মোস্তফা ওয়াদুদ
নিউজরুম এডিটর
‘করোনাকালে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা’ বিষয়ক সাক্ষাৎকারে আজ থাকছে নরসিংদী সদরে অবস্থিত ‘জামিয়া কাসেমিয়া কামিল মাদরাসা’ এর উপাধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসান আল-মাদানীর ইন্টারভিউ। করোনাকালের এ সংকটময় মুহুর্তে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
-করোনাকালে কেমন আছেন? পড়াশুনার ক্ষতি পুষিয়ে উঠছেন কিভাবে?
মাহমুদুল হাসান আল-মাদানী: আলহামদুলিল্লাহ, সর্বাবস্থায়ই ভালো আছি। আল্লাহ তায়ালা যখন যেভাবে রাখেন সেভাবেই আল্লাহর শোকর। আর করোনাকালে পড়াশোনার ক্ষতির কথা যদি বলেন, তাহলে বলবো! বাংলাদেশে যখন থেকে করোনার সূচনা হয়, তখন থেকেই আমরা অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছি। আমাদের শিক্ষকরা প্রত্যেকেই অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেন। ছাত্র-ছাত্রীরাও অংশ নিচ্ছে। সরকারকর্তৃক যে সিলেবাস দেওয়া হয়েছে সেগুলো আমরা পূর্ণাঙ্গভাবে কন্টিনিউ করছি। এভাবেই আমরা পড়াশোনার ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে ননেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি। তবে সরাসরি পড়ালে যতটা লাভ হতো সেটা হয়তো হয়ে উঠছে না।
-শিক্ষার্থীরা করোনা সংকটে কি করবে? কিভাবে কাটাবে?
মাহমুদুল হাসান আল-মাদানী: করোনাতো হলো সাময়িক। এটা এক সময় চলে যাবে। কিন্তু করোনাকালের সময়গুলো পরে আর পাওয়া যাবে না। কেননা ‘সময় হল তরবারির ন্যায়। হয় তুমি তাকে কাটবে, না হয় সে তোমাকে কাটতে থাকবে।’ সুতরাং এই করোনার সংকটে শিক্ষার্থীরা নিজেদের পড়াশোনার প্রতি খুব বেশি মনোযোগ দিবে। গ্রামারের বিষয়টিতে একটু বেশি মনোযোগী হবে। কেননা এটি হলো তার পড়াশোনার মূলভিত্তি। মূলভিত্তিতে যে যত বেশি পারদর্শী, সে বস স্তরে ততটাই ভালো। এজন্য গ্রামারের প্রতি অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক বলে মনে করি।
আরও পড়ুন: আল্লাহর সাহায্য ছাড়া মুক্তির উপায় নেই: আ.খ.ম আবুবকর সিদ্দীক
-শিক্ষার্থীদের আদর্শিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকের ভূমিকাগুলো কী কী? করোনাকালে সেটা কিভাবে বাস্তবায়ন করবেন?
মাহমুদুল হাসান আল-মাদানী: শিক্ষার্থীদের আদর্শিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকের ভূমিকা অনেক। তবে করোনাকালে সেগুলোর বাস্তবায়নের পদ্ধতি ভিন্ন। যেমন বর্তমানে টেলিফোনের মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তাদের সারাক্ষণ খোঁজ খবর রাখবেন। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে লিয়াজোঁ রাখবেন। মোটকথা ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তারা আলাদা আন্ডাসটিং তৈরি করবেন। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের মত আচরণ করবেন।
আরও পড়ুন: করোনাকালে শিক্ষার্থীরা এই ৭ বিষয়ে মনোযোগী হবে: অধ্যক্ষ, তামীরুল মিল্লাত মাদরাসা
আর এখন যেহেতু অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। নিয়মিত অনলাইনে ক্লাস নিবেন। এর পাশাপাশি যদি কখনো সম্ভব হয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। করোনাকালে এ বিষয়গুলো যদি কোনো শিক্ষক ফলো করেন তাহলে আমি আশাবাদী, একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আদর্শ ছাত্র গড়ে তুলতে পারবেন। করোনাকালে শিক্ষার্থীদের মাঝে তা বাস্তবায়ন করতে পারবেন।
-শিক্ষার্থীরা মানবিক কি কি কাজে অংশ নিতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
মাহমুদুল হাসান আল-মাদানী: করোনাকালে শিক্ষার্থীদের মানবিক কাজে অংশ নেওয়া জরুরি। কেননা মানবিক কাজ অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। কি কি কাজে অংশ নিতে পারে, এটা এলাকাভেদে একেক রকম হবে। এলাকাভেদে কাজ ভিন্ন হবে। যদি কোথাও নামাজের ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে নামাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া, এটাও একটা একটা মানবিক কাজ। মোটকথা যেখানে যেটা প্রয়োজন সেখানে সেটা করবে।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম: অধ্যক্ষ, এন.এস কামিল মাদরাসা
আর দ্বিতীয়ত করোনাকালে নিজের পিতা-মাতার খেদমত করবে সবচেয়ে বেশি। কেননা অন্য সময় পিতা-মাতার খেদমাতের সুযোগ সেভাবে পাওয়া যায় না। তাই এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।
এমডব্লিউ/