মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫


‘নির্বাচন পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে অনুষ্ঠান নয়; মাঠ থাকবে প্রশাসনের দখলে’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: রাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আগামী এক মাস টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা মাঠ প্রশাসনের দখলে থাকবে। এ সময়ের মধ্যে সেখানে কোনো অনুষ্ঠান হবে না।

শনিবার বিকালে সচিবালয়ে বিবদমান তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষ নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, আপাতত কোনো ধরনের প্রোগ্রাম থেকে দুই পক্ষকেই বিরত থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনের পর জোড় ও ইজতেমার নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।

এ ছাড়াও আজকের সংঘর্ষের ঘটনায় ফৌজদারি মামলা হবে বলেও জানান তিনি। এবং সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শনিবার বিকেল ৫ টার দিকে তাবলিগ জামাতের দুপক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এতে উপস্থিত ছিলেন তাবলিগের আলেম উপদেষ্টা আল্লামা আশরাফ আলী, আল্লামা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসঊদ, মাওলানা মাহফুজুল হক ও সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম।

এ ছাড়া পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়াসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, শনিবার ইজতেমা মাঠে অবস্থান করা তাবলীগের সাথী ও উলামায়ে কেরামকে হঠিয়ে মাওলানা সাদ অনুসারীরা জোড় আয়োজনের জন্য গেট ভেঙে মাঠে প্রবেশ করে। এসময় তাদের বাধা দিলে লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা চালায়।

সংঘর্ষে মুন্সিগঞ্জের মিলকীপাড়া গ্রামের ইসমাইল মণ্ডল (৭০) নামে এক মুসল্লির মৃত্যুর হয়েছে বলে জানা গেছে।

মাঠে অবস্থানরত মুসল্লিরা জানান, অন্যদিনের মতোই ইজতেমা মাঠে ইবাদতে লিপ্ত ছিল তাবলীগের সাথী ও উলামায়ে কেরাম। এদিকে সাদ অনুসারীরা যেন ভেতরে ঢুকতে না পারে সে জন্য গেটের পাহারায় ছিলেন অনেকে।

বেলা ১১ টার দিকে হঠাৎ করেই তারা লাটিসোটা হাতে মাঠে প্রবেশ করে। তারা তাবলীগের সাথী, মুরব্বি ও ছাত্রদের বেধরক পেটাতে থাকেন।

প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই জানান, হামকারীদের বেশির ভাগের টার্গেট ছিল মাদরাসার ছাত্ররা। নিরিহ এসব ছাত্রকে দেখে লাঠি হাতে দৌড়ে আসে হামলাকারীরা।

মাঠে অবস্থানরত সাথীদের মাল সামানা ও চাটাইয়ে আগুনও ধরিয়ে দেয় তারা।

উল্লেখ্য, আগামী ৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত টঙ্গী ময়দানে তাবলিজ জামাতের নিয়মতান্ত্রিক জোড় অনুষ্ঠিত হবে। ১৮ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে তিন দিনের ইজতেমা। সে মুতাবেক মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছিলেন তাবলীগের সাথীগণ।

এদিকে মাওলানা সাদ অনুসারীরাও আলাদাভাবে ৩০ নভেম্বর থেকে জোড় করার ঘোষণা দেন। এবং গত ২৭ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে মাঠ দখলের কথাও বলেন। এর পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে।

মাওলানা সাদ কান্ধলভী তাবলিগ জামাতের একজন শীর্ষ মুরব্বি। তবে গত কয়েক বছর ধরে তার নিজেকে আমির দাবি ও নবীর শানে বিতর্কিত কিছু বক্তব্যসহ কিছু ভুল মাসআলা দেয়ায় তা সংশোধনের চেষ্টা করেন ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দসহ বাংলাদেশের উলামায়ে কেরাম।

কিন্তু এসব ভুল থেকে এখন পর্যন্ত পরিস্কারভাবে ফিরে না এসে নিজের অবস্থানে অটুট আছেন।

এদিকে উলামায়ে কেরাম ও তাবলীগের বাংলাদেশের মুরব্বিগণ ঘোষণা দিয়েছেন, মাওলানা সাদ তার ভুল থেকে ফিরে আসলে সবাই তাকে মানবেন। কিন্তু এসব ভ্রুক্ষেপ না করে নিজের অবস্থান অটুট রাখায় তাবলীগ জামাতে চলমান এ সঙ্কট।

চলমান এ পরিস্থিতিতে উলামায়ে কেরাম ঐক্যমত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মাওলানা সাদ কান্ধলভী তার ভুল থেকে ফিরে না এলে তাকে বাংলাদেশে আসতে দেয়া হবে না এবং তার মতও প্রচার করতে দেয়া যাবে না।

বাংলাদেশের তাবলীগের মারকাজ কাকরাইল সে অনুযায়ী নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

‘একসঙ্গে রক্তাক্ত জখমের এত রোগী টঙ্গী হাসপাতালে কখনো আসেনি’

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ