মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫


লোকমুখে প্রচলিত ৩টি জাল হাদিস

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: লোকমুখে প্রচলিত হাজার হাজার জাল হাদিসকে আজকাল আমরা ধর্মের অংশ বলে মানা শুরু করে দিয়েছি। এই জাল হাদিসগুলো যে ইসলাম সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই এমন মানুষরাই শুধু প্রচার করে যাচ্ছে তা নয়, এমনকি কিছু মসজিদের অপ্রাপ্ত প্রশিক্ষণ নেওয়া ইমাম, বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে আসা কতিপয় “আলেমকেও” সেই হাদিসগুলোর সত্যতা যাচাই না করে ব্যপক হারে প্রচার করে যাচ্ছেন। এরকম বহুল প্রচলিত কয়েকটি জাল হাদিসের মধ্য থেকে ৩ টি হাদিস তুলে ধরা হলো-

১. জ্ঞান-সাধকের দোয়াতের কালি শহীদের রক্তের চেয়ে মূল্যবান

‘‘জ্ঞান-সাধকের দোয়াতের কালি শহীদের রক্তের চেয়ে মূল্যবান’’ এ কথাটি হাদীস হিসেবে জনশ্রুতি থাকলেও হাদীস বিশারদগণের নির্ভরযোগ্য মতানুসারে এটি হাদীস নয়; বরং পরবর্তী কারো বাণী। ইমাম সাখাবী রাহ. ‘আল মাকাসিদুল হাসানাতে’ ( পৃ. ৪৪২, বর্ণনা: ১০০৫ ) এটিকে হাসান বসরী রাহ.-এর বাণী বলে উল্লেখ করেছেন।

শাওকানী রাহ.,যারকাশী রাহ.,তাহের পাটনী রাহ.-সহ আরো অনেক হাদীস বিশারদ এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।   সুতরাং এটিকে হাদীস হিসেবে বলা উচিত নয়।

২. শয়তান ঈদের দিন রোজা রাখে

কিছু মানুষের মুখে এটিকে হাদীস হিসেবে বলতে শোনা যায়। কিন্তু এটা কোনো  হাদীসও নয়, কোনো হাদীসের ভাষ্যও নয়। ঈদের দিন রোযা রাখা নিষিদ্ধ সুতরাং ঈদের দিন রোজা রাখা একটি শয়তানী কাজ। সম্ভবত এখান থেকেই কেউ কেউ বলেছে, ঈদের দিন শয়তান রোজা রাখে। আর পরবর্তীতে কেউ সেটাকে হাদীস হিসেবে বর্ণনা করেছে।

৩.আল্লাহর রহমতের নজর

লোকমুখে প্রসিদ্ধ, ‘আল্লাহ কোনো বান্দার দিকে ১০ বার রহমতের নজরে তাকালে সে নিয়মিত জামাতে নামাজ পড়তেপারে। আর ৪০ বার তাকালে হজ্ব করতে পারে। আর ৭০ বার তাকালে আল্লাহর রাস্তায় বের হতে পারে।’ এটি হাদীস নয়।আল্লাহর রহমত ও তাওফিক না হলে বান্দা কোনো ভালো কাজই করতে পারে না।

কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে আল্লাহ এতবার কারোপ্রতি রহমতের দৃষ্টি দিলে সে অমুক আমল করতে পারে, এতবার হলে অমুক ... ইত্যাদি এ ধরনের কোনো  রেওয়ায়েতপাওয়া যায় না।  সুতরাং তা বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

তথ্যসূত্র : (দেখুন: আল ফাওয়াইদুল মাজমূআ, খ. ১ পৃ. ২৮৭, বর্ণনা: ৫৩; আললাআলিল মানছূরাহ,  পৃ. ১০১, বর্ণনা: ১০; আল আসারুল মারফূআ ২০৭; কাশফুল খাফা, খ.২ পৃ.২০০; তাযকিরাতুল মাওযূআত খ. ২ পৃ. ৩৬৯; মিযানুল ইতিদাল খ.৩ পৃ. ৪৯৮,আল-কাউসার।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর