আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.। বিশিষ্ট ফকীহ সাহাবী। তাঁর অন্যতম ছাত্র বড় ফকীহ ও মুহাদ্দিস তাবেঈ আবিদাহ ইবনে আমর সালমানী রহ. (মৃ.৭২হি.)।
ফতহে মক্কার বছর ইয়ামানে ইসলাম গ্রহণ করেন। নবীকে সরাসরি দেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু নবীর প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও মহব্বত ছিল অতুলনীয়।
কোনও এক প্রসঙ্গে এক লোক তাকে জানাল, আমাদের কাছে আনাস ইবনে মালেক রা. এর সূত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিছু চুল মুবারক আছে। কথাটি শুনামাত্রই তিনি আনন্দে বলে উঠলেন-‘আমার কাছে নবীজীর একটি চুল মুবারক থাকা পৃথিবীর বুকে যাবতীয় স্বর্ণ-রূপার মালিক হওয়ার চেয়েও অধিক প্রিয়।
ইমাম যাহাবী রহ. এ বক্তব্য লিখার পর তাঁর মাঝেও ইশকে নবী জেগে উঠে। তিনি দীর্ঘ আলোচনা শুরু করেন। বলেন-এ হল নবীর প্রতি আবিদাহ রহ. এর ভালোবাসার নির্দশন। দুনিয়ার যাবতীয় সম্পদের তুলনায় তিনি নববী একটি চুল মুবারককে প্রাধান্য দিয়েছেন। সকল সম্পদ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত একটি চুল মুবারকের জন্য।
কথাটি তিনি বলেছেন নবীর ইন্তেকালের মাত্র ৫০ বছর পর। সে হিসাবে আমাদের সময়ে (৮ম হিজরী শতাব্দি) নবীর প্রতি ভালোবাসার অভিব্যক্তি কেমন হওয়া উচিত!
বিশুদ্ধ সূত্রে নবীজীর একটি চুল মুবারক যদি আমরা পেয়ে যাই অথবা নবীর জুতোর একটি ফিতা অথবা নখের কর্তিত অংশ অথবা তাঁর পাত্রের কিছু অংশ-তাহলে আমাদের অভিব্যক্তি ও আবেগ কেমন হওয়া চাই!
তিনি আরও বলেন-কোনও বিত্তবান যদি এসব থেকে কোনও একটি অর্জনের জন্য, ভালোবাসার প্রদর্শন করতে যেয়ে তার সমুদয় সম্পদ ব্যয় করে ফেলে-তুমি কি তাকে নির্বোধ বলবে, অপচয়কারী বলবে? কখনও নয়।
ভালোবাসার আবেগ ও প্রকাশে ইমাম যাহাবী রহ. এর কলম যেনো থামছে না। তিনি আরও লিখছেন-তুমি হাজরে আসওয়াদ পেয়ে গেলে মনভরে চুম্বন করো। এ চুম্বন সেখানে হবে, যেখানে তিনি চুম্বন করেছেন। এর চেয়ে গর্বের বিষয় আর কি হতে পারে!
বিশিষ্ট তাবেঈ ছাবেত আল-বুনানী রহ. সাহাবী আনাস ইবনে মালেক রা.কে যখনই দেখতেন, তাঁর হাতটুকু নিজের কাছে টেনে নিতেন। পরম মহব্বত ও ভালোবাসায় সেই হাতে চুম্বন করতেন। আর বলতেন-এটি সেই হাত, যেই হাত প্রিয় নবীর হাত মোবারক স্পর্শ করেছে।
ইমাম যাহাবী রহ. আরও বলছেন-তুমি হজ্ব করতে পারনি। হাজী পেয়েছো। তাকে জড়িয়ে ধরো। তার মুখে চুমো খাও। আর বল, এটি সেই মুখ, যে মুখ হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করেছে। যে পাথরে চুম্বন করেছেন আমার প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। (বিস্তারিত দেখুন-সিয়ারু আলামিন নুবালা, খ.৫, পৃ.৭৭)
আহ, নবীর প্রতি সালাফের ভালোবাসা কেমন ছিল। ফিদাকা আবি ওয়া উম্মি ইয়া রাসুলুল্লাহ।
-এটি