সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকে লন্ডন মহানগরের সীরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত ‘শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ ছিল দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ’ ২৪ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে ইসলামী আলোচক আব্দুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ প্রকাশিত হচ্ছে আল্লামা মাহমুদুল হাসানের ‘হাসানুল ফতোয়া’ তাড়াইলে মাদক-জুয়া ও অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিবাদে আলেমদের সমাবেশ নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে, দ্রুতই রোডম্যাপ : ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শনিবার বাংলাদেশ সফরে এলেন দেওবন্দের উস্তাদ মুফতি ফখরুল ইসলাম এলাহাবাদী আগামীকাল শরীফগঞ্জে আসছেন সাইয়েদ আরশাদ মাদানী

জুমার দিনের অন্যতম আমল সুরা কাহাফ তিলাওয়াত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি নূর মুহাম্মদ রাহমানী।।

মহান আল্লাহ আপন কুদরতে এই নিখিল ধারা সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে কিছু জিনিসকে কিছু জিনিসের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। সাতটি দিবস সৃষ্টি করেছেন, এর মধ্যে জুমার দিনকে অন্যান্য দিনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন।

জুমার ফজিলত ও গুরুত্বের তালিকায় উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র জুমার নামেই কোরআনে কারিমে একটি সুরা নাজিল হয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আহŸান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর, ইহাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর।’ (সুরা জুমা : ০৯)

সুরা কাহাফ জুমার দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল। পবিত্র কোরআনের অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ সুরা এটি। হাদিস শরিফে সুরাটিকে আল্লাহর সাকিনা তথা প্রশান্তি বলা হয়েছে। জনৈক ব্যক্তি সুরা কাহাফ পড়ছিল। তখন লোকটি তাকিয়ে দেখতে পেল একখÐ মেঘ তাকে পরিবেষ্টন করে নিয়েছে। বারা ইবনে আযেব বর্ণনা করেছেন যে, লোকটি বিষয়টি রাসুল (সা.)-এর কাছে বললেন।

তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, হে অমুক তুমি সুরাটি পড়তে থাক। কারণ এটি ছিল আল্লাহর রহমত বা প্রশান্তি যা কোরআন তিলাওয়াতের কারণে বা কোরআন তিলাওয়াতের জন্য অবতীর্ণ হয়েছিল।’ (মুসলিম : ১৭৪২) অর্থাৎ এটা হলো আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সাকিনা বা প্রশান্তি যা কোরআন পাঠের সময় অবতীর্ণ হয়ে থাকে।

হজরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা আল কাহাফ পড়বে, তার (ঈমানের) নূর এ জুমা হতে আগামী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে।’ (মিশকাত, হাদিস : ২১৭৫) হাদিসটি দ্বারা বোঝা গেল, সুরা কাহাফ জুমার দিনের সাথে বিশেষ সম্পর্ক রাখে।

যার কারণে এদিনে এ সুরার তিলাওয়াতের জন্য বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুরা কাহাফ পাঠ করবে কিয়ামত দিবসে তার পায়ের নীচ থেকে আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত নূর আলোকিত হবে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহ মাফ হবে।’ (আততারগিব ওয়াত তারহিব : ১/২৯৮) অন্য আরেকটি হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি জুমার রাতে সুরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য স্বীয় অবস্থানের জায়গা হতে পবিত্র মক্কা পর্যন্ত একটি নূর হবে।’ (সহিহ তারগিব তারহিব : ৭৩৬)

সুরাটির প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করে এর প্রতি আমল করার অনেক ফজিলত রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে তাকে দাজ্জালের অনিষ্ট হতে নিরাপদ রাখা হবে।’ (মুসলিম) কোনো কোনো বর্ণনায় শেষ দশটি আয়াতের ব্যাপারেও এ ধরনের ফজিলতের কথা বলা হয়েছে।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার জন্য এমন একটি নূর হবে, যা তার অবস্থানের জায়গা থেকে মক্কা পর্যন্ত আলোকিত করে দেবে। আর যে ব্যক্তি উহার শেষ দশটি আয়াত পাঠ করবে, তার জীবদ্দশায় দাজ্জাল বের হলেও তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (সিলসিলায়ে সহিহা : ২৬৫১)

পড়ার সময় বৃহস্পতিবার দিন শেষে সূর্য ডোবার পর থেকে শুরু করে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত একাধিক বৈঠকে সুরা পড়া জরুরি নয়। বরং বৃহস্পতিবার সন্ধার পর থেকে শুরু করে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত একাধিক বৈঠকে ভাগ ভাগ করে উক্ত সুরা পড়ে শেষ করলেও একই সওয়াব পাওয়া যাবে।

লেখক: উস্তাযুল হাদিস ওয়াল ফিকহ, জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলূম বাগে জান্নাত, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ