আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ঘর মহিলাদের জন্যে জেলখানা নয় বরং নিরাপদ অফিসস্বরূপ। কোন ব্যক্তি তার নিজের অফিসে থাকতে যেমন নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে আল্লাহওয়ালা মহিলারা তাদের ঘরে থাকতে তেমনই নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। মহিলারা অমূল্য সম্পদের অধিকারী। সে সুন্দর হোক অথবা কালো। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে অফুরন্ত নিয়ামত ও সম্পদের অধিকারী করে সৃষ্টি করেছেন।
এত নিয়ামত তাদেরকে দেওয়া হয়েছে যা পৃথিবীর কোন পুরুষকে দেওয়া হয়নি। মহিলারা যা পারেন কোন পুরুষের পক্ষেই তা সম্ভব নয়। পৃথিবীকে যারা পরিচালনা করেন, এই পৃথিবীর মানুষসহ পশু-পাখি ও সকল প্রকার জীব-জন্তুকে যারা নেতৃত্ব দেন, এগুলো যাদের কথায় চলে, জ্ঞান গরিমায় যারা জগতের শ্রেষ্ঠ, যারা বিশ্বের সম্পদ হিসেবে স্বীকৃত সেই অমূল্য সম্পদ মানুষ মহিলাদের পবিত্র পেট থেকে উৎপাদিত হয়ে থাকে। পৃথিবীর কোন কলকারখানায় এমন মাল-সম্পদ উৎপাদন হয় না।
দুনিয়ার কল-কারখানাগুলোতে যেভাবে দিনে দিনে পর্যায়ক্রমে কোন মাল তৈরি হয় মানুষও তার মায়ের পেটে সেভাবে আস্তে আস্তে তৈরি হয় ও মা মহিলাটি নির্দিষ্ট সময়ে তাদের জন্ম দেন। অথচ দুনিয়ায় একটা মাল তৈরি করতে একটা ভাঙারির কারখানার ভাঙা মালপত্র সংরক্ষণের জন্যেও যে নিরাপত্তা দেওয়া হয় তা তাদের অধিকাংশকেই দেওয়া হয় না। ভাঙারির কারখানা টিন দিয়ে হলেও ঘের বা বাউন্ডারি দেয়। আর যদি ফ্যাক্টরির মাল আরো উন্নত ও অত্যাধুনিক হয় অর্থাৎ সোনা রূপা বা এর চেয়েও দামি ও উন্নত হয় তাহলে ওই ফ্যাক্টরির মালের নিরাপত্তার জন্যে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, যে মহিলার ভিতরে সোনা রূপা ও হীরা মানিক্যের চেয়েও শ্রেষ্ঠ ও মূল্যবান সম্পদ রয়েছে যা হরণ করার জন্যে বা লুণ্ঠন করার জন্যে শয়তান বা কুচক্রী মহল সদা উঁৎপেতে থাকে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা উদাসীন। যে কোন একজন মহিলার শরীরে এত প্রচুর সম্পদ রয়েছে যা পৃথিবীর যে কোন সম্পদের চেয়ে দামি।
এত সম্পদ নিয়ে কোন বুদ্ধিমতি মহিলা দিনেই হোক আর রাতে একাকি চলতে পারেন? আর তাদের অভিভাবকরাই কি তাদেরকে একাকি ছেড়ে দেওয়াটা নিরাপদ মনে করেন? তেমনটি মনে করা আদৌ ঠিক নয়। কারণ, সে রকম পরিবেশ আমাদের দেশে এখনো তৈরি হয়নি। কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ওয়া ক্বারনা ফি বুয়ুতিকুন্না ওয়ালা তাবাররাজনা তাবাররুজাল জাহিলিয়্যাতিল উলা। অর্থাৎ হে স্ত্রীলোকগণ, তোমরা তোমাদের ঘরের মধ্যে অবস্থান কর। পূর্ববর্তী অন্ধকার যুগের মত সাজ-সজ্জা করে পর পুরুষের সামনে বের হইও না। অনেকে ভুল বুঝে বলে থাকেন, মহিলাদেরকে পর্দার নামে জেলখানায় বন্দি করে রাখা হয়।
এতে মহিলাদের চিত্ত বিনোদন নামক মৌলিক অধিকার থেকে বিরত করা হচ্ছে। মূলত: বিষয়টি তেমন নয়। প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব কর্মক্ষেত্র থাকে। আর মহিলাদের কর্মক্ষেত্র বা অফিস হলো তার ঘর। কোন অফিসার যখন সারাদিন তার অফিসে সময় কাটান, কোন দোকানদার যখন সারাটি জীবন একটা দোকানে তার জীবন কাটিয়ে দেন তখন তো তাদেরকে বলা হয় না যে, তাদেরকে অধিকার বি ত করা হয়েছে বা জেলখানায় বন্দি রাখা হয়েছে। তবে কেন মহিলাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের কথা আসবে? আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে বুঝার তাওফীক দান করুন।
লেখক: ইমাম ও খতীব, দিউ বায়তুস সালাম জামে মসজিদ, ফুলপুর ও প্রিন্সিপাল, দারুল ইহসান কাসিমিয়া (এক্সিলেন্ট) মাদরাসা
-কেএল