শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ইসলাম সংখ্যাধিক্যের ওপর আস্থা রাখে না

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রিদওয়ান হাসান ।।

ফাতহে মক্কার পর হাওয়াজিন গোত্র মক্কা থেকে তায়েফ পর্যন্ত বিস্তৃত তার শাখা গোত্রগুলোরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে একত্রিত করে।

৪ হাজার সৈন্যবাহিনীর পাশাপাশি সেনানায়ক মালিক বিন আউফ পূর্ণশক্তির সাথে সমরযুদ্ধে তাদের অবিচল রাখার এই কৌশল অবলম্বন করে যে, যুদ্ধক্ষেত্রে সবার পরিবার-পরিজনও উপস্থিত থাকবে। প্রত্যেকে নিজেদের সহায়-সম্পত্তিও সাথে নিয়ে আসবে।

উদ্দেশ্য হল, কেউ যেন পরিবার-পরিজন ও সহায়-সম্পদের টানে রণক্ষেত্র ত্যাগ না করে। পরিবার-পরিজনসহ তাদের মোট সংখ্যা ছিল ২৪ থেকে ২৮ হাজার।

অন্যদিকে মুসলমানদের সৈন্য সংখ্যা ছিল ১২ থিকা ১৪ হাজার। তাদের মধ্যে কয়েকশ ছিল নওমুসলিম। সংখ্যার আধিক্য দেখে কোনো কোনো মুসলিম সেনা উৎসাহের আতিশয্যে এই দাবি করে বসেন যে, আজ আমাদের জয় অনিবার্য, পরাজয় অসম্ভব।

কিন্তু এই অহংকারী মনোভাব রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই অপছন্দ করেন। তাই আল্লাহর হুকুমে মুসলমানরা প্রথমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ৮০ থেকা ১০০ জন সাহাবি ছাড়া সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তারপর রাসুলের দৃঢ়তা, সাহসিকতা ও আল্লাহর গায়েবি সাহায্যে মুসলমানরা শেষপর্যন্ত চূড়ান্ত জয়লাভ করে।

এখান থেকে শিক্ষার বিষয় হল, প্রথমত, মুসলমানদের কোনো অবস্থায়ই শক্তি সামর্থ্য ও সংখ্যাধিক্যের ওপর আত্মপ্রসাদ করা উচিত নয়। সম্পূর্ণ নিঃস্ব অবস্থায় যেমন তাদের দৃষ্টি আল্লাহর সাহায্যের প্রতি নিবদ্ধ থাকে, তেমনি সব শক্তি সামর্থ্য থাকাবস্থায়ও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে হবে।

দ্বিতীয়ত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুনাইন গমনকালে ‘খাইফে বনি কেনানা’ নামক স্থান সম্পর্কে বলেছিলেন, এখানে মক্কার কুরাইশরা মুসলমানদের একঘরে করে রাখার প্রস্তাবে স্বাক্ষর করছিল। তাই আগামীকাল তোমরা এখানেই অবস্থান করবে। এতে বিশেষ হেদায়েত হল, শক্তি সামর্থ্য হয়ে গেলেও বিগত বিপদের কথা ভুলে না যাওয়া, বরং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা উচিত।

তৃতীয়ত, যুদ্ধের শেষপর্যায়ে কাফেররা একটা দুর্গে আশ্রয় নিয়ে মুসলমানদের দিকে তীর নিক্ষেপ করতেছিল। এর জবাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জন্য হেদায়েতের দোয়া করেন। এর দ্বারা শিক্ষা হল, ইসলামের যুদ্ধবিগ্রহের উদ্দেশ্য শত্রুদের পরাভূত করা নয়, বরং উদ্দেশ্য হল তাদের হেদায়েতের পথে নিয়ে আসা।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফেরদের সাথে এই আচরণ করেছেন। আর আমরা প্রায় সমগোত্রীয় লোকদের সাথেও এই আচরণ করতে পারছি না।

সত্যনিষ্ঠরা কখনো সংখ্যা নিয়া অহংকার করবে না। তারা সব সময় স্মরণ রাখবে অতীতের বিপর্যস্তের কথা! শক্তি সামর্থ্য আছে বলে  'শেকড়' ভুলে যাওয়া বেহদ নাদানি।

দেখুন, সংখ্যা নিয়া অহংকারের কারণেই কিন্তু হুনাইনের যুদ্ধে মুসলমানদের প্রথমে পরাজয়তা আসছিল। আমার মনে হয়, সেদিন রাসুল না থাকলে হুনাইনের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয় বরণ করতে হত। কারণ, ইসলাম সংখ্যাধিক্যের ওপর আস্থা রাখে না, আস্থা রাখে মানসম্মতার ওপর।

মনে রাখতে হবে, হকপন্থীদের উদ্দেশ্য বাতিলদের পরাভূত করা নয়, বরং তাদের হেদায়েতের পথে নিয়ে আসা। আল্লাহ আমাদের তওফিক দান করুন।

(লেখকের ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেওয়া)

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ