কাউসার লাবীব: ওয়াজের মঞ্চে অপ্রীতিকর বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়ে নানা সময়ে আলোচনা-সমালোচনায় আসেন ইসলামী বক্তা আবরারুল হক আসিফ। সম্প্রতি ওয়াজের মঞ্চে তাকে দৌড়ে এসে চুমো খায় এক শিশু শ্রোতা। বলে, ‘আপনাকে চুমো দিতে পারলে আম্মু বলেছে বিরানি রেঁধে খাওয়াবে।’ এছাড়া আরেকজন এসে তাকে ফুলের তোড়া উপহার দেয়। স্বরচিত কবিতা লিখেও এই বক্তার হাতে দেন একজন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব বিষয় নিয়ে এখন চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এই পরিস্থিতে বক্তা আবরারুল হক আসিফকে নিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্ট দেন তরুণ গবেষক আলেম ও ইসলামী বক্তা মুফতি আরিফ বিন হাবিব।
আজ মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১টা ১মিনিটে দেয়া পোস্টে তিনি লিখেন, প্রিয় আবরারুল হক আসিফ! যোগ্যতা,রেজাল্ট, ডিগ্রী সবদিক থেকেই আমি আপনার ধারেকাছেও না, যতটুকু জেনেছি আপনি একজন নাম্বার ওয়ান ছাত্র মা শা আল্লাহ। ক্লাসে কখনো প্রথম হওয়া ছিল আমার কাছে স্বপ্নের মতো।
আমি মধ্যম মানের একজন ছাত্র ছিলাম, তাই আপনাকে উপদেশ দেওয়ার মতো যোগ্যতা এবং সাহস কোনটাই আমার নাই। তবে আবদার তো রাখতে পারি!
তিনি লিখেন, মাদ্রাসা এবং জেনারেল দুই লাইনেই আপনি অভিজ্ঞ, আরবি, ইংরেজি এবং বাংলা ভাষায় আপনি সমান পারদর্শী। আপনি আমাদের দেশের সম্পদ, কুরআন ও সুন্নাহর ভাষ্যকার। দয়া করে এসব থেকে যদি বিরত থাকতে পারতেন!
আবরারুল হক আসিফ জেনারেল লাইনে পড়াশোনা শুরু করলেও তার বেড়ে উঠা মাদ্রাসা লাইনে। তিনি ছোটবেলা থেকেই মাদ্রাসায়ও পড়াশোনা করেছন। হিফজ সমাপ্ত করেন ২০১১ সালে। তারপরে মাওলানা হওয়ার জন্য মাদ্রাসায় ভর্তি হন। পড়াশোনা করেছেন রাজশাহি ইসলামিয়া কাসেমী মাদ্রাসায়। গত বছর মাস্টার্স দেওয়ার কথা থাকলেও মাহফিলের চাপে দিতে পারেননি। তবে তিনি এ বছর পরীক্ষা দিবেন বলে জানিয়েছেন।
বর্তমানে আবরারুল হক আসিফের নিজস্ব ফেসবুক পেইজে যুক্ত আছে ৩১ লাখেরও বেশি মানুষ। এছাড়াও বিভিন্ন পেইজে তার ভিডিওগুলো প্রতিনিয়ত কোটি কোটি মানুষ দেখেন।
এদিকে বিজ্ঞ তরুণ আলেম মুফতি আরিফ বিন হাবিব জ্ঞানগর্ভ আলোচনা উপহার দিয়ে ইতোমধ্যেই মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন শ্রোতাদের মাঝে। তার আলোচনায় মুগ্ধ হয়ে অনেকে তাকে হাদিসের ‘এনসাইক্লোপিডিয়া’ও বলে থাকেন। এর কারণও আছে। দরদভরা খুতবায় আলোচনা শুরু করেন। কথা এগুতে থাকে সমাজের নানা বিষয় নিয়ে। কথা বলেন ঘণ্টাব্যাপী। কিন্তু এমন বিষয় তিনি আলোচনায় আনেন না বললেই চলে; যার সঙ্গে তিনি হাদিস-কোরআনের কোনো রেফারেন্স দেন না। প্রতিটি আলোচনাতেই তিনি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে দলিলভিত্তিক কথা বলেন। মেধার স্বাক্ষর রাখেন জ্ঞানগর্ভ উপস্থাপনায়। হাদিসের কিতাবের নাম, পৃষ্ঠা নম্বর, হাদিস নম্বর যেন তার চোখে ভাসে। সাবলীলভাবে আলোচনায় ইতোমধ্যেই শ্রোতাদের মন জয় করেন এ আলেম।
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ‘ইউটিউব’এ তার ওয়াজগুলো মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ হয়। মানুষ খুঁজে পায় ইলম ও হেদায়েতের খোরাক। মন্তব্যের ঘরে তুলে ধরেন হৃদয় নিঙরানো অভিব্যক্তি। বর্তমানে মুফতি আরিফ বিন হাবিবের নিজস্ব ফেসবুক পেইজে যুক্ত আছে প্রায় আড়াই লাখের মতো মানুষ।
কেএল/