল দেখার ভিত্তিতে আমল করলেই মানুষ দায়িত্বমুক্ত হয়ে যায়।

মুসনাদে আহমদ এবং সুনানে ইবনে মাজাহ-এ একটি ঘটনা এমনও বর্ণিত হয়েছে যে, একবার ঊনত্রিশে রমযান সন্ধ্যায় হিলাল দেখা গেল না, তাই সবাই ত্রিশ রমযানের রোযা রাখলেন। দিনের শেষে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এক কাফেলা এল। তারা সাক্ষ্য দিল যে, গতকাল সন্ধ্যায় তারা হিলাল দেখেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোযা ভেঙ্গে ফেলার এবং পরের দিন ঈদের নামাযের জন্য ঈদগাহে যাওয়ার আদেশ করলেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২০৫৮৪; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৬৫৩)

তো এই কাফেলা কতই বা দূর থেকে আসবে যে, ২৯ শে রমযান সন্ধ্যায় হিলাল দেখে পরের দিন (আসরের সময়ই ধরুন) মদীনায় পৌঁছে যাবে? সেদিন হিলাল দেখার পর থেকে তারা যদি বিরামহীন লাগাতার উটের পিঠে সফর করে থাকে, তাহলে বেশির চেয়ে বেশি পঁচিশ মাইল, আরো বাড়ালে ত্রিশ মাইল দূর থেকেই হয়তো এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
হাদীসের কিতাবসমূহে একটু দূরবর্তী এলাকা থেকে আগত সাক্ষ্য গ্রহণ করার এই একটি ঘটনাই আছে যাকে মূলত দূর বলা যায় না। ফিকহের ভাষায় এটা ‘বিলাদে মুতাকারিবা’র সংজ্ঞায় পড়ে।

চার-
তাদের আরেকটি খোঁড়া যুক্তি হলো, তারা বলে বেড়ায়, যেহেতু আগের যামানায় প্রচারমাধ্যম এত উন্নত ছিল না; যা এখন হয়েছে, সেজন্য আগের লোকেরা শরীয়তের ঐ ওয়াজিব বিধান বাস্তবায়ন করতে পারেননি। তাদের যদি সুযোগ হত তাহলে তারা অবশ্যই এটা বাস্তবায়ন করতেন।

এখন তো প্রচারমাধ্যম এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা এত উন্নত হয়েছে যে, পুরো বিশ্ব যেন একটি গ্রাম। এখন আমাদের কুরআন-হাদীসের সেই বিধান বাস্তবায়ন করতে বাধা কোথায়?’

পর্যালোচনা:
প্রচারব্যবস্থা ইসলামের শুরুর যুগ থেকে সব যুগে কমবেশি ছিল। ঐ যামানায় প্রচলিত প্রচারমাধ্যম এবং যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে ১. দূত পাঠানো ২. হাতে হাতে চিঠি পাঠানো ৩. ডাকযোগে পাঠানো ছিলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এরপর যখন চীন পারস্য এবং সিন্ধু ও হিন্দুস্তানসহ অন্যান্য অগ্রসর দেশসমূহও ইসলামের বিজিত অঞ্চলের অধীনে এসে গেছে তখন তো সেখানকার যোগাযোগ মাধ্যমও মুসলিম উম্মাহর ব্যবহারে চলে এসেছে। কিন্তু সে যুগে সহজলভ্য কোন প্রচার ব্যবস্থা কেউ ব্যবহার করেছেন, এর কোন নযীর নেই ।

একটুখানি চিন্তার দাওয়াত
আমাদের কি বিশ্বব্যাপী কোনো সর্বজনীন নেতৃত্ব আছে?
একই দিনে বিশ্বব্যাপী রোযা ও ঈদ করা, অন্তত সমগ্র মুসলিম বিশ্বে একই দিনে রোযা ও ঈদ করা, এক্ষেত্রে জানা কথা যে, আমাদের সম্মিলিত কোনো খেলাফত বা নেতৃত্ব অথবা সম্মিলিত কোনো রাষ্ট্র কিছুই নেই। বিশ্বব্যাপী তো নেইই; মুসলিম বিশ্বব্যাপীও নেই। অথচ হিলালের বিশ্বব্যাপী সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য কোনো না কোনো বিশ্বব্যাপী শক্তি ও নেতৃত্বের প্রয়োজন, যেই নেতৃত্ব সবাই মেনে নেবে। এমন কিছু তো বিলকুল নেই! ওআইসির অবস্থা তো আমাদের কাছে খুবই স্পষ্ট। এটা তো কোনো বিশ্বজনীন সংস্থা নয়।

এই প্রস্তাব অর্থাৎ সমগ্র বিশ্বে বা সমগ্র মুসলিম বিশ্বে একই দিনে রোযা ও ঈদ করা, একে বাস্তবায়ন করার জন্য অন্তত চাঁদ দেখার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে একটি সম্মিলিত বিশ্বজনীন সংগঠনের প্রয়োজন, যার প্রতি সবার ঐকমত্য থাকবে। এর সিদ্ধান্তের প্রতি সমস্ত মুসলমানের আস্থা থাকবে। অন্তত চাঁদ দেখার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে এই সংগঠনের ফায়সালা অবশ্য-গ্রহণীয় বলে বিবেচিত হবে। আজও পর্যন্ত কি এরকম কোনো সম্মিলিত সংগঠন অস্তিত্বে এসেছে?
নব উদ্ভাবিত এই প্রস্তাব সামনে আসার পর আলিমগণ কী বলেছেন?

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ থেকে চলে আসা এখনও পর্যন্ত বহাল ও বলবৎ এই সুন্নতে মুতাওয়ারাসার বিপরীতে যখন কতিপয় যুক্তিবাদী লোকের পক্ষ থেকে তথাকথিত ঐক্যের আওয়াজ উঠল তখন আহলে হক আলিমগণ যথাসময়ে এর প্রতিবাদ করেছেন এবং তাদের উত্থাপিত যুক্তিসমূহের বাস্তবতা উন্মোচন করে দিয়েছেন।

রাবেতায়ে আলমে ইসলামীর ফিকহ একাডেমীর সিদ্ধান্ত:
এ ব্যাপারে রাবেতাতুল আলামিল ইসলামীর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘আলমাজমাউল ফিকহিল ইসলামী (ফিকহ একাডেমী, মক্কা মুকাররমা) সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত এই যে,
لا حاجة إلى توحيد الأهلة والأعياد في العالم الإسلامي، لأن توحيدها لا يكفل وحدتهم، كما يتوهمه كثير من المقترحين لتوحيد الأهلة والأعياد. وأن تترك قضية إثبات الهلال إلى دور الإفتاء والقضاة في الدول الإسلامية، لأن ذلك أولى وأجدر بالمصلحة الإسلامية العامة، وأن الذي يكفل توحيد الأمة وجمع كلمتها، هو اتفاقهم على العمل بكتاب الله وسنة رسول الله صلى الله عليه وسلم في جميع شؤونهم.

মুসলিম জাহানে চাঁদ ও ঈদ এক করার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ তা মুসলিমদের ঐক্য নিশ্চিত করবে না যেমনটা হিলাল ও ঈদ এক করার অনেক প্রস্তাবকের ধারণা। হিলাল প্রমাণ হওয়ার বিষয়টি ইসলামী দেশগুলোর কাযা ও ফতোয়া বিভাগগুলোর উপর ছেড়ে দেওয়াই সমীচীন। কারণ এটিই ইসলামের সাধারণ কল্যাণ বিবেচনায় অধিকতর উত্তম ও উপযোগী।

আর যে বিষয়টি উম্মাহর ঐক্য নিশ্চিত করবে তা হচ্ছে, সকল বিষয়ে আল্লাহর কিতাব ও আল্লাহর রাসূলের সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করার বিষয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হওয়া।’’ (কারারাতুল মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, মক্কা মুকাররমা, পৃষ্ঠা : ৮৭-৮৯)

রাবেতায়ে আলমে ইসলামীর ‘আলমাজমাউল ফিকহী’-এর ঐ অধিবেশনে, যাতে উপরোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, পুরো বিশ্বের এবং সকল মাযহাবের বড় বড় ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও মুফতীয়ে আযম পাকিস্তান হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ. তাঁর লিখিত পুস্তিকা ‘রুইয়াতে হিলালে’- এ এবং হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ ইউসূফ বিন্নুরী রাহ. তাঁর তিরমিযীর শরাহ ‘মাআরেফুস সুনান’-এ এ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন এবং অত্যন্ত কঠিন ভাষায় নব উদ্ভাবিত দাবীর খণ্ডন করেছেন। ইউসুফ বানুরী রাহ. তো সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা ও ঈদ পালনের মতকে শরীয়তের মেযাজের খেলাফ বলেছেন।

মোটকথা, বিশ্বব্যাপী একই দিনে রোযা ও ঈদ করার মতবাদ একটি নতুন বিষয়। চার মাযহাবেরই অধিকাংশ আলেম এবং এই উপমহাদেশের দেওবন্দী, বেরলভী ও আহলে হাদীস, সকল ঘরানার অধিকাংশ আলেম একে এক অপ্রয়োজনীয় বরং ভিত্তিহীন প্রচেষ্টা গণ্য করেছেন। আর এ প্রয়াসকে বিশেষ কোনো সওয়াবের কাজ মনে করা হলে তা বিদআত হওয়ার বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। দ্বীনের ইলম এবং শরীয়তের রুচি-প্রকৃতি সম্পর্কে বেখবর থাকার কারণে যারা একে ফরয বা ওয়াজিব বলতে চান, তারা তো বুঝে অথবা না বুঝে শরীয়তের বিকৃতিতে লিপ্ত।

লেখক: প্রধান মুফতী ও শাইখুল হাদীস, জামি’আ রাহমানিয়া আরাবিয়া,মুহাম্মাদপুর,ঢাকা ১২০৭

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ