ঝালকাঠি এন. এস কামিল মাদরাসা। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম সবচেয়ে বড় আলিয়া কামিল মাদরাসা। এ মাদরাসা থেকে ইলমে দীন লাভ করে শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে পড়েন দেশের আনাচে-কানাচে। বিলিয়ে দেন জ্ঞানের আলো। মাদরাসাটির রয়েছে বেশ ঐতিহ্য। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পেছনেও এ মাদরাসার রয়েছে অনেক অবদান। আজ থাকছে মাদরাসার বর্তমান প্রিন্সিপাল মাওলানা গাজী মো. শহিদুল ইসলাম এর ‘করোনাকালে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ’ বিষয়ক সাক্ষাৎকার। তার সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলামের নিউজরুম এডিটর মোস্তফা ওয়াদুদ।।
মাওলানা গাজী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা-দীক্ষার এই চরম অবনতির সময়ে শিক্ষার্থীরা সরকার নির্দেশিত ক্লাসগুলো নিয়মিত করতে পারেন। বিশেষত শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ ও সংসদ টিভিতে প্রচারিত শিক্ষার্থীদের যে সকল ক্লাস রয়েছে সেগুলোতে নিয়মিত অংশ নেওয়া জরুরি। এ বিষয়ে অভিভাবকদের ভূমিকা রাখা আবশ্যক। নিজেদের সন্তানদের বিষয় তাদের সচেতন থাকতে হবে সবচে’ বেশি।
কেননা একজন অভিভাবক যখন তার সন্তানের বিষয়ে সচেতন থাকবেন তখন সে সন্তান বিপথে যাবে না। অভিভাবকরা নিয়মিত তাদের সন্তানদের সরকার ঘোষিত ক্লাসগুলোতে অংশগ্রহণ করাবেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার আশঙ্কা দূরীভূত হবে। তারা ঘরে বসেও স্কুলে পড়ার অনুভূতি লাভ করতে পারবে। আর শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম। কারণ পড়ালেখার ক্ষেত্রে শিক্ষকই হলেন শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় অভিভাবক।
আরও পড়ুন: আল্লাহর সাহায্য ছাড়া মুক্তির উপায় নেই: আ.খ.ম আবুবকর সিদ্দীক
বিশেষত এখন অনলাইনে যেসব ক্লাস হচ্ছে, সেসবে ক্লাসে তাদের অংশ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি এসব ক্লাসে অভিভাবকদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে, শিক্ষার্থীরা যেন কোনোভাবেই ক্লাসের ফাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিংবা মোবাইলের অন্য কোন গেমসে আকৃষ্ট হয়ে না পড়ে।
ঝালকাঠি এন. এস কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল সারাদেশের সকল অধ্যক্ষদের উদ্দেশ করে বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কিংবা প্রিন্সিপাল যদি সচেতন হয়ে যান, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানটি অবশ্যই সুন্দর ও সুচারুরূপে পরিচালিত হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধান সচেতন হলে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থীও সচেতন থাকবে। আর তিনি যদি প্রতিষ্ঠানের কোনো বিষয়ে শৈথিল্য প্রদর্শন করেন, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা-দীক্ষার মান নষ্ট হয়ে যাবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও তাদের মেধা হারাবে।
আরও পড়ুন: করোনাকালে শিক্ষার্থীরা এই ৭ বিষয়ে মনোযোগী হবে: অধ্যক্ষ, তামীরুল মিল্লাত মাদরাসা
শিক্ষার্থীদের মানবিক কাজে অংশ নেওয়ার আহবান জানিয়ে এ প্রিন্সিপাল বলেন, করোনাকালে সবচেয়ে বেশি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন, সমাজের দরিদ্র মানুষেরা। তাই এ দূর্যোগকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা মানবিক কাজে এগিয়ে আসতে পারেন। কেননা অন্য সময় শিক্ষা-দীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে মানবিক কাজগুলো সেভাবে করার সুযোগ হযয়ে উঠে না তাদের।
এক্ষেত্রে আমাদের দেশের যারা আন্ডার প্রোপার্টির লোক আছেন, যাদের লাইফ দরিদ্রসীমার নিচে রয়েছে-এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের যথাযথ খেদমত করতে পারেন। যেন সাধারণ মানুষের কাছে এ ধারণা বদ্ধমূল হয়ে যায় যে, মাদরাসা শিক্ষার্থীরা শুধু পড়াশোনাতেই নয়, মানবিক উন্নয়ন কাজেও সমানভাবে অংশগ্রহণ করে তারা।
এমডব্লিউ/