আওয়ার ইসলাম: ঢাকার সাভার, ঠাকুরগাঁও ও টাঙ্গাইলের সখীপুরে তিন স্কুলছাত্রীকে কৌশলে তুলে নিয়ে আটকে রেখে বখাটেরা ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুজন দশম শ্রেণির ও একজন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
জানা যায়, সাভারে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে তুলে নিয়ে চারদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। ঠাকুরগাঁওয়ে দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয় দশম শ্রেণির ছাত্রীকে।
আর সখীপুরে ১০ শ্রেণির ছাত্রীকে এক মাস আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। তিনটি ঘটনাতেই মামলা হয়েছে। পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এক নারীসহ তিনজনকে।
এর মধ্যে সাভারের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পায়নি ছাত্রীর পরিবার। উল্টো আপস-মীমাংসা করতে প্রভাবশালীরা চাপ সৃষ্টি করছেন বলে ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ করেছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে ও মোবাইল ফোনে দশম শ্রেণির এক সংখ্যালঘু ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করত এক যুবক। গত ১১ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে বই দেওয়ার কথা বলে কৌশলে তাকে বাড়ির পাশে ডেকে নেয় ছেলেটি। পরে কয়েকজন মিলে মুখ চেপে ধরে খড়িঘরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তাকে।
এ ঘটনায় গত রবিবার বিকালে রুহিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রীর বাবা। এতে একজনের নাম উল্লেখ ও চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। রাতেই এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিকে রবিবার রাতে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ওই ছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
রুহিয়া থানার ওসি প্রদীপ কুমার বর্মণ বলেন, অন্য ধর্মের এক ছেলে ও বন্ধুসহ তিনজন পালাক্রমে ধর্ষণ করে বলে ওই ছাত্রী জানিয়েছে। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত চলার কারণে অপরাধীদের নাম গোপন রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাভার পৌরসভার নামা গেন্ডা এলাকার এক রিকশাচালক জানান, তার মেয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। গত ৭ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর বাসার সামনের দোকানে চিপস কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এ ব্যাপারে সাভার থানায় অভিযোগ করা হয়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর প্রতিবেশী মজিবরের বখাটে ছেলে বিল্লাল হোসেন নিখোঁজ রয়েছে বলে সবার নজরে আসে।
এর পর স্থানীয়রা ওই পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। ১১ জানয়ারি রাত ১২টার দিকে অচেতন অবস্থায় মেয়েকে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় বখাটেরা।
ওই কিশোরী জানায়, সোমবার সন্ধ্যার পর কথা আছে বলে তাকে দোকানের সামনে থেকে ডেকে নেয় বিল্লাল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেখানে অপেক্ষমাণ একটি মাইক্রোবাসে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয় অজ্ঞাত স্থানে। সেখানে একটি বাড়িতে আটকে রেখে বিল্লালসহ দুজন তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
সাভার মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক দুলাল রায় জানান, তিনি ঘটনা সরেজমিন তদন্ত করেছেন।
সাভার মডেল থানার ওসি আবদুল আউয়াল জানান, স্কুলছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের বিষয়টি তার জানা নেই। অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সখীপুর : উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের ধলীপাড়া গ্রামের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মজিবর নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। মজিবর প্রভাবশালী হওয়ায় ছাত্রীর পরিবার কাউকে কিছু বলতে সাহস পায়নি।
গত ২৪ ডিসেম্বর স্থানীয় বাজারে যাওয়ার সময় মজিবর রহমান কৌশলে ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে আটকে রেখে নিয়মিত ধর্ষণ এবং নানাভাবে নির্যাতন চালানোর অভিযোগে ওই ছাত্রীর মা ১৩ জানুয়ারি রাতে মামলা দায়ের করেন। এতে মজিবর রহমান ও তার স্ত্রী আমেনা বেগমসহ চারজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ রাতেই মজিবর ও আমেনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয় মজিবরকে। তবে এখনো ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমির হোসেন জানান, ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
আরআর