বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


বাবরি মসজিদের নতুন জমি গ্রহণে ভারতে মুসলিমদের বৈঠক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ভারতের বহু প্রতীক্ষিত অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ও রাম মন্দির নিয়ে করা মামলার রায় এরই মধ্যে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ঘোষণা করা হয়েছে।

বাবরি মসজিদের বিরোধপূর্ণ জমি রামজন্মভূমি ট্রাস্টকে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। সেক্ষেত্রে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণে আলাদা বিকল্প কোনো জমি বরাদ্দের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

গত শনিবার (৯ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক এই রায় ঘোষণা করা হয়। এতে অযোধ্যার বিতর্কিত জমি যাবে রাম মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে। আর ৫ একর জমি পাবে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যর যৌথ বেঞ্চ এদিন রায় প্রদান করেন। যেখানে প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং এস আব্দুল নাজির। খবর ‘এনডিটিভির’।

এ দিকে বিতর্কিত এই মামলাটির রায় ঘোষণার পর বিষয়টি নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এতে এক পক্ষ আদালত যে ৫ একর জমির প্রস্তাব দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করলেও অপর পক্ষ বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনার কথা জানিয়েছে। যা নিয়ে আগামী ২৬ নভেম্বর এক বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করা হবে।

দেশটির উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ ফারুকির মতে, অযোধ্যা মামলার রায়ের বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত থেকে যে রায় এসেছে তাকে সবাই সম্মান করছে। তাই এক্ষেত্রে কোনো রিভিউ আবেদন জানানো হবে না।

যদিও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো সরকারের কাছে থেকে পাঁচ একর জমি গ্রহণ নিয়ে এবার নতুন করে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা।

কেননা গত রবিবার (১০ নভেম্বর) সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া জমিতে আদৌ কোনো মসজিদ তৈরি হবে কি না, তা তারা ভেবে দেখবে।

সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান জাফর ফারুকি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আগামী ২৬ নভেম্বর বোর্ডের সাধারণ সভায় এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

মূলত সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে আমরা মসজিদ তৈরির জন্য বরাদ্দকৃত পাঁচ একর জমি নেব কি না। কেননা বিষয়টি নিয়ে অনেকের মধ্যে এখনো দ্বিমত রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে ইতিবাচক কথোপকথনের মাধ্যমেই সকল নেতিবাচক ভাবনা দূর করা সম্ভব। যদিও প্রথমে ঠিক ছিল, বৈঠকটি হবে আগামী ১৩ নভেম্বর। তবে পরে তা স্থগিত করে নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়। এখন সিদ্ধান্ত হয়েছে পরবর্তী ২৬ তারিখ হবে এই বৈঠক।”

যদিও তিনি এ বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় থাকতে চান না। তবে নিজের স্পষ্ট মতামত তুলে ধরতে আগ্রহী তিনি।

তবে শুধু জমি গ্রহণই নয়, সেখানে শুধু মসজিদই হবে কি না, তা নিয়েও ভিন্ন মতামত রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের সদস্যদের। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, অনেকেই চান, সুপ্রিম নির্দেশে জমি নেওয়া হোক।

আর সেখানে মসজিদের পাশাপাশি তৈরি হোক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। পুরোটাই ঠিক করা হবে ২৬ নভেম্বরের বৈঠকে। আর যদি জমি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, সেক্ষেত্রে তা কীভাবে কোন পরিস্থিতিতে নেওয়া হবে, সেটাও ঠিক করা হবে বলে জানান ফারুকি।

অপর দিকে আদালতের রায়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন।

ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের বদলে অন্যত্র মসজিদ নির্মাণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট যে ৫ একর জমির প্রস্তাব দিয়েছে এরই মধ্যে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন দলটির নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি এমপি। তিনি বলেছেন, ‘এসব দানের কোনো জমি মুসলমানদের প্রয়োজন নেই। আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি।’

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ