সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৮ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে নতুন কর্মসূচি দিল এনসিপি নোয়াখালীতে দায়িত্বে অবহেলা করায় ১২শিক্ষককে অব্যাহতি   নারী কমিশনের প্রস্তাবনা, অসভ্যতা প্রসারের নীল নকশা: নেজামে ইসলাম জামায়াতের সঙ্গে মতভিন্নতা আছে, শত্রুতা নয়: মাওলানা ফজলুর রহমান মসজিদে নববীর ইমামকে মালদ্বীপে লালগালিচা অভ্যর্থনা মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করলে আমাদের জীবন আলোকিত হবে : ধর্ম উপদেষ্টা বর্তমানে ‘উলূমুল হাদিস’-এর প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশের মতো সম্প্রীতি আশপাশের দেশে খুঁজে পাবেন না: ধর্ম উপদেষ্টা ‘গাজাবাসীর পাশে দাঁড়ানো উম্মাহর আবশ্যিক দায়িত্ব’ নারী কমিশনের প্রস্তাবে পতিত স্বৈরতন্ত্রের সুযোগ: গাজী আতাউর

দুনিয়াতেই যিনি জান্নাতের খেজুর গাছের মালিক হয়েছেন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আনিকা তাহসিন সাইয়্যেদা

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় একটি আশ্চর্য হাদিসে বর্ণিত আছে। মদিনায় এক ইয়াতিম ছেলের একটি খেজুর বাগান ছিল। তার বাগানের সঙ্গে আবু লুবাবা নামে এক লোকেরও একটি খেজুর বাগান ছিল। ইয়াতিম ছেলেটি তার বাগানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের চিন্তা করল। যাতে প্রত্যেকের অংশ পৃথক হয়ে যায়।

সেই ইয়াতিম ছেলেটি নিজের বাগান বরাবর একটি প্রাচীর দিতে গিয়ে দেখল, প্রতিবেশীর একটি খেজুর গাছ সীমানার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে।

ছেলেটি তার প্রতিবেশীর কাছে গিয়ে সমস্যার কথা বলে সীমানার খেজুর গাছটি কিনতে চাইলো যাতে প্রাচীরটি সোজা হয়। কিন্তু প্রতিবেশী আবু লুবাবা কোনভাবেই রাজী হচ্ছিল না।

কোন উপায় না পেয়ে সেই ইয়াতিম ছেলেটি রাসুলুল্লাহ্ সা. এর কাছে গিয়ে পুরো ঘটনা বুঝিয়ে বললো। আল্লাহর রাসুল সা. ডেকে পাঠালেন আবু লুবাবাকে।

সে মসজিদে নববিতে আসলে নবি কারিম সা. সেই খেজুর গাছটি অর্থের বিনিময়ে হলেও ইয়াতিম ছেলেটিকে দিয়ে দিতে অনুরোধ করলেন।

আবু লুবাবা যথারীতি রাজী হলো না। রাসুলুল্লাহ্ সা. এক পর্যায়ে তাকে বললেন, তোমার ভাইকে ওই খেজুর গাছটি দিয়ে দাও। আমি তোমার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছের জিম্মাদার হব।

বিস্ময়কর ব্যপার হলো, আবু লুবাবা তারপরেও সেই খেজুর গাছ দিতে রাজী হলো না। রাসুলুল্লাহ্ সা. এক পর্যায়ে চুপ হয়ে গেলেন। এর চেয়ে বেশী তিনি সা.তাকে আর কী বলতে পারেন!

উপস্থিত সাহাবিদের মধ্যে সাবিত রা. ও ছিলেন। তিনি আবু দাহদাহ নামে পরিচিত ছিলেন। মদিনায় তাঁর খুব সুন্দর একটি বাগান ছিল।

প্রায় ৬০০ খেজুর গাছ ছাড়াও একটি মনোরম বাড়ি ও একটি পানির কুয়া ছিল সেখানে। মদিনার সব বড় ব্যবসায়ীদের কাছে আবু দাহদাহ রা. এর বাগানটি সুপরিচিত ছিল। তিনি স্বপরিবারে সেখানে বসবাসও করতেন।

আবু দাহদাহ রা. হঠাৎ রাসুলুল্লাহ্ সা. এর কাছে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহ্র রাসুল সা.! আমি যদি আবু লুবাবার কাছ থেকে ঐ খেজুর গাছটি কিনে এই ইয়াতিমকে দিয়ে দেই, তাহলে আমিও কি জান্নাতে একটি খেজুর গাছের মালিক হবো?

রাসুলুল্লাহ্ব সা. বললেন, হ্যাঁ, তোমার জন্যও জান্নাতে খেজুর গাছ থাকবে। আবু দাহদাহ রা. সাথে সাথে আবু লুবাবাকে বললেন, আপনি আমার সে সম্পূর্ণ বাগানটি গ্রহণ করে সে খেজুর গাছটি আমাকে দিয়ে দিন।

আবু লুবাবা দুনিয়াবী এ বিনিময় বিশ্বাস করতে পারছিল না! হুঁশ ফিরলেই সে বলল, হ্যাঁ আমি আপনার খেজুর গাছের বাগানটি গ্রহণ করলাম। বিনিময়ে আমার সেই খেজুর গাছটি আপনাকে দিয়ে দিলাম।

হযরত আবু দাহদাহ রা. সেই মূহুর্তেই খেজুর গাছটি ইয়াতীম ছেলেটিকে উপহার হিসাবে দিয়ে দিলেন। তারপর রাসুলুল্লাহ্ সা. এর দিকে তাকিয়ে বললেন, হে রাসুলুল্লাহ্ সা. ! এখন আমি কি জান্নাতে একটি খেজুর গাছের মালিক হলাম?

রাসুলুল্লাহ্ সা. বললেন, হে আবু দাহদাহ! তোমার জন্য জান্নাতে এখন বিশাল বিশাল খেজুরের বাগান অপেক্ষা করছে।

বর্ণনাকারী হজরত আনাস রা. বলেন, এ কথাটি রাসুলুল্লাহ্ সা. এক, দুই বা তিনবার বলেননি; বরং খুশী হয়ে বারবার বলেছেন।

শেষে আবু দাহদাহ রা. সেখান থেকে বের হয়ে সদ্য বিক্রি করে দেয়া সেই বাগানে ফিরে গেলেন। বাড়ির দরজায় এসে স্ত্রীকে ডাক দিয়ে বললেন, হে উম্মে দাহদাহ! বাচ্চাদেরকে নিয়ে এ বাগান থেকে বের হয়ে আসো। আমি দুনিয়ার এ বাগান বিক্রি করে দিয়েছি।

স্ত্রী বললেন, আপনি কার কাছে এটি বিক্রি করেছেন? কে কত দাম দিয়ে এটি কিনে নিয়েছে?

আবু দাহদাহ রা. বললেন, আমি জান্নাতে একটি খেজুর বাগানের বিনিময়ে তা বিক্রি করে দিয়েছি। তাঁর স্ত্রী বললেন, আল্লাহু আকবার! হে আবু দাহদাহ! আপনি অবশ্যই অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসা করেছেন।

(মুসনাদে আহমাদ-১২৫০৪। ইবনে হিব্বান-৭১৫৯। আস-সিলসিলা সাহিহাহ-২৯৬৪। মুস্তাদরাকে হাকিম-২১৯৪)

-এটি


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ