সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

পরকীয়া মহামারী রোধে দুই ইসলামি চিন্তাবিদের পরামর্শ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

পরকীয়া প্রেম, সংসারে বিচ্ছেদ বর্তমান সমাজের এক মহামারী। হাসিখুশি সাজানো সংসারে মুহূর্তেই অশান্তি-ভাঙ্গন সৃষ্টি হচ্ছে পরকীয়ার কারণে। পরকীয়া ও এর জেরে সংঘটিত পরবর্তী অপ্রস্তুত পরিস্থিতিগুলো যেন থামার নামই নেই। একের পর এক এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর ভেসে বেরাচ্ছে সংবাদ মাধ্যমগুলোর পাতায়। এ থেকে পরিত্রাণে কী পরামর্শ দিচ্ছেন দেশের চিন্তাবিদ আলেমগণ। এ বিষয়ে বিজ্ঞ আলেমদের সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলামের প্রতিবেদক নুরুদ্দীন তাসলিম।  


গত ২ অক্টোবর শনিবার একটি সংবাদ মাধ্যমে এসেছে এমনই এক পরকীয়ার খবর , যেখানে স্বামীর বাশের লাঠির আঘাতে নিহত হয়েছেন স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক, আহত হয়েছেন স্ত্রী নিজেও। ঘটনাটি নিয়ে থানা-পুলিশ পর্যন্ত হয়েছে। এ ছাড়াও নাসির-তামিমার ঘটনার মত ঘটনাও দেশে ঘটেই চলছে।

এমন অনৈতিক ও লজ্জাকর ঘটনার পেছনে মূলত ইসলামি অনুশাসন পালনে মানুষের উদাসীনতা বড় একটি কারণ বলে মনে করেন জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার ইফতা বিভাগের প্রধান, লেখক, গবেষক মুফতি হিফজুর রহমান

তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেছেন, বর্তমানে মানুষের মাঝে ইসলামী অনুশাসন মানার ক্ষেত্রে যে পরিমাণ উদাসীনতা তা অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। এসবের ফলে সমাজ যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন ইসলামী চিন্তাবিদগণ ক্রমেই তা ছড়িয়ে পড়ছে, এর অন্যতম রূপ হল এই পরকীয়া।

‘বর্তমানে ইসলামের অন্যতম বিধান পর্দার খেলাফ চলা এবং একে হালকা করে দেখাও পরকীয়া মহামারী ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান মিডিয়া সংস্কৃতির এই যুগে ভিনদেশী অপসংস্কৃতি সয়লাব আমাদের ব্যক্তিগত জীবনকে স্বেচ্ছাচারিতায় পরিণত করছে, তাই মিডিয়া থেকে কিছু গ্রহণ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং নিজ জাতিসত্ত্বা ও সংস্কৃতিকে মাথায় রাখা প্রয়োজন’।

তিনি বলছেন, ‘ইসলামে বিবাহ বহির্ভূত প্রেম এবং অবৈধ সম্পর্ক কোনোভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। তবে এসবের থেকেও মারাত্মক অপরাধ হচ্ছে পরকীয়া প্রেম, যা হাসিখুশিতে ভরপুর একটি সংসারকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কারো স্ত্রীকে তার থেকে ছিনিয়ে আনছে। এর ফলে সন্তান বাবা মাকে হারাচ্ছে। তাই এসব থেকে রক্ষা পেতে শরীয়তে যেসব শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো ভয় করা উচিত’।

তিনি আরো বলছেন, প্রতি মুহূর্তে ওলামায়ে কেরামের শরণাপন্ন হয়ে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা উচিত। এছাড়াও বর্তমানে এসব বিষয়ে সতর্ক করে ওলামায়ে কেরাম বিভিন্ন বই-পুস্তক লিখেছেন সেগুলো নিজেদের পাঠ্য তালিকায় রাখার আবশ্যকীয় বলে পরামর্শ দিয়েছে মুফতি হিফজুর রহমান।

বি-বাড়িয়া জামিয়া ইউনুছিয়ার শাইখুল হাদিস আল্লামা সাজিদুর রহমানও পরকীয়া মহামারী ছড়িয়ে পড়ার জন্য ভিনদেশী অপসংস্কৃতির সয়লাব ও তথ্যপ্রযুক্তি অপব্যবহাকে অন্যতম দায়ী বলে মনে করেন ।

তিনি বলছেন, পুরোপুরি না হলেও অনেকাংশেই দেশের সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়তে চলেছে ভিনদেশী মিডিয়া অপসংস্কৃতির ফলে। বর্তমানে দেশে বিদেশি কিছু প্রচার মাধ্যম বন্ধ হওয়ার খবরকে স্বস্তিদায়ক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তবে এসবের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পরকীয়া থেকে রক্ষা পেতে তিনি বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তাহল-স্বামী-স্ত্রী পরস্পর ইসলামী বিধান মেনে চলা। একে অপরের প্রতি যে অধিকার রয়েছে তা পূর্ণাঙ্গরূপে পালন করা।

তিনি আরো বলেছেন, স্বামী-স্ত্রী কখনো একে অপরের অধিকারের খেয়ানেত না করা। এমন কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে সব সময় খেয়ানতের ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাকে ভয় করা। ‘ইসলাম নির্ধারিত পর্দার বিধান সবসময় গুরুত্বের  সাথে পালন করা’।

আল্লামা সাজিদুর রহমান আরো বলেন, ‘ইসলামে নারীর যে অধিকার ও সম্মান দেওয়া হয়েছে তা পালনের ক্ষেত্রে সর্বদা পুরুষকে সজাগ থাকতে হবে। এমন হলেই কমে আসবে পরকীয়া মহামারী’।

পরকীয়া এবং সংসারে বিচ্ছেদের মত সংকট দেখা দিলে ইসলামী চিন্তাবীদদের পরামর্শ হলো-

‘কোনো সংকট দেখা দিলে তা নিরসনে পরিবারের মুরুব্বি ও বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শ গ্রহণ করা যেতে পারে। সেইসঙ্গে পরিবারের প্রত্যেকেই নিজের ওপর অন্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। পুরুষ ভিন্ন নারী সঙ্গ এবং নারী ভিন্ন পুরুষ সঙ্গ বর্জন করে চলবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, একে অপরের অধিকার আদায় করা। পারিবারিক জীবন সম্পর্কে ইসলাম কী বলেছে, সেগুলো জানতে চেষ্টা করা ও সেভাবে চলার মাধ্যমেই সুন্দর কোন সমাধান আসতে পারে‘।

ওআই/আবদুল্লাহ তামিম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ