মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ ।। ৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ৯ রমজান ১৪৪৫


হাসপাতালে আল্লামা আরশাদ মাদানি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম: জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের প্রেসিডেন্ট, দারুল উলুম দেওবন্দের মুহাদ্দিস, রাবেতায়ে আলম আল ইসলামির অন্যতম সদস্য আল্লামা সাইয়্যেদ আরশাদ মাদানি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

ভারতের গাঙ্গুহি মাদরাসার মুহতামিম সাইয়্যেদ আরশাদ মাদানির ছেলে সাইয়্যেদ আজহার মাদানির বরাতে ঢাকা শাহাজানপুর মাহমুদিয়া মাদরাসার মুহতামিম মুফতি সুলতান আহমদ আওয়ার ইসলামকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্রমতে জানা যায়, আজ মঙ্গবাল আল্লামা সাইয়্যেদ আরশাদ মাদানি লিভার জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ভারতের রাজধানী দিল্লির মেট্রো ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।

সাইয়্যিদ আরশাদ মাদানি (জন্ম ১৯৪১) জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের প্রেসিডেন্ট। তার পিতার নাম শাইখুল ইসলাম হযরত মাওলানা সাইয়্যিদ হুসাইন আহমাদ মাদানি। ২০০৬ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাইয়্যিদ আরশাদ মাদানি তার বড় ভাই মাওলানা সাইয়্যিদ আস্আদ মাদানির পর জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।

মাত্র ৮ বছর বয়সে মাওলানা সাইয়্যিদ আরশাদ মাদানি গোটা কুরআন মুখস্ত করেন। তারপর দারুল উলুম দেওবন্দের নিয়ম অনুযায়ী তিনি পাঁচ বছর ফার্সি ভাষার ওপর পড়াশোনা করেন।

১৯৫৫ সালে তিনি আরবি পড়া শুরু করেন এবং ১৯৫৯ সালে দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন। ১৯৬৩ সালে তিনি দাওরায়ে হাদিস শেষ করেন।

তার শিক্ষকগণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন ক্বারী আসগার আলী, মাওলানা সৈয়দ ফখরুদ্দীন মুরাদাবাদী, মাওলানা ইজাজ আলী, আল্লামা মোহাম্মাদ ইব্রাহিম বলিয়াভী।

মাওলানা জলীল আহমেদ কিরানভি, মাওলানা আখতার হুসাইন দেওবন্দি এবং মাওলানা ওয়াহেদুজ্জামান কিরানভি প্রমুখ। এছাড়া তিনি সৌদি আরবের মদীনায় থাকাকালীন অনেক আরব বিদ্বানদের কাছে জ্ঞানচর্চা করেন।

আল্লামা আরশাদ মাদানি কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৬৫ সালে বিহার প্রদেশের প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া কাসিমিয়া গয়ায় শিক্ষক হিসাবে যোগদানের মাধ্যমে। ১৯৬৯ সালে দারুল উলূম দেওবন্দের শাইখুল হাদিস এবং তৎকালীন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি সায়্যিদ ফখরুদ্দীনের হুকুমে জামিয়া কাসিমিয়া মাদরাসা শাহী মুরাদাবাদে মুদাররিস পদে যোগদান করেন।

১৯৭১ সালে মাওলানা ফখরুদ্দীন তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পরিচালনার দক্ষতা দেখে শিক্ষা কমিটির কনভেনার এবং ১৯৭২ সালে সহকারী শিক্ষা সচিব হিসাবে নিয়োগ দেন। তখন মাওলানা ফখরুদ্দীন নিজেই শিক্ষা সচিব ছিলেন। ১৯৮২ সালে দারুল উলূম দেওবন্দের মজলিসে শুরার আহবানে তিনি মুহাদ্দিস পদে যোগদান করেন।

১৯৯৬-২০০৮ সাল পর্যন্ত দারুল উলূম দেওবন্দের শিক্ষা সচিব ছিলেন। তিনি তার দায়িত্ব পালনকালে হিফয বিভাগ, ক্বিরায়াত বিভাগও প্রথমিক আরবী বিভাগসমূহ অতুলনীয়ভাবে সফলতা লাভ করে। বর্তমানে তিরমিযি শরিফ অধ্যাপনায় নিয়োজিত আছেন। ২০১২ সালে রাবেতায়ে আলম আল ইসলামি এর সদস্য পদ লাভ করেন।

শিক্ষা জীবন শেষ করার পরপরই তিনি আধ্যাত্মিক সাধনা শুরু করেন। তার বড় ভাই সাইয়্যিদ আসআদ মাদানি এর নিকট বাইআত (অঙ্গীকারবদ্ধ) হয়ে তার প্রদর্শিত পথে পরিচালিত হতে শুরু করেন।

যেহেতু তার পিতা সাইয়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানির কাছ থেকে শৈশবে আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভ করেছেন, তাই অতি অল্প সময়ে তিনি স্বীয় লক্ষ্য অর্জন করেন।

তিনি দীর্ঘ ১৪ মাস সৌদি আরবের মদীনায় অবস্থান করে ইসলামী জ্ঞান লাভ করেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তার মুরিদ তথা আধ্যাত্মিক শিষ্য রয়েছে।

তিনি ভারতের বিভেদনীতির একজন কড়া সমালোচক ছিলেন। তার মতামত হলো এই বিভেদনীতির জন্য ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ হয়েছে। ভারতের অখন্ডতা রক্ষার জন্য তিনি সেকুলারিজম চালু করার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদী ভারতের সব মুসলিমের কাছে গ্রহণযোগ্য না।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ