আবদুল্লাহ তামিম।। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
পরিবারের একাধিক সূত্র আওয়ার ইসলামকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। প্রতিমন্ত্রীর সহকারীও একান্ত সচিব শেখ নাজমুল হক সৈকত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র মতে জানা যায়, তিনি শ্বাস কষ্টসহ নানান রোগে ভুগছিলেন অনেকদিন ধরে।
শেখ আব্দুল্লাহ ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন।
অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (জন্ম ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫) একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ এবং শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী । তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আবদুল্লাহ ১৯৪৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার কেকানিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ মো: মতিউর রহমান এবং মাতা মোসাম্মৎ রাবেয়া খাতুন। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তিনি জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় শিক্ষা জীবন শুরু করেন। এরপর সুলতানশাহী কেকানিয়া প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। ১৯৬১ সালে একই বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। আযম খান সরকারি কমার্স কলেজ থেকে ১৯৬৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৬৬ সালে বিকম (অনার্স) ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭২ সালে এম.কম. এবং ১৯৭৪ সালে অর্থনীতি বিষয়ে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে ঢাকার সেন্ট্রাল ল' কলেজ থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবন: আবদুল্লাহ কর্মজীবনের শুরুতে সুলতানশাহী কেকানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকি হিসেবে যোগদান করেন। পরে গোপালগঞ্জ ও ঢাকা জজকোর্টে ওকালতি পেশায় জরিত হন। প্রথমে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের বোর্ড অব গভর্নরস-এর সদস্য ও পরবর্তিতে উক্ত বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক ছিলেন।
রাজনৈতিক জীবন: আবদুল্লাহ ছাত্রজীবনে রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। আযম খান সরকারি কমার্স কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় কলেজের ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলনে অংশ নেন এবং সে সময় যুবলীগে যোগদান করে গোপালগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭০ সালের সাধরণ নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি মুজিব বাহিনীতে যোগদান করে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর তিনি গোপালগঞ্জ জেলা শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। গোপালগঞ্জ-৩ আসনে শেখ হাসিনার সবকটি সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা ও কার্যক্রমে ভূমিকা পালন করেন।
আবদুল্লাহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ-৩ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আবদুল্লাহ এ আসনে শেখ হাসিনার পক্ষে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে তিনি আওয়ামী লীগের সাথে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক দলসমূহের সম্পর্কন্নোয়ন এবং কওমি মাদরাসার সনদ স্বীকৃতির পেছনে ভূমিকা পালন করেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি ৭ জানুয়ারি ২০১৯ সালে শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট কোটায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
-এটি