শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


হজ-পরবর্তী জীবন কিভাবে কাটাবেন হাজিগণ: শায়খুল হাদিস ড. মুশতাক আহমদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শেষ হয়েছে এ বছরের পবিত্র হজের যাবতীয় ইবাদাত। হাজিগণ ফিরতে শুরু করেছেন নিজ নিজ দেশে। পবিত্র স্থানের পরশে সকলের অন্তরে জান্নাতি আবেশ। অবশিষ্ট জীবন গুনাহ মুক্ত থাকাই যেন তাদের লক্ষ্য। পবিত্র হজ থেকে আহরিত আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে পেরে প্রভুর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেছেন হাজিগণ। বাকি জীবনটা কাটাতে চান শুদ্ধতার আবেশে।


‘কেমন হতে পারে একজন হাজির হজ-পরবর্তী জীবন’ এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সম্মানিত উপ-পরিচালক, পীরে কামেল শায়খুল হাদিস ড. মুশতাক আহমদের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আওয়ার ইসলামের বিশেষ প্রতিবেদক সুফিয়ান ফারাবী

হজকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করেন। হজের গুরুত্ব কেমন, হজ জিনিসটা কী?

সংক্ষেপে হজ সম্পর্কে আমরা যা বুঝি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম এরশাদ করেছেন (আল হাজ্জু ইয়াহদিমু মা কান কাবলাহূ) হজ মানুষের আগের সমস্ত গুনাহ খতম করে দেয়। হজের উসিলায় আল্লাহ পাক বান্দার সগীরা-কবিরা এবং যত রকমের ভুল-ত্রুটি আছে, সব ক্ষমা করে দেন।

এতটা ক্ষমা করেন যেন সে এইমাত্র মায়ের উদর থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছেন। পবিত্র হজের কারণে মানুষ এরূপ নিষ্পাপ হয়ে যায়। সংক্ষেপে বলতে পারি- হজ এমন একটি ইবাদত যা বান্দার সকল প্রকার গুনাহ অন্যায় ভুল-ত্রুটি ধুয়ে-মুছে সাফ করে দেয়। এ হল হজের একটি পরিচয়।

হজের আরেকটি পরিচয় হলো- এর মাধ্যমে বান্দা রূহানিয়্যাতের পথে উর্ধারোহনের সর্বোচ্চ স্তর ‘মাকামে তাদাল্লি’ লাভ করে। পবিত্র কুরআনের বানী ‘ছুম্মা দানা ফাতাদাল্লা ফাকানা কাবা কাউসাইনে আও আদনা’ থেকে উলামায়ে আহলে বাতিন ইশারা পেয়ে থাকেন।

কথাটির ব্যাখ্যা হল; এখানে মোট পাঁচটি স্তর আছে। এক. ঈমান, দুই. নামাজ, তিন. যাকাত, চার. রোজা, পাঁচ. হজ। স্তরগুলো ক্রমান্বয়ে উপরের দিকে সাজানো। ঈমানের দ্বারা ব্যক্তি আল্লাহ পাকের সাথে পরিচিত হয়।

তখন আল্লাহ পাকের সঙ্গে যে নেসবত হাসিল করে, সেটাকে বলে মাকামে “তাআরুফ”। তারপর হল দৈনন্দিনের নামাজ। নামাজ দ্বারা ব্যক্তি পরিচিতি পর্ব থেকে অগ্রসর হয়ে পারষ্পরিক প্রগাড় সম্পর্কের দিকে উন্নতি লাভ করে। এই নিসবতকে বলা হয় মাকামে “তাআল্লুক”।

তারপর হল যাকাতের আমল। যাকাতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় পারষ্পরিক সম্পর্কের শুদ্ধতা। কেননা হাদীসে পাকে ভাষ্য অনুসারে মুনাফিক ধরা পড়ে দুই জায়গায়। এক হল যাকাতের ক্ষেত্রে যেখানে ধরা পড়েছিল কারুন। আরেক হল জিহাদের ক্ষেত্রে।

যেখানে ধরা পড়েছিল আবদুল্লাহ ইবনে উবাই। মোটকথা যাকাতের আমল হল ঈমান আমলের ক্ষেত্রে ব্যক্তির একনিষ্টতার পরিচায়ক। আর এই যাকাত দ্বারা ব্যক্তির সাথে আল্লাহর যে সম্পর্ক তৈরি হয়- তাকে বলা হয় মাকামে “তাখাল্লুস”। এরপর হল রোজা।

রোজার দ্বারা ব্যক্তি মহান আল্লাহর চরিত্রে নিজকে গড়ে তোলে। রোজা ব্যক্তিকে আল্লাহর অতি সান্নিধ্যে নিয়ে যায়। তাই এই রোজার দ্বারা আল্লাহর সাথে যে সম্পর্ক তৈরি হয়, তাকে বলা হয় মাকামে “তাকাররুব”। আর সবশেষে ও সর্বোচ্ছে যা আছে তা হল হজ।

হজ হল এত দিনের অর্জিত সকল নিসবত থেকে প্রাপ্ত আনওয়ারাতের শক্তি ও সামর্থ নিয়ে মহান প্রভূর অতি সান্নিধ্যে পাগলের মত ‘লাব্বায়েক’ চীৎকার পূর্বক গমন করে যেন তাঁর বাড়ি ঘর, তাঁর রক্ষিত ‘আয়াতে বায়্যিনাত’ প্রদক্ষিণ করা; তাঁর দীদারের অমৃত সুধা পানের আকুতি প্রদর্শন করে অন্তত দুধের স্বাদ ঘোলে মিটানোর চেষ্টা চালানো। এ মহান আমলের দ্বারা ব্যক্তির কলবে যেই উচ্চতর মাকাম অর্জিত হয় তাকে বলা হয় মাকামে “তাদাল্লি”।

মানুষ পবিত্র হজের দ্বারা মাকামে তাদাল্লী অর্জন করে রূহানী ভাবে। আর এ মাকাম আমাদের প্রিয়নবী হাবীবে কিবরিয়া মাহবূবে দোআলম আকা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জয় করেছিলেন স্বশরীরে প্রত্যক্ষ ভাবে সাতাইশ বছরের সময় নিয়ে পবিত্র মেরাজ রজনীতে।

সুতরাং আমরা হজের মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পেলাম। এক- বান্দার সমস্ত গুনাহ ঝরে পড়ে। দুই- বান্দার মাকামে দাদাল্লি অর্জিত হয়। আর হজের দ্বারাই বান্দা আল্লাহ পাকের সাথে সর্ব উচ্চ ও সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে নেয়।

হজ কখন কবুল করা হয়?

হজের আমল সম্পাদনের জন্য সময় দিন ক্ষণ নির্ধারিত আছে কিন্তু হজ কখন কবুল করা হয় তার জন্য কোন সময় নির্ধারিত নেই। আমাদেরকে দুটি বিষয় জানতে হবে- এক. কোন আমল সহিহ হওয়া, অন্যটি হল. আমলটি কবুল হওয়া। দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন জিনিস।

কখনো এমনও হতে পারে, বান্দার আমল সহিহ হয়েছে কিন্তু কবুল হয়নি। আমলটি সহীহ হলে তা কবুলও হতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কোন আমল সহি’র পর্যায়ে পৌঁছানো কঠিন হলেও তা অসম্ভব নয়। তবে, আমলটি আল্লাহ পাকের কাছে কবুল করানো কঠিন।

বেশ কঠিন। সহীহ হওয়ার অর্থ হলো- দায়মুক্তি। আমল সহিহ হয়েছে মানে তাকে এর আদায় অনাদায় বিষয়ে দায়ী করা হবে না, বাস এতটুকুই।

কবুল হওয়ার স্তর সহিহ হওয়ার স্তর থেকে অনেক উপরে। সহিহ হলেই কবুল হয়ে যায় না। কারো হজ কবুল হয় এহরাম বাধার সঙ্গে।

কারো হজের আনুষঙ্গিক বিষয়াদি পালনের সময়, কারো মিনায়, কারো আরাফাতে, কারো মুযদালফায়, কারো জামারাতে, কারো তাওয়াফে, কারো সাঈর মধ্যে, কারো মক্কা মুকাররমায়, কারো মদীনা মুনাওয়ারায়। কারো হজ্জ থেকে ফেরার পথে, কারো বাড়ী পৌঁছার পর, কারো আরো পরে, কারো হয়ত মওতের পূর্বক্ষণে। আর এ জন্য হাজীকে তাঁর প্রতিটি আমলের পর দুয়া বলতে হয়, মাবূদ কবূল করে লও, সহজ করে দাও।

কিভাবে বুঝব হজ কবুল হয়েছে!

এ বিষয়ে বুযুর্গানে দ্বীন ওলামায়ে কেরাম বলেন, দুটি সিফত যখন বান্দার কলবের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত পাবে, তখন সে খেয়াল বা ধারণা করতে পারে যে, আশা করা যায় মহান প্রভু তার হজ কবুল করেছেন। সুনিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই।

কারণ কবুল হওয়ার বিষয়টি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। তারপরও বলা হয়েছে যে দুটি জিনিস আছে এগুলো যদি কেউ নিজ অন্তরে সুপ্রতিষ্ঠিত পায় তা হলে অনুমান করা যায় তার হজ কবুল হয়েছে।

১- দান সাদাকার বিষয়ে সম্পূর্ণ উদার হয়ে যাওয়া। মন থেকে দুনিয়ার প্রতি মোহ কেটে যাওয়া। দুনিয়ার কোন বিষয় আর তাকে আকৃষ্ট করে না। সর্বদা নির্মল নিষ্পাপতা ও উদারতার সাথে থাকাটাই তার কাছে আনন্দময় মনে হয়।

এ যেন কোন পরীক্ষার্থী সুউচ্চ রেজাল্ট করার পর বন্ধুদের জন্য উদার হস্তে উপঢৌকন বিতরনের মত। ব্যক্তি যেন হজের মহান মর্তবা লাভ করে এখন সেই মর্তবা লাভের শুকরিয়া হিসাবে দুনিয়ার সবকিছু মানুষকে বিলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।

২- বাইতুল্লার সমীপে উপস্থিত অবস্থায় তার মনের ভেতর যে অবস্থা বিরাজমান ছিল, যেই হাল ও উদ্দীপনা তাঁর তন-মনকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল সেই আহরিত স্বাধানুভতি মনের ভিতর স্থিত ও জাগ্রত রাখতে পারা। এটাকে বলা হয় মুরাকাবায়ে দায়েমা।

এজন্য অনেক উলামা লিখেছেন, যদি কারো এমন হয়- বাইতুল্লার সামনে মনের যে আবেগ ছিল, ভিতরে যে সকল সংকল্প তৈরি হয়েছিল, যেসব অঙ্গিকার আল্লাহ পাকের সাথে করা হয়েছিল; সেই আবেগ সেই দায়িত্ববোধ ও সেই ওয়াদা পালনের গুরুত্ব এখন আর মনের ভিতর নেই তাহলে বুঝতে হবে যে, হজ থেকে হাজীর অর্জিত সেই সব আনোয়ারাত তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গিয়েছে।

কারণ হলো- শরীয়তে কোন আমল কবুল হওয়ার পরে তা ক্যানসেল করে দেয়ার বিধানও আছে। হাদিসে রয়েছে, গীবত হিংসা হাসাদ ইত্যাদি বান্দার সকল ভালো আমলকে খেয়ে ফেলে, পুড়িয়ে দেয় বা নষ্ট করে ফেলে। হজের বিষয়টিও তদ্রুপ।

কোন সন্দেহ নেই, হতে পারে হজ যাত্রার দ্বারা বান্দা সে অনেক নেক আমল আহরণ করেছিল কিন্তু পরবর্তীতে অন্য কোন মুতাআদ্দী বদআমলের কারণে তার সব নেকআমল বিনষ্ট হয়ে গেছে। হজ থেকে সঞ্চিত সকল পুণ্য ও স্বভাব তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গিয়েছে।

এজন্য ওলামায়ে কেরাম বলেন, একজন হাজিকে আমৃত্যু খুব সাবধান এবং খুব সচেতন থাকতে হয় যেন কোন বদআমল তার হজকে বিনষ্ট না করে।

আর এর আরেকটি কারণ হল হাজির পেছনে স্থাপিত শয়তানের নানা চক্রান্ত। হজের কারণে হাজির উপর শয়তান খুব চটে যায়। সে নিজের সর্ব শক্তি ব্যয় করে হাজির অর্জিত সকল আনওয়ারাত ভুলণ্ঠিত করার মরন কামড় দিয়ে বসে থাকে।

এমতবস্থায় হাজি যদি গাফেল হয়ে থাকে তাহলে শয়তান তাকে কিভাবে ফুতুর করে ছাড়বে সেটা কি ভেবে দেখেছেন।

হজ পরবর্তী সময়ে একজন হাজী সাহেবের করণীয় কী?

হাদিসে বলা হয়েছে হাজিগণ মহান আল্লাহর সমীপে মানুষের প্রতিনিধি আবার মানুষের কাছে মহান আল্লাহর প্রতিনিধি। এটা তাদের জন্য স্পেশাল সম্মান। আল হুজ্জাজু ওয়াফদুল্লাহ।

বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য একটা উদাহরন বলবো- একজন ইমাম যখন মুসল্লীদেরকে নিয়ে নামাজে সুরা ফাতেহা তেলাওয়াত করেন তখন ইমাম সাহেব মুসল্লিদের প্রতিনিধি হয়ে আল্লাহর সমীপে কথা বলছেন। তারপর যখন তিনি সূরা ফাতেহার পরে অন্য কোন সুরা মিলান, তখন তিনি যেন আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার নিকট কথা বলছেন।

সুতরাং একই ব্যক্তি একবার মুসল্লিদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করলেন আল্লাহর দরবারে। এবং পরবর্তী সময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করলেন বান্দার নিকট। হুকামা উলামাগণ বিষয়টির এরূপভাবে বিশ্লেষণ করেছেন।

অনুরূপভাবে যখন হাজি সাহেব হজের জন্য রওয়ানা করেন, তখন তারা মানুষের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হয়ে তাদের যাত্রা শুরু করেন। গ্রামবাসী এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকে তিনি অটোমেটিক্যালি প্রতিনিধি বনে যান। আবার যখন হজ শেষ করে ফিরে আসেন, তখন তিনি যেন আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হয়ে মানুষের কাছে ফিরে আসেন।

আপনি দেখবেন যখন কোন মানুষ নামাজ আদায় করতে যায় তখন অন্যরা তাকে এগিয়ে দেয়ার কোন বিধান নেই। কেউ যখন যাকাত দিতে আসে তখন তাকেও এগিয়ে দেয়ার বিধান নেই।

কিন্তু যখন একজন হাজি সাহেব মক্কার দিকে রওনা করেন, তখন বিধান হলো অন্যরা তাকে এগিয়ে দিবে। আমাদের অতীতকালে যখন মানুষ জাহাজে করে হজে যেত, তখন আমরা দেখেছি পুরো গ্রামের মানুষজন হাজি সাহেবকে সেই স্টিমার পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসত।

আবার যখন তিনি ফিরে আসতেন তখন তাকে কত দূর থেকে স্বাগত জানিয়ে বরণ করতো। এ সবের কারণ যখন তিনি বায়তুল্লাহর দিকে রওনা করলেন তখন তো তিনি মানুষের প্রতিনিধি হয়ে আল্লাহর দরবারে হাজিরি দিতে যাচ্ছেন। তাই তাকে এগিয়ে দেয়ার যৌক্তিকতা চলে আসে। আবার তিনি যখন ফিরে আসলেন তখন তিনি মহান আল্লাহর প্রতিনিধি, তাই তাকে অনেক দূর থেকে অভ্যার্থনা জানানোর বিধান চলে আসল।

আজকাল হাজিদের সম্মানে আমাদের সেই আচরন সেভাবে চোখে পড়ে না। দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য।

সুতরাং একথা স্পষ্ট, একজন মানুষ যখন নিজেকে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে জ্ঞান করে আর তার মধ্যে সেই দায়বোধ বিদ্যমান থাকে তখন তার কথাবার্তা আমল আখলাক সবকিছু আল্লাহ তায়ালার প্রতিনিধির মতোই হয়ে যায়।

মহান আল্লাহর প্রকৃত প্রতিনিধি তো ছিলেন যুগে যুগে প্রেরিত নবীগণ। হাজিকে দেয়া হয়েছে সেই দায়িত্বেরই ছায়া বিশেষ কোন মাকাম। আর এ জন্য তাকে বলা হয়েছে ‘ওয়াফদুল্লাহ’। সুতরাং হজ পরবর্তী সময়ে একজন হাজি নিজের এ মর্যাদার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখা অত্যন্ত জরুরি।

আহলে বাতেন উলামা বলেন, হজে গমনকালে হাজির কপালের দিকে তাকিয়ে এবং হজ থেকে ফিরে আসার পর তার পায়ের দিকে তাকিয়ে মনে মনে যে দুয়া করা হয় আল্লাহ পাক সেই দুয়া দ্রুত কবুল করেন।

আমাদের এই ভারত উপমহাদেশেরই রেওয়াজ ছিল, হাজি যখন মক্কা মুকাররমার জন্য রওনা হতেন তখন জীবনের ছোট বড় সবকিছু চুকিয়ে, সমাধান করে যাত্র করতেন। যেন গোটা জীবনকে বিভক্ত করে ফেলা হত।

হজ পরবর্তী জীবন সে তো হবে ভিন্ন জীবন যা পূর্ববর্তী জীবনের ক্লেদাক্ততার কোন কিছুর সাথে সম্পর্কীত থাকবে না। আবার ফিরে আসার পরেও তাদের মাঝে এই অনুভূতি বিদ্যমান দেখা যেত। ফিরে এসে তারা আল্লাহর জন্য সম্পূর্ণ ভাবে নিবেদিত হয়ে থাকতেন। হয়ত দিনরাত মসজিদেই পড়ে থাকতেন।

আমাদেরকে আল্লাহ বারবার হজ করার তৌফিক দান করুক। হজে মাবরুর নসিব ফরমান। হজ পরবর্তী সময়ে আল্লাহর প্রতিনিধির মত বানিয়ে দিন।

গুনাহ মুক্ত থাকার তৌফিক দান করুন। সর্বাবস্থায় জিকিরের সাথে থাকার তৌফিক দান করুক। যারা হজ করিনি, তাদেরকে হজ করার তৌফিক দান করুক। যারা হজ করেছি তাদেরকে বারবার হজ করার তৌফিক দান করে। আমিন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ