হাছিব আহমদ ।।
নিত্যনতুন প্রযুক্তি ক্রমবিকাশে আজ আমরা ডিজিটাল যুগে পদার্পণ করেছি। কিন্তু ডিজিটাল যুগের অপব্যবহারের ফলে নিজেরা এতটা বেশি ডিজিটালাইজ হয়ে গেছি যে, তার প্রতিদান নিত্যদিন কেউ না কেউ দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রত্যাহিক জীবনে একটি অংশ সুস্থ বিনোদন কিন্তু আমরা সেই বিনোদনকে একবারে অপব্যবহার করে অপসংস্কৃতির কালো ধোঁয়ায় পরিণত করেছি। বর্তমানে বিনোদন জগতে নেমেছে পাহাড় ভাঙা ধস, সময়ের পরিবর্তনের সাথে মানুষের আচার-আচরণ ও রুচির পরিবর্তন হয়েছে হওয়াটা স্বাভাবিক।
মানুষ যখন পরিবর্তিত হয় তখন অধঃপতনের দিকে ধাবিত হয়। ভালোটা ছেড়ে মন্দের দিকে যায়, পরিবর্তনের পালাবদলে মানুষ তার সংস্কৃতির শেখর ভুলে যায় যা তখন সেটাই অস্বাভাবিক। বাঙালির সংস্কৃতি রুচি আচার-আচারণ একসময় সমৃদ্ধি ছিল, খুব দ্রুত বিবর্তনে যে স্থানে আমরা দাঁড়িয়ে, বর্তমানের এই সংস্কৃতিকে আর সমৃদ্ধি বলা চলে না।
পোশাক-আশাক থেকে শুরু করে চলা-ফেরা সবকিছুতেই এক আমূল নীতিবাচক পরিবর্তন। এককথায় পাশ্চাত্যের অসুস্থ সংস্কৃতি আমাদেরকে ঘিরে ফেলেছে যা খুবই পরিতাপের বিষয়। তবে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে তা খুবই নগন্য।
আধুনিকতার নামে বিকৃত সাংস্কৃতিক দিকে আমরা দিন দিন ধাবিত হচ্ছি জেনে না বুঝে। সামাজিক করনের যে প্রক্রিয়া গুলোর মাধ্যমে আমরা সংস্কৃতি শিখছি সেটাই ভুল, অর্থাৎ আমরা ভুল সংস্কৃতি শিখছি, বর্তমান প্রচার মাধ্যম গনমাধ্যম বিনোদন মাধ্যম টিভি চ্যানেলগুলোতে আমাদের অপসংস্কৃতিকে দিকে ঠেলে দিচ্ছে, আমরা এখন বাস্তবে দেখছি বর্তমানে নাটক গুলোতে কি ধরনের ভাষা ব্যাবহার করা হয়ে যা একজন সুস্থ সাংস্কৃতিমনা মানুষের ভিতকে উপরে ফেলে দেয় যা বিকৃত মানসিকতার বিকাশ ঘটাচ্ছে অর্থাৎ এসব বিনোদন মাধ্যমের সেই সোনালি অতীত আমার হারিয়ে ফেলেছি আমরা নিজেরা সেই সংস্কৃতি ভুলে গিয়েছি।
সেই বিনোদন মাধ্যম গুলোতে আমাদের জ্ঞানকে আত্মতুষ্টি ও সমৃদ্ধ করত, কিন্তু এখনকার সময় অর্থহীন অশালীন সংলাপ খোলামেলা পোশাকের সিনেমা গানগুলো থেকে শুধু অসংস্কৃতি শিখছি, বিনোদন জগত টা অপসংস্কৃতি শিক্ষার হাট-বাজারে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তির সহজলভ্যতা বিকৃতি রুচিবোধ, সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয় অর্থ কে কেন্দ্র করে সিনেমা,নাটক নির্মিত হচ্ছে শুধু পরিচিত মুখ হওয়া আর অর্থের নেশায় আর তরুন প্রজন্মেকে অপ-সংস্কৃতি ও অসভ্যতা শেখানো যা আসলেই আমাদের হারানো দিনের ঐতিহ্যে সংস্কৃতি আড়ালে চলে গিয়েছে একটি দেশের ভবিষ্যৎ হলো সে দেশের তরুণ সমাজ ও ভবিষ্যৎকে নষ্ট করার অপকৌশল হচ্ছে। অপসংস্কৃতিকে উৎসাহিত করে বাস্তবে তা প্রয়োগ করা।
আমাদের সমাজের তরুণ-তরুণীদের উপর অপসংস্কৃতির কুপ্রভাব অতি গভীর ও ব্যাপক। তারা সংস্কৃতির নামে, অপসংস্কৃতির চর্চায় মেতে উঠেছে। সিনেমার নাচ, গান পোশাক বেশির ভাগ সময় উদ্ভটভাবে সন্নিবেশিত হয়ে থাকে। তরুণরা অপসংস্কৃতিতে আকৃষ্ট হচ্ছে দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের সমাজেও তাই ঘটছে। সুস্থ সংস্কৃতি যেমন সুস্থ ও সুন্দর পথ দেখায় তেমনি অসুস্থ সংস্কৃতি মানুষকে অসুস্থ পথে নিয়ে যায়।
বর্তমানের তরুণরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাদের মাঝে সুস্থ সংস্কৃতি প্রবেশ করাতে হলে, যারা নাটক, সিনেমা তৈরি করছেন তাদেরকে সুস্থতার প্রতি যত্নবান হতে হবে। তারা যদি ভালো কিছু তৈরি করেন যার মাধ্যমে তরুণদের মগজ থেকে উত্তেজিত চিন্তাভাবনা দূরীভূত হবে এবং এর মাধ্যমেই ফিরে আসতে পারে সুস্থ, সুন্দর এবং স্বাভাবিক একটি সংস্কৃতি।
এসব দিক যত দিন আমাদের সুস্থ সংস্কৃতিতে প্রবেশ না করবে তত দিন অবধি এ সমাজ দেশের তরুণ প্রজন্ম অসুস্থই থেকে যাবে যদি না তারা নাটক ও সিনেমার নামে রুচিহীন চিত্র তরুণ প্রজন্মের কাছে ফুটে না উঠে তাই নির্মাতাদের কাছে অনুরোধ বিকৃত নামের নাটক নির্মাণ বন্ধ করুন। পাশাপাশি এতে যেন অভিনয়শিল্পীরাও অভিনয় না করেন, সে বিষয়েও নিজেদের সচেতনতা দরকার। সুতরাং আমাদের পরিত্রাণের জন্য সামাজিক সচেতনতা ও সুস্থ সাংস্কৃতির চর্চা প্রয়োজন, তাহলে সুস্থ সুন্দর সমাজ জীবন গঠনের মাধ্যমে আলোকিত জীবন গঠন করতে পারব।
শিক্ষার্থী- মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
-এটি