শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


নির্বাচনী কার্যক্রমে বর্জনীয় ১০ বিষয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জাস্টিস আল্লামা তাকি উসমানি
মুসলিম স্কলার ও পাস্তিানের সাবেক বিচারপতি

নির্বাচনী কর্মতৎপরতা, প্রচারণা ও হাঙ্গামা আমাদের সমাজে অসংখ্য অন্যায়-অপরাধের এমন প্লাবন নিয়ে আসে যার নিকষ-কালো আঁধারে সমগ্র পরিবেশ-প্রকৃতি অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়! এ তৎপরতা ও ঝামেলা শরিয়ত, আখলাক, ভদ্রতা ও মানবতার ভিত্তিমূলে ধারাবাহিকভাবে এমন চপেটাঘাত করে যার ফলে পুরো দেশ ও জাতি আলোড়িত হয়।

এসব অন্যায়-অপরাধ ও গুনাহের নিতান্ত পরিতাপজনক দিক হলো, অন্তরে এসব অপরাধ গুনাহ হবার অনুভব পর্যন্ত থাকে না এবং ক্ষমতা লাভের অন্ধ দৌড়ঝাঁপ সবকিছুকে বৈধ করে দেয়!

আর যেহেতু সমাজে এসব অন্যায় অপকর্ম কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই এতটা ব্যাপক হয়ে গিয়েছে তাই এখন কোনো ব্যক্তি এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ পর্যন্ত খোলে না। এ জন্য সেসব সুশীল এবং অভিজাত ব্যক্তিদের মনেও এসব অন্যায়-অকল্যাণকর বিষয় গুনাহ হবার খেয়াল পর্যন্ত আসে না, যারা জেনে বুঝে মন্দ কর্মে জড়াতে চান না।

এ জন্য আজ আমি এমন কিছু মন্দ ও অহিতকর বিষয় নিয়ে এই আগ্রহে আলোচনা করব যে, যেসব আল্লাহর বান্দা এগুলো হতে বাঁচতে চায় তারা যেন বাঁচতে পারে এবং অন্য লোকদের মনেও কমপক্ষে এতটুকু অনুভব সৃষ্টি ও উদয় হয় যে, এগুলো গুনাহ এবং অন্যায় কাজ।

এক. নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবার কারণে আমাদের সমাজে যে গুনাহ ও অন্যায়কর্ম বিস্তার লাভ করেছে সেগুলোর মৌল ভিত্তি হলো ক্ষমতার লিপ্সা এবং পদ লাভের অপ্রতিরোধ্য মোহ। এর বৈধতা অনুসন্ধান করার জন্য কোনো কোনো সময় দেশ ও জাতির কল্যাণকামনার নিষ্পাপ অভিব্যক্তি ব্যক্ত করা হয়।

অথচ রাষ্ট্র ক্ষমতা লাভ করার ব্যাপারে কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা হলো, এটা ফুলের কোনো তোড়া নয়, যা লাভ করার জন্য একে অন্যের চেয়ে অগ্রগামী হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। বরং এটা দুনিয়া ও আখেরাতের ওই জুয়াল যা নিজের স্কন্ধে রাখার পূর্বে মানুষের কম্পিত হওয়া উচিত এবং অত্যধিক অপারগ না হলে নিজেকে এই পরীক্ষায় না ফেলা উচিত।

এ কারণেই হযরত উমর রা. কে যখন তার স্থলাভিষিক্ত খলিফা হিসাবে নিজের সন্তান হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. এর নাম উল্লেখ করতে অনুরোধ করা হয় তখন তিনি এর একটি জবাব এও দিয়েছিলেন, ‘রাষ্ট্রক্ষমতার শৃঙ্খল খাত্তাব পরিবারের মধ্যে কেবল এক ব্যক্তির (হযরত উমর রা.) গলায়ই পরানো হয়েছে। আর এটাই যথেষ্ট। আমি আমার সন্তানের ঘাড়ে এই দায়ভার চাপিয়ে দিতে চাই না।

যদি কোনো ব্যক্তির অন্তরে এই গুরুভারের জিম্মাদারির যথার্থ অনুভব থাকে তা হলে নিঃসন্দেহে বৈধ উপায়-উপকরণের মাধ্যমে তার নেতৃত্বের শীর্ষ চূড়ায় আরোহণ দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা থেকেই হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। সে দায়িত্বও অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে।

আর এর পরিণামে কখনো সেসব অন্যায়-অপরাধ ও গোনাহ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠবে না যেগুলোর বিষাক্ত প্রভাব রাজনীতির ময়দানকে কলুষিত করে ফেলেছে।

কিন্তু ক্ষমতাকে যখন স্বার্থের বাহন ও পেশা বানানো হবে এবং বস্তুস্বার্থের উপায় হিসাবে নির্ধারণ করা হবে এবং একে লাভ করার জন্য তনুমনের সমস্ত শক্তি ব্যয় করা হবে তখন সেটা হবে ক্ষমতালাভের ওই লোভ যার জঠর থেকে কল্যাণ ও মঙ্গল বের হতে পারে না।

আর এর অপরিহার্য ভয়াবহ পরিণতি এই যে, তা অন্যায়, অপরাধ, ব্যক্তিস্বার্থ ও অপকর্মের জন্ম দিয়ে সমাজে অনিষ্ট ও বিপর্যয়ের প্রসার ঘটাবে!

দুই. অকল্যাণ ও বিপর্যয়ের একটি দিক এই যে, আমাদের নির্বাচনী প্রচারণায় এক প্রার্থী অন্য প্রার্থীর প্রতি দোষারোপ করে থাকে এবং একে অন্যের প্রতি অপবাদ আরোপ করাকে বৈধ মনে করে।

প্রার্থী তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে জয়মাল্য ছিনিয়ে আনার জন্য তার প্রতি কোনোরূপ যাচাই বাছাই এবং তদন্ত করা ছাড়াই অপবাদ আরোপ করাকে বৈধ মনে করে থাকে। বরং এটা রাজনৈতিক যুদ্ধের ওই অপরিহার্য অনুষঙ্গ যার ছাড়া রাজনৈতিক সফলতাকে অসম্ভব মনে করা হয়।

ইসলামের শিক্ষা হলো, কোনো ব্যক্তি যতবড় অপরাধীই হোক না কেন, কিন্তু তার প্রতি এমন দোষারোপ করা কখনোই জায়েয নয় যা সত্য বা মিথ্যা হওয়ার তদন্ত করা হয় নি। কিন্তু নির্বাচনী সভা-সমাবেশের এমন কোনো ভাষণ-বক্তৃতা সম্ভবত এমন নেই যার মধ্যে তদন্ত করা ছাড়াই দোষারোপ করা হয় না।

আর এমন দোষারোপ করা কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। আবার কতক সময় এই দোষারোপের ক্ষেত্রে এমন নিম্নমানের বাজারি শব্দ ব্যবহার করা হয় যা অপবাদের গণ্ডিকেও অতিক্রম করে ফেলে।

এক হাদিসে এসেছে, মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো মুসলমানের জান-মাল, ইজ্জত ও আব্রুকে বাইতুল্লাহর চেয়েও অধিক পবিত্র এবং নিষ্কলুষ বলে অভিহিত করেছেন। এর মর্ম এটাই, কোনো মুসলমানের জান, মাল এবং ইজ্জত ও আব্রুতে হামলা করা বাইতুল্লাহকে ধ্বংস করার চেয়েও গুরুতর অপরাধ!

কিন্তু নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় জোশের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ইজ্জতকে প্রতিনিয়ত দলিত মথিত করা হয়! আর পত্র-পত্রিকার পাতা থেকে নিয়ে নির্বাচনী সভা-সমাবেশ ও মিছিল মিটিং পর্যন্ত কোনো স্থান এমন থাকে না যা দোষারোপ ও কালিমা লেপনের কলঙ্কে কলঙ্কিত হয় না।

তিন. যেহেতু নির্বাচনের বিষয়টাই এমন হয়ে থাকে যে, কোনো প্রার্থীর পরিচয় এবং এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত জনসম্মুখে আনার প্রয়োজন দেখা দেয়; যাতে জনসাধারণকে ধোকা ও প্রতারণা থেকে বাঁচানো যায় তাই এর জন্য প্রথমে এ বিষয়টি জরুরি যে, যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো কথা বলা হবে না এবং দিয়ানতদারি ও ইনসাফের সঙ্গে সর্বক্ষেত্রে কাজ নেওয়া হবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে এ বিষয়টিও জরুরি যে, এই নাযুক প্রকৃতির কথা যথাসম্ভব কম এবং প্রয়োজনানুপাতেই বলা হবে। একে কেবল মজা নেওয়া বা সভার সৌন্দর্যের মাধ্যম বানানো হবে না।

অন্যথায় এটা যদি অপবাদ নাও হয় তা হলেও তা গীবতের ওই গুনাহের অন্তর্ভুক্ত যাকে মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আপন মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণের সমার্থক বলে অভিহিত করা হয়েছে।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. এর মজলিসে জনৈক ব্যক্তি হাজ্জাজ বিন ইউসুফের নিন্দা-মন্দ বর্ণনা করতে শুরু করে। হাজ্জাজের অত্যাচার ও নির্যাতনের বিষয়টি কারো অবিদিত ছিল না। কিন্তু এখানে যেহেতু তার মন্দ বলার সঠিক কোনো উদ্দেশ্য ছিল না তাই হযরত ইবনে উমর রা. বললেন, ‘এটা গিবত।

যদিও হাজ্জাজ বিন ইউসুফ বহু লোকের ওপর অত্যাচার করেছে, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, এখন প্রতিটি ব্যক্তির জন্য তার গিবত করা হালাল হয়ে গেছে।

স্মরণ রেখো, আল্লাহ তাআলা যদি নিরপরাধ ব্যক্তিদের রক্ত প্রবাহিত করার বিচার হাজ্জাজকে করেন, তাহলে তার এই অকারণ গিবত করার বিচার করতেও তিনি ভুলবেন না।’

চার. অন্যদের প্রতি দোষারোপ করা এবং তাদের নিন্দা-মন্দ বর্ণনা করা ছাড়াও নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য একে জরুরি মনে করা হয় যে, প্রার্থী নিজেই নিজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে যায় এবং উন্নয়নের অলীক ফিরিস্তি জনসম্মুখে দাঁড় করায়।

এক্ষেত্রে স্মরণ রাখা উচিত, আত্মপ্রশংসা করা ও নিজের যশ-খ্যাতিকে লোকসম্মুখে বলে বেড়ানো ধর্মীয়ভাবে ও নৈতিক দৃষ্টিকোণে গুনাহ; যদি গুনাহ নাও হয় তা হলেও তা মন্দ হবার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।

কিন্তু আমাদের নির্বাচনী আচরণবিধিতে একে কোনো নিয়ম-নীতির অনুগামী করা হয় নি।

পাঁচ. জনসাধারণকে ভোট দিতে উৎসাহিত করার জন্য এটাও জরুরি মনে করা হয় যে, তাদেরকে কোনো চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই সুন্দর সুন্দর প্রতিশ্রুতির বাণী শোনাতে হবে। অঙ্গীকার করার সময় এ বিষয়ে কোনো কথা বলা হয় না যে, অঙ্গীকার কোন পন্থায় পূরণ করা হবে এবং ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করার পর সেসব অঙ্গীকার কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে?

‘আমরা ক্ষমতায় আসীন হয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়ন ঘটাবো’ ‘অনুন্নত এলাকাসমূহকে প্যারিসের মত আধুনিক শহরে রূপান্তর করব’ ‘আমরা প্রতিটি জেলায় একেকটি হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠা করে বিচারব্যবস্থাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেব’ আমরা দারিদ্র ও নিরক্ষরতা দূরীভূত করব- নির্বাচনী ইশতেহার ও প্রতিটি ভাষণ ও বক্তৃতায় এ জাতীয় বাহারি প্রতিশ্রুতি শুনিয়ে দেওয়া হয় এবং এসব মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও দাবির মাধ্যমে সহজ-সরল লোকদেরকে বোকা বানানোর চেষ্টা করা হয়।

ছয়. সভা-সমাবেশ এবং প্রচার-প্রচারণাও নির্বাচনী কর্মতৎপরতার এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ। যদি এসব সভা-সমাবেশ নৈতিকতা ও সভ্যতার গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকতো তা হলে সেগুলো বৈধও হতো।

কিন্তু সভা-সমাবেশে গুণ্ডামি ও মাস্তানি এক স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার কাছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের জান-মাল ও ইজ্জত-আব্রুর কোনো মূল্য নেই। অতএব, যার সুযোগ হয় সে অন্যকে পরাজিত করতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি করে না।

সাত. কোনো কোনো সময় নির্বাচনী সভা-সমাবেশের আয়োজন লোক চলাচলের এমন ব্যস্ততম রাস্তায় করা হয় যার ফলে জনবসতিপূর্ণ শহরের নাগরিকদের চলাফেরা স্থবির হয়ে পড়ে এবং ট্রাফিকের এমন সমস্যা সৃষ্টি হয় যা লোকদেরকে অবর্ণনীয় কষ্ট-ক্লেশের সম্মুখীন করে দেয়।

এই ধারাবাহিকতায় কতনা মুমূর্ষু রোগীকে এ্যাম্বুলেন্সে থাকা অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়! কতনা কর্মজীবি মানুষ তাদের কর্মস্থলে যথাসময়ে পৌঁছতে না পেরে তাদের আয় রোযগার থেকে বঞ্চিত হয়।

এভাবে রাজপথগুলোকে ব্লক করে দিয়ে কতনা মানুষকে অবর্ণনীয় কষ্টে নিপতিত করার মারাত্মক গুনাহ সমাবেশের আয়োজকদের ভাগে আসে তা আল্লাহই ভালো জানেন।

আট. দেওয়ালসমূহকে নির্বাচনী শ্লোগানে শ্লোগানে কালো করে ফেলা এবং ব্যক্তিগত ও সরকারি ইমারতসমূহকে পোষ্টার, ফেস্টুন ও প্লেকার্ডে প্লেকার্ডে চটচটে করে ফেলা নির্বাচনী কর্ম তৎপরতার এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর ফলে শহরে অধিকাংশ দেওয়াল ও ইমারত বিপরীতমুখী শ্লোগান প্রচারপত্রে ছেয়ে যেতে দেখা যায়। আল্লাহর কোনো বান্দার এই খেয়ালও আসে না যে, অন্য কারো দেওয়াল বা ইমারতকে তার সম্মতি ছাড়া ব্যবহার করে এর আকৃতি বিকৃত করে দেওয়া প্রকৃতপক্ষে চুরি ও ডাকাতির নামান্তর।

মহানবি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অন্য কোনো ব্যক্তির মালিকানাধীন জিনিস তার সম্মতি ব্যতীত ব্যবহার করা হালাল নয়।

এসব ইমারত ও দেওয়াল কারো না কারো মালিকানাধীনই হয়ে থাকে। অতএব, এগুলোকে মালিকের অনুমতি ছাড়া নিজের প্রচার-প্রচারণার জন্য ব্যবহার করা হারাম।

এগুলোকে নষ্ট কিংবা বিকৃত করাতো আরো মারাত্মক অপরাধ। কিন্তু দারিদ্র বিমোচন ও নিরক্ষরতা দূরীকরণের দাবিদারগণ অবলীলায় এ জাতীয় চুরি ডাকাতির অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে।

আর কোনো অভিজাত এবং সুশীল ব্যক্তি এহেন গর্হিত কর্ম হতে বিরত রাখার প্রয়াস চালায় তা হলে তাকে কখনো ইট-পাটকেল কিংবা গোলাগুলির মুখোমুখি হতে হয়।

নয়. ভোট ক্রয়-বিক্রয় করা এবং এই উদ্দেশ্যে লোকদের ঘুষ দেওয়া, যেসব লোকের অধীনে ভোট ব্যাংক তাদের না জায়েয কাজ করে দেওয়া কিংবা এর ওয়াদা করা একটি স্বতন্ত্র অপরাধ, যা আল্লাহ ও আখেরাত সম্পর্কে উদাসীন প্রার্থীদের মধ্যে অধিক পরিমাণে প্রচলিত রয়েছে।

এ জাতীয় অপরাধ সমাজকে আখলাক ও নৈতিকতা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে।

দশ. এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, নির্বাচনী কর্মতৎপরতা পরিচালিত করার জন্য এবং এর ব্যয়ভার বহন করার জন্য প্রতিটি দলের লক্ষ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। আর এ মোটা অংকের টাকা যোগান দেওয়ার জন্য যে পথ ও পন্থা অবলম্বন করা হয় সেগুলোর মধ্যে বৈদেশিক শক্তির সঙ্গে আঁতাত করে তাদের বলে দেওয়া এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা এমন এক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে যা দেশ ও জাতিকে উইপোকার মতো কুরে কুরে খাচ্ছে।

আর যে সব লোক বিদেশ থেকে পুঁজি সংগ্রহ করে না কিংবা করতে পারে না তারা দেশীয় বড় বড় পুঁজিপতির কাছ থেকে নিজ দলের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করে।

অনেক সময় এই চাঁদা মূলত ওই বিষয়ের ঘুষ হয়ে থাকে যে, ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর চাঁদাপ্রদানকারীদেরকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে। যদি এসব ব্যক্তি চাঁদা দিতে অস্বীকার করে তা হলে তাদেরকে নানাভাবে নাজেহাল করা হয়।

রাজনৈতিক যে দল অধিক শক্তিশালী হয় এবং তার ক্ষমতায় আসার যতটুকু সম্ভাবনা থাকে তার চাঁদাদাবির আবেদন বেশি ক্রিয়াশীল হয়ে থাকে।

এই দশটি বড় বড় গোনাহ কেবল উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করা হলো। কিন্তু আপনি যদি সূক্ষ্মভাবে চিন্তা করেন তা হলে দেখতে পাবেন যে, এগুলোর মধ্যহতে প্রতিটি গোনাহই স্বতন্ত্রভাবে আরো বহু গোনাহের সমষ্টি। তাই এগুলো থেকে বিরত থাকা একান্ত অপরিহার্য!

অনুবাদ : আবদুল কাইয়ুম শেখ

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ