।।হুমায়ুন আইয়ুব।।
কিছুটা কাকতালীয়। মিরাকেলও বলা যায়! শাইখুল কোরআন আল্লামা কারী বেলায়েত হুসাইন রহ.-এর স্মারকের প্রথম মতামত রেকর্ড করি- চট্রগ্রামের জিরি মাদরাসার মুহতামিম ও শাইখুল হাদিস আল্লামা শাহ মুহাম্মদ তৈয়ব রহ.-এর। গত কদিন আগে স্মারকের শেষ মতামত ও স্মৃতি রেকর্ড করি-মুফতী মনসূরুল হকের।
শুরু-শেষের দুজনই হাকিমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানবীর চেতনার দাস-আল্লামা শাহ আবরারুল হকের খলিফা। উপমাদেশ জুড়ে ‘মুহিউসসুন্নাহ’ খ্যাত-শাহ আবরারুল হকের মৌল চেতনা ছিল উম্মতকে সুন্নতে নববীর স্বর্গীয় সড়কে উঠানো।
স্মারকে দুজনের স্মৃতি ও মতামতে সুন্নতে নববীর সুবাতাস বিশেষভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। স্মারকের কাজ শেষপ্রান্তে। হাজার শুকুর মাবুদ। হাজার সালাম সবুজ আঙিনার সম্রাটের প্রতি।
দুই.
ইসলামী আন্দোলন বা চরমোনাই পীর সাহেবদের সমর্থিত সংগঠন জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ। গতকাল মঙ্গলবার তারা মাদরাসা খুলে দেওয়ার দাবিসহ চলমানগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে আওয়ার ইসলাম। একাধিক স্টোরিও করেছেন সাংবাদিক মোস্তফা ওয়াদুদ।
নিরবতা বাড়ছে। আষাঢ়ের বৃষ্টি মুখরিত রাত। ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ইসলামি আন্দোলনের যুগ্মমহাসচিব-গাজী আতাউর রহমানের ফোন। আগ্রহভরে ধরি। সালাম বিনিময়ও হয়।
- কেমন আছো হুমায়ুন!
-জি আলহামদুলিল্লাহ-ভালো আছি।
-আজকের সংবাদ সম্মেলনটি যথাযথ কভারেজ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!
-তবে একটি পরামর্শ আছে!
-অবশ্যই বলুন!
-বানান বিষয়ে আরও সর্তক থাকতে হবে। অনেক মূল্যবান সংবাদও সামান্য ভুল বানানের কারণে গুরুত্ব হারায়!
-বানানে সর্তক হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিই। আরও কিছু ভাবনা বিনিময় করে ফোন রাখি।
গাজী ভাইয়ের ফোন ও পরামর্শ দুটোই আমাকে বেশ প্রাণিত করেছে। যথেষ্ট মেধা ও শ্রম বিনিয়োগ করে একটি ভালো সংবাদ পরিবেশন করতে হয়। সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্টমহল থেকে ধন্যবাদ বা সৌজন্যবোধের চর্চা আমাদের অনেকের মধ্যে নেই। জাতীয় সংবাদপত্রের অনেক বন্ধুরাও এই অনুযোগ-অভিযোগটি করেছেন আমাকে। গাজী ভাই সেটি দেখিয়ে আমাদের উৎসাহিত করেছেন।
এদিকে আওয়ার ইসলামের একজন মনযোগী পাঠক বা সমালোচকও গাজী আতাউর রহমান। ভাষা-বানান শুদ্ধতার প্রশ্নে টিম আওয়ার ইসলাম আরও যত্নশীল হবে বলে আশা রাখি।
তবে গাজী ভাইকে ভুল বানানের কারণ হিসাবে বলেছি- অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে তড়িঘড়ি কিংবা সবার আগে খবর প্রকাশের একটি প্রতিযোগিতা কাজ করে। প্রতিযোগিতাটি সুস্থ নাকি অসুস্থ তা বলতে পারছি না। তড়িঘড়ির কারণে বানানের এই প্রমাদ হয়।
তিন.
গতকাল মঙ্গলবার। আষাঢ়ের প্রথম দিন। উচ্ছল বর্ষা শুরু হচ্ছে। কবিগুরু আষাঢ়ের বন্দনায় বলেছেন- ‘ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে/ওই ডাকে শোনো ধেনু ঘনঘন, ধবলীরে আনো গোহালে/এখনি আঁধার হবে বেলাটুকু পোহালে।’
মেঘ-বাদলা মাথায় নিয়ে কবিগুরুর বাধা উপেক্ষা করে আষাঢ়ের প্রথম দিনেই আওয়ার ইসলাম আলোকিত করেছেন-বিশ্বজয়ী হাফেজ, নন্দিতকারী আবু রায়হান। মৌলিকভাবে মুফতি আব্দুল কাইয়ুম মোল্লার সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক ছিলো। গরিবের ঘরে হাতির পাড়ার মতো-রায়হানের আচমকা উপস্থিতি পুরো হাউজকে আলোড়িত করেছে। এই দেশ, এই মাটি পর্বত ছোঁয়া এভারেস্ট জয়ীকে যতটা সম্মান করে, আরশ বিজয়ী হাফেজে কুরআনকে ততটা নয়। করে না। করতে জানে না। আমরাও জানি না!
রায়হানকে ফুল দিয়ে সম্মান জানানোর ছবি আওয়ার ইসলামের পেইজে দেয়া হয়। সেই পোস্টের কমেন্ট বক্সে আওলাদ শরীফ নামের একজন লিখেন- ‘আওয়ার ইসলাম আমার সাথে কথার বরখেলাফ করেছে। সেই থেকে আস্থা কমে গেছে।’
কৌতুহল বা দায়িত্ব নিয়ে তার ইনবক্সে নক করি। কথা বরখেলাফ বিষয়ে জানতে চাই। আওলাদ বলেন- ‘১৮ সালে সেরা পাঠক নির্বাচিত হই। জাতীয় প্রেসক্লাবে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ছিলো-যেতে পারিনি। পুরস্কারও পাইনি। তবুও কথা ছিলো-দুটি বই কুরিয়ারে পাঠানো হবে। কেউ পাঠায়নি।’ তার অভিযোগ মাথা পেতে মেনে নিই। সরি প্রকাশ করি। চায়ের আমন্ত্রণ জানাই। ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজিদ নূর সুমন দ্রুতই তার পুরস্কার পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
লেখক- সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম।
homaunayub@yahoo.com
আরো পড়ুন- নিউজরুমের ডায়েরি-১