রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বিবাহ একটি ইবাদত, এর পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি নারী অধিকার কমিশনের সুপারিশে আলেম প্রজন্ম-২৪-এর আপত্তি  জুলাই-আগস্টের ত্যাগের পরও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ পাইনি: মির্জা ফখরুল নারীবিষয়ক সুপারিশগুলো কোরআন-হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: জামায়াত আমির ‘১৬ বছরের জঞ্জাল দূর না করে নির্বাচন দিলে সমস্যা সমাধান হবে না’  প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা সরকারি নিবন্ধন পেল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কলরব’ ‘সিরাহ মিউজিয়াম’ চালু করছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী মহাসমাবেশ সফল করতে যেসব কর্মসূচি নিয়েছে হেফাজত নারী সংস্কার কমিশন ও প্রস্তাবনা বাতিলের দাবি খেলাফত মজলিসের

স্বামী নিখোঁজের পর অন্যত্র বিবাহের হুকুম কী?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি মেরাজ তাহসীন।।

প্রশ্ন: মেয়েটির স্বামী হারিয়ে গেল। ৫ বছর অপেক্ষা করে অন্য এক ছেলেকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করল। মেয়েটি এখন গর্ভবতী। ঠিক এই মূহুর্তে পূর্ব স্বামী ফিরে এল। এখন কী করার? ইসলামী শরিয়তে এর সমাধান কি?

উত্তর: কোনো মেয়ের স্বামি নিখোঁজ হয়ে গেলে, উক্ত স্বামী থেকে তার বিচ্ছেদ ঘটানোর শরিয়তসম্মত পদ্ধতি হলো, প্রথমে দেখতে হবে উক্ত মেয়েকে তালাকের অধিকার দেওয়া হয়েছে কিনা৷ যদি দেওয়া থাকে, তাহলে মেয়ে নিজের উপর নিজেই তালাক গ্রহন করবে৷ অতপর ইদ্দত পালনের পর অন্যত্রে বিবাহ বসবে৷ আর যদি তালাকের অধিকার দেওয়া না থাকে, তাহলে মুসলিম বিচারকের নিকট নিজ সমস্যার কথা উল্লেখ করে মামলা দায়ের করবে৷ যদি এ রকম বিচারক না পাওয়া যায়, তাহলে মুসলিম পঞ্চায়েতে বা ওলামায়ের কেরামের নিকট সমস্যা পেশ করবে৷ এবং তাদের নিকট বিবাহ বন্ধন ও নিখোঁজের সাক্ষী প্রমান পেশ করবে৷

অতপর তারা স্বামীর তল্লাশি নিবে৷ তল্লাশির পর যখন প্রমানিত হবে প্রকৃত অর্থেই তার স্বামী নিখোঁজ৷ বিচারক বা ওলামায়ে কেরাম নিখোঁজ স্বামীর স্ত্রীকে চার বছর অপেক্ষা করার জন্য আদেশ দিবে৷ চার বছর পুর্ন হলে মেয়ে বিচারক বা ওলামায়ে কেরামকে জানাবে৷ অতপর তারা তার স্বামীকে মৃত সাব্যস্ত করে উক্ত স্ত্রীকে মৃত স্বামীর ইদ্দত চার মাস দশদিন পালনের আদেশ দিবে৷ ইদ্দত পালনের পর এ মহিলা অন্যত্র বিবাহ বসতে পারবে৷

অবশ্য, মেয়েটির জন্য যদি চার বছর অপেক্ষা করা কোনোক্রমেই সম্ভবপর না হয় ৷ যেমন তার খোরপোষের ব্যবস্থা না থাকা, বা অন্যত্রে বিবাহ না হলে কুকর্মে লিপ্ত হওয়া প্রবল আশংকা থাকা ৷ তাহলে বিচারক বা ওলামায়ে কেরাম মেয়েটিকে চার বছরের পরিবর্তে এক বছর অপেক্ষা করার নির্দেশ দিবে ৷ অতপর এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর মেয়েটি বিচারক দ্বারা বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণা করিয়ে নিবে ৷ এবং তালাকপ্রাপ্তা মেয়ের ইদ্দত,' তিন ঋতস্রাব' পালনের পর অন্যত্রে বিবাহ বসতে পারবে৷ ইমদাদুল মুফতিয়ীন, পৃ: ৫৫৮-৫৯; আল হিলাতুন নাজেযা, পৃ: ৬৯৷

অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি স্ত্রী তালাকের অধিকার প্রাপ্ত হয়ে প্রথম স্বামী থেকে তালাক গ্রহন করে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহন করে থাকে, তাহলে তাদের দ্বিতীয় বিবাহ বহাল থাকবে৷ আর যদি তালাকের অধিকারপ্রাপ্ত না হয়ে থাকে, তাহলে শরিয়তসম্মত উল্লেখিত পদ্ধতি অনুযায়ী বিচ্ছেদ হওয়ার পর যদি দ্বিতীয় বিবাহ হয়, অতপর স্বামী ফিরে আসলে, হানাফি সহিহ মতানুযায়ি উক্ত স্ত্রীর প্রথম স্বামীর স্ত্রী হিসেবে বহাল থাকবে৷

এবং দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বিবাহ বাতিল হয়ে যাবে৷ আর যদি শরিয়তসম্মত পন্থায় বিচ্ছেদ না ঘটিয়ে অন্যত্রে বিবাহ বসে থাকে৷ তাহলে সর্বসম্মতিক্রমে উক্ত স্ত্রী প্রথম স্বামির স্ত্রী হিসেব বহাল থাকবে৷ সর্বাবস্তায় প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শিবহে নিকাহ হওয়ার কারণে গর্ভের বাচ্চাটির নসব দ্বিতীয় স্বামি থেকে হবে৷ ইমামদুল মুফতিয়ীন, পৃ: ৫৫৮; আল হিলাতু নাজেযা, পৃ: ৮৭-৮৮৷

উত্তর প্রদানে- মুফতি মেরাজ তাহসীন, মুফতি: জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া৷

-এটি


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ