সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৮ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নারী কমিশনের প্রস্তাবনা, অসভ্যতা প্রসারের নীল নকশা: নেজামে ইসলাম জামায়াতের সঙ্গে মতভিন্নতা আছে, শত্রুতা নয়: মাওলানা ফজলুর রহমান মসজিদে নববীর ইমামকে মালদ্বীপে লালগালিচা অভ্যর্থনা মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করলে আমাদের জীবন আলোকিত হবে : ধর্ম উপদেষ্টা বর্তমানে ‘উলূমুল হাদিস’-এর প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশের মতো সম্প্রীতি আশপাশের দেশে খুঁজে পাবেন না: ধর্ম উপদেষ্টা ‘গাজাবাসীর পাশে দাঁড়ানো উম্মাহর আবশ্যিক দায়িত্ব’ নারী কমিশনের প্রস্তাবে পতিত স্বৈরতন্ত্রের সুযোগ: গাজী আতাউর বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভবনের স্বীকৃতি পেল মসজিদুল হারাম ‘সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নারী সমাজের জন্য চরম অবমাননাকর’

আজকের দিনে উম্মত হারিয়েছিল মুফতি আব্দুর রহমান রহ.-কে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ফকীহুল মিল্লাত মুফতি আব্দুর রহমান রহ. এর ৭ম মৃত্যু বার্ষিকী আজ। ২০১৫ সালের এই দিনে তিনি প্রভুর ডাকে সাড়া দেন।

১৯২০ সালে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার ইমামনগর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মুফতি আব্দুর রহমান রহ.। তাঁর বাবার নাম চাঁন মিয়া। তিনি নাজিরহাট বড় মাদ্রাসা ও জামিয়া আহলিয়া মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক লেখাপড়া শেষ করেন। ১৯৫০ সালে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে কওমি মাদ্রাসা পাঠ্যক্রমের সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের ইফতা বিভাগের প্রথম ডিগ্রি লাভকারী মুফতি।

মুফতি আব্দুর রহমান ১৯৬২ সালে উত্তরবঙ্গে গমন করেন। তিনি ওয়াজ-নসিহত, দ্বিনি শিক্ষাদীক্ষা ও আদর্শ বিস্তারে স্বকীয় গুণবলে উত্তরবঙ্গের জনপদে ইসলামী আদর্শ ও শিক্ষার ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটাতে সক্ষম হন। তিনি বহু মসজিদ ও মাদ্রাসা, মক্তব ও হেফজখানা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দেশের উত্তরাঞ্চলীয় প্রায় ১৮টি জেলার সহস্রাধিক দ্বীনি প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত তানযীমুল মাদারিস আদ্বীনিয়্যা বাংলাদেশের (উত্তরবঙ্গ) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৬৮ সালে আল জামিয়া পটিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। সেখানে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত পুরোদমে জামিয়ার বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একাধারে জামিয়ার প্রধান মুফতি, সহকারী মহাপরিচালক ও শিক্ষা বিভাগীয় পরিচালকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দাওরায়ে হাদিসের সর্বোচ্চ কিতাব বুখারি শরিফের প্রথম খণ্ডের পাঠদান করেন। মূলত এ বছরগুলোই আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার কল্পনাতীত উত্থান ও প্রখ্যাত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপায়িত হওয়ার স্বর্ণোজ্জ্বল সময়কাল।

মুসলিম উম্মাহকে সুদভিত্তিক অর্থনীতি থেকে রক্ষা করা এবং ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক অর্থনীতিকে সহজ থেকে সহজ উপায়ে পরিচালিত করার মানসে বিভিন্ন কর্মপন্থা তিনি আপন গবেষণা থেকে উপস্থাপন করেন এবং তা বাস্তবায়িতও হয়। এ দেশে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক হিসেবে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ১৯৮৩ সালেই স্থাপিত হয়। ফকীহুল মিল্লাত উক্ত ব্যাংকের প্রথম শরিয়াহ বোর্ডের সদস্য মনোনীত হন। ইসলামী অর্থনীতির ওপর তাঁর গবেষণালব্ধ বহু কর্মপন্থা ও ফতোয়া ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশকে যেমন সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি মুসলিম উম্মাহে সুদভিত্তিক অর্থনীতির বিকল্প হিসেবে একটি শরিয়াভিত্তিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠায় অনন্য সহায়ক হয়েছে।

আরববিশ্ব তথা দুবাই, বাহরাইন, কাতার প্রভৃতি রাষ্ট্র এবং ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে বড় বড় ইসলামী অর্থনৈতিক সেমিনারে তিনি যোগ দিয়েছেন। এসব সেমিনারে ইসলামী অর্থনীতির ওপর তাঁর গবেষণালব্ধ বিভিন্ন প্রবন্ধ সমাদৃত হয়েছে।

ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিং বিষয়টি এ দেশে বহুল চর্চার জন্য নিজ প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরায় তিনিই সর্বপ্রথম ২০০২ সালে ইসলামী অর্থনীতি ও ইসলামী ব্যাংকিং বিভাগ চালু করেন। বিভাগটি এ পর্যন্ত ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিং বিষয়ে ব্যাপক খেদমত আনজাম দিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকিং ও অর্থনীতিকে এ দেশের আলেম ওলামা ও মাদ্রাসাপড়ুয়াদের মধ্যে বিস্তৃতির জন্য বেশ কয়েকবার আন্তর্জাতিক সেমিনারেরও আয়োজন করেন তিনি। ফকীহুল মিল্লাত ১৯৯১ সালে তাঁর শায়খ রহ.-এর নেক দোয়া ও সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা এবং দেশের বরেণ্য ওলামায়ে কেরামের পরামর্শক্রমে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি ব্যতিক্রমধর্মী উচ্চশিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

মুফতি আবদুর রহমান বাংলাদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম। বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার-প্রসারে তাঁর অসামান্য অবদান রয়েছে। হাজারও ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হয়। তিনি ১৯৯১ সালে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার নামে উচ্চতর ধর্মীয় গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন।


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ