মুফতি এনায়েতুল্লাহ
নিকট অতীতকালে খুব অল্প সময়ে বাংলাদেশের প্রচুর আলেমকে আমরা হারিয়েছি। একজনকে হারানোর শোক কাটিয়ে ওঠতে না ওঠতেই আরেকজনের মৃত্যুর খবর আমাদের শোকে মূহ্যমান করেছেন। এমন আলেমদের তালিকা বেশ লম্বা। আমরা প্রত্যেকের জন্য দোয়া করি। আল্লাহতায়ালা তাদের কবরকে আলোকিত করুন, জান্নাতের উচুঁ মাকাম নসিব করুন।
দুই. একজন জাতীয় পর্যায়ের আলেম, তিরি তার কর্মময় জীবনে দেশ ও জাতির জন্য গয়রহ অবদান রেখে গেছেন। কীর্তিমান এই আলেমের মৃত্যুর পর আমরা তাকে যেভাবে ভুলে যাই, তার অবদান অস্বীকার করা শুরু করি, পারলে তাকে ভুলে থাকার জন্য নানা কসরত করতেও কসুর করি না, এটা খুবই দুঃখজনক আচরণ। এই অবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তিন. আরও দুঃখজনক হলো, এমন দিকপাল আলেমদের পরিবারের সদস্য, প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও দলীয় দায়িত্বশীলদের আচরণ। তারাও কেন যেন তাদের আব্বাজান, নেতা, শায়খ ও পীরকে পরিবার/দল কিংবা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করতে চান না। তাকে নিয়ে জাতীয়ভাবে কিছু হোক সেটা চান না। এ কারণে তাদের নিয়ে কৃতার্থ কোনো শাগরেগ, দরদি কোনো শিষ্য কিংবা গবেষক পর্যায়ের কেউ কিছু করতে গেলে বাগড়া দেন। কিংবা তাতে নিজেদের অংশীদার করার দাবি তুলেন। অথবা তারা অচিরেই এমন কিছু করতে যাচ্ছেন বলে উদ্যোগটি থামিয়ে দেন।
নাম ধরে ধরে বলতে গেলে, বিশাল লম্বা তালিকা হবে। এমন নয় যে, তাদের সন্তান, সহকর্মীরা অযোগ্য কিংবা এর প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেন না। সবই বুঝেন, তার পরও অজানা কারণে তারা এমন মানসিকতা লালন করেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, তাদের আগ্রহ বেশি প্রচারণায়, আলোচনায়- কাজে নয়।
চার. এ কথা সবাই জানেন, মানেন ও স্বীকার করেন, স্মরণীয় মনীষীদের জীবনী ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রেরণা, পথ চলার পাথেয়। সভ্য ও বিদ্বান সব সমাজেই এর কদর অসামান্য। যারা বড়দের সম্পর্কে জানে না, তারা বড় হতে পারে না। বড়দের জীবনস্মৃতি, গড়ে ওঠা ও সাফল্যের ঘটনাবলী হাত ধরে হাঁটতে শেখায়।
তাই তাদের নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা হওয়া দরকার। তাদের নিয়ে যত বেশি আলোচনা হবে, নতুন প্রজন্ম সেখান থেকে নিজেদের শেকড় সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবে, মনে কোনো ধরনের হীনমন্যতা জায়গা পাবে না।
-এটি