বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ভারতের ঐতিহাসিক মক্কা মসজিদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ভারতের বৃহৎ ও প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম ঐতিহাসিক মক্কা মসজিদ। এ মসজিদটি ভারতে অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদ জেলায় অবস্থিত। মসজিদটি পুরাতন হায়দ্রাবাদ শহরের একটি অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা, যার অতি সন্নিকটে ঐতিহ্যবাহী চৌমহল্লা, লাদ বাজার ও চারমিনার অবস্থিত।

জানা যায়, মোহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ, যিনি কুতব শাহী সাম্রাজ্যের পঞ্চম শাসক ছিলেন, তিনি এই মসজিদ স্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

মসজিদটির নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ইট তৈরী করা হয় সৌদি আরবের মক্কা থেকে আনা মাটি থেকে, যা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য পবিত্রতম স্থান। তাই এই মসজিদের নামকরণ ‘মক্কা মসজিদ’ করা হয়। এই মসজিদটি শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত এবং পুরো শহরের পরিকল্পনাকারী ছিলেন মোহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ।

মক্কা মসজিদটি ‘মোহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ’ শাসনামলে তৈরী করা হয়। যিনি গোলকন্দা (বর্তমানে হায়দ্রাবাদ) এর ৫ম শাসক ছিলেন।

মসজিদটির সম্মুখের খিলানগুলোর নক্সাগুলো এক একটি গ্রানাইটের টুকরা দ্বারা নির্মিত, যা তৈরী করতে পাচ বছর সময় অতিবাহিত হয়। এই মসজিদটি তৈরীতে ৫০০০ শ্রমিক অংশ নেয়। ‘মোহাম্মদ কুলি কুতুব শাহ’ ব্যক্তিগতভাবে এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে ‘মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেব’ হায়দ্রাবাদ জয়ের পর এই মসজিদের নির্মাণকাজ সমাপ্ত করেন।

মসজিদের প্রধান হলটি দৈর্ঘ্য ১৮০ ফুট, প্রস্থ ২২০ ফুট এবং উচ্চতা ৭৫ ফুট। এই হলে একসাথে ১০,০০০ মুসল্লী নামাজ যাদায় করতে পারে। পনেরটি খিলান উপর প্রধান হলের ছাদটিকে সাপোর্ট দেয়।

এই পনেরটি খিলান তিন সারিতে পাচটি করে সাজানো। অন্যদিকের একটি মেহরারবের সাথে সংযুক্ত। মসজিদের প্রধান স্থাপনা দুইটি বিশাল অষ্টাভূজাকৃতির কলাম দ্বারা সংগঠিত।

যার প্রত্যেকটি তৈরী করা হয় একটিমাত্র গ্রানাইটের টুকরা দিয়ে। এই মসজিদটির সাথে চারমিনার ও গোলকন্দা দুর্গের সাদৃশ্য খুজে পাওয়া যায়। মসজিদের মূল ভবনের ছাদের চারদেয়াল গ্রানাইট ব্লক দিয়ে বহিরাবরন দেওয়া।

মসজিদ এলাকায় প্রবেশ দরজায়, অষতাভুজকৃত, কোনাকুনি আকৃতির দালান আছে যেখানে শাসক ‘আসাফ জহি’ মার্বেল পাথরের আবরণকৃত কবর আছে। এই স্থাপনাটি তৈরী করা হয় আসাফ জহির শাসনামলে। এই ভবনে নিজাম ও তার পরিবারের সদস্যদের মাজার বিদ্যমান।

মক্কা মসজিদটি একটি তালিকাভুক্ত ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। যাহোক রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে এবং দুষনের কারণ এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার অনেক অংশ নষ্ট হয়ে যায় এবং ভেঙে যায়। ১৯৯৫ সালে এই স্থানে রাসায়নিক বিক্রিয়া সংগঠিত হয়।

তাই ভবিষ্যতে এই স্থাপনাটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা জন্য অন্ধ্র প্রদেশ সরকার ২০১১ সালের আগষ্ট থেকে যানবাহন্মুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে।

২০০৭ সালের ১৮ মে জুমার নামাজের সময় এই মসজিদের অভ্যন্তরে বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে সন্ত্রাসী হামলা ঘটে যাতে কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়। সূত্র: উইকিপিডিয়া

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ