বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


পাওয়া গেল হারানো মানিব্যাগ, সঙ্গে বাড়তি ডলার!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কৌশিক পানাহী: মানিব্যাগ হারানো বিচিত্র কিছু নয়। হারানো ম্যানিব্যাগ ফেরত পাওয়াটা বিরল কিছু নয়। কিন্তু বেশি টাকাসহ হারানো মানিব্যাগ ফেরত পাওয়াটা বিরলই বটে। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে।

বোনের বিয়েতে গিয়েছিলেন লাস ভেগাসের হান্টার শামাট। কিন্তু বিমানবন্দরে নেমেই টনক নড়ে পেশায় কাঠের মিস্ত্রি এ ব্যক্তির। বুঝতে পারেন খোয়া গেছে তার মানিব্যাগ। ৬০ ডলার ক্যাশ। ৪০০ ডলারের একটা চেক ছাড়াও ব্যাগে ছিল হান্টারের আইডেন্টিটি কার্ড।

আন্দাজ করেছিলেন, ওহামা থেকে ভেগাস আসার প্লেনেই সম্ভবত খোয়া গেছে তার মানিব্যাগ। দুশ্চিন্তায় পড়ে যান ওই যুবক। তবে সামনেই বোনের বিয়ে থাকায় ব্যাপারটা সেভাবে আর আলোচনা করতে চাননি হান্টার।

কিন্তু বিয়ে মিটতেই চিন্তা চেপে বসে হান্টার শামাটের মাথায়। এ বার তো বাড়ি ফেরার পালা। কিন্তু সঙ্গে নেই আইডেন্টিটি কার্ড। যাত্রী হিসেবে তাকে অনুমতি দেওয়া হবে কিনা সেই নিয়েও চিন্তায় ছিলেন শামাট। ছেলের সঙ্গে সঙ্গে দুশ্চিন্তায় পড়েন তার মা-বাবাও।

এর মধ্যেই, যে বিমানে ভেগাস এসেছিলেন হান্টার সেই সংস্থাকেও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। উদ্ধার হয়নি খোয়া যাওয়া মানিব্যাগ। তবে ফেরার সময় দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর হান্টার শামাটকে প্লেনে চড়ার অনুমতি দেয় বিমান কর্তৃপক্ষ।

বাড়ি ফিরে চমকে যান শামাট। দেখেন, পার্সেলে মুড়ে কেউ একজন তার বাড়িতে এনে রেখে গেছে মানিব্যাগ। তবে শুধু ব্যাগই আসেনি। সঙ্গে এসেছে একটি চিঠিও।

হান্টারকে সম্বোধন করে ওই চিঠিতে প্রেরক লিখেছেন, ‘ওহামা থেকে ডেনভার আসার বিমানে ১২ নম্বর সারির এফ সিটে এটা পেয়েছিলাম। তুমি নিশ্চয় এটা ফেরত পেতে চেয়েছিলে।’

তবে এখানেই শেষ নয়; পুনশ্চ দিয়ে মানিব্যাগ উদ্ধারকারী লিখেছেন, ‘তোমার ৬০ ডলার ক্যাশকে আমি ১০০ ডলার করে দিয়েছি, যাতে তুমি ভালোভাবে সেলিব্রেট করতে পারো। মজা করো।’

এ ঘটনায় যথারীতি হতবাক হান্টার। একে মানিব্যাগ ফেরত পেয়েছেন, তার সঙ্গে পেয়েছেন ৪০ ডলার। ঘটনাটা যেন কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছিলো না হান্টার শামাটের।

এরপরই হান্টারের মাথায় আসে, যে তার এতো বড় উপকার করলেন তাকে তো খুঁজে বের করতেই হয়। এ দিকে চিঠিতে আবার প্রেরক নিজের নাম লেখেননি। তাহলে উপায়? সোশ্যাল মিডিয়া থাকতে চিন্তা কী?

সটান ওই চিঠির ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে দিলেন হান্টারের মা জেনি শামাট। আর দিন কয়েকের মধ্যেই সেই সহৃদয় ব্যক্তির খোঁজও পেয়ে গেলেন শামাট পরিবার। জানা গেল, ব্যক্তির নাম টড ব্রাউন। তিনি ওহামারই বাসিন্দা।

এরপর ব্রাউনের উদ্দেশে একটি আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন হান্টার। লিখেছেন, ‘আপনি আমার জন্য যা করেছেন সেটা বাস্তবে হয় বলে জানতাম না। আমার এবং আমার পরিবারের কোনো দিন এমন কোনো ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয়নি যিনি এতো দয়ালু।

আশাই করিনি যে আবার আমার মানিব্যাগটা দেখতে পাবো, আবার উপরি হিসেবে ৪০ ডলারও পাবো।’

সূত্র– ওয়াশিংটন পোস্ট, ব্রেইনার্ড ডেইপ্যাচ ও দ্য ওয়াল।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ