মাহমুদুল হাসান
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
তাবলিগ জামাতের চলমান সঙ্কট নিরসনে কিশোরগঞ্জে ইমাম উলামা ও তাবলিগ সাথীদের আয়োজনে ওয়াজাহাতি জোড় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৩১ অক্টোবর বুধবার জেলার আজিমুদ্দীন হাইস্কুল মাঠে মাওলনা আবু তৈয়বের সঞ্চালনায় সকাল ৮টায় উক্ত জোড় শুরু হয়ে দুপুর একটা পর্যন্ত চলে। এতে দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম ও তাবলিগের মুরব্বিগণ বয়ান করেন।
এ ছাড়াও জোড়ে কিশোরগঞ্জ তাবলিগী মারকাযেরর শুরা সদস্যগণ বয়ান করেন।
জোড় থেকে ১০ টি ঘোষণা সম্মলিত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এগুলো আল্লামা আনোয়ার শাহ জনসম্মুখে পাঠ করে শোনান।
সিদ্ধান্ত সমুহ
১। কিশোরগঞ্জ জেলার উলামায়েকেরাম এ বিষয়ে হয়েছেন ৩টি মৌলিক কারণে- যথাঃ
ক) কুরআন ও হাদীসের মনগড়া ব্যাখ্যা। খ. তাবলিগের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে তাবলিগ ব্যতীত দ্বীনের অন্যান্য মেহনতকে যথা দ্বীনি শিক্ষা ও তাসাউফ ইত্যাদিকে হেয় প্রতিপন্ন করা।
গ. পূর্ববর্তী তিন হযরতজীর উসূল ও কর্মপন্থা থেকে সরে যাওয়ার কারণে বর্তমানে মাওলানা সা’দ সাহেবকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণভাবে বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ।।
২। মাওলানা সা’দ সাহেব হযরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ. এর রেখে যাওয়া শুরায়ী নেযামকে উপেক্ষা করে নিজেই নিজেকে আমীর দাবী করেছেন, যা শরীয়ত বিরােধী।
তাই তার কোন সিদ্ধান্ত এবং ফায়সালা বা নির্দেশ কাকরাইল তথা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা যাবে না।।
৩। বর্তমান পরিস্থিতিতে কিশোরগঞ্জ জেলার কোনো জামাত বা ব্যক্তিকে নিযামুদ্দীনে পাঠানাে বা যাওয়া মুনাসিব হবে না।
অনুরুপভাত নেযামুদ্দিন থেকে আগত কোনাে জামাতকে কোন জেলায়/থানা/ইউনিয়নে কাজ করার সুযোগ দেওয়া যাবে না।
৪. মাওলানা ইলিয়াস রহ., মাওলানা ইউসুফ রহ. ও হযরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ এর বাতলানো পদ্ধতিতে তাবলিগের কাজ সারা দুনিয়ায় সমা সমাদ্ভূত ও গৃহীত হয়েছে।
তাই কিশোরগঞ্জ জেলার তাবলীগের পূর্ববর্তী তিন হযরতের পদ্ধতিতে এবং উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে তাবলিগের কাজ পরিচালিত হবে।
নতুন কোন পদ্ধতি চালু করা যাবে না। কিশোরগঞ্জ জেলা মারকাযসহ সকল মারকায এই নীতিতেই পরিচালিত হবে।
৫. কাকরাইলের পরচা ছাড়া সাদ পন্থীদের পাঠানো কোন জামাতকে অত্র জেলায়/থানায়/ইউনিয়নে কাজ করার সুজুগ দেওয়া যাবে না।
৬. ২০১৮ ইং সনের বিশ্ব ইজতেমার পূর্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক।
১, কাকরাইলের আহলে শরা ২, শীর্ষস্থানীয় উলামায় কেরাম ৩, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ উধর্বতম রাষ্ট্রিয় কতৃপক্খের সমন্নয়ে পৃহীত সিদ্ধান্তগুলো অব্যাহত রাখার জোর আহবান জানানো যাচ্ছে।
সিদ্ধান্তগুলো নিম্নরোপ:-
ক) মাওঃ সাদ সাহেব দারুল উলুম দেওবন্দের সাথে মতপার্থক্য দূর করত: দারুল উলুম দেওবন্দের অাস্হা অর্জন না করা এপর্যন্ত বাংলাদেশে অাসতে পারবে না।
নাজিমুদ্দিনের যে সকল অাকাবির উলামায়ে কেরাম সাদ সাহেবর সাথে দ্বিমত পোষন করে মারকায ছেড়ে চলে গেছেন তাদের সাথে সমস্যা নিরসন করে একসাথে অাসবেন।
৭. বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশ ও জাতির শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে উল্লেখিত বিষয় দুটির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত মাওঃ সাদ সাহেবর কোন পরামর্শ ও নির্দেশনা তাবলীগের সাথী ভাইগন কিশোরগঞ্জ জলাতে চালানোর চেষ্টা করবে না।
কিশোরগঞ্জ মারকাযের মুতাওল্লীর অংগীকার মতে ইনশাঅাল্লাহ অাজ থেকে কিশোরগঞ্জ জলা তাবলীগী মারকায এবং তাবলীগের সারা জলার কারযক্রম একক ভাবে কাকরাইলের উলামায়ে কেরাম শুরাদের পরামর্শ ক্রমে চলবে।
৮. এবারের পাচ দিনের জোড় ৭,৮,৯,১০ ও ১১, ডিসেম্বর ২০১৮ ইং অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৮ এর টঙ্গী ইজতেমা সরকারের সাথে পরামর্শক্রমে অাগামী ২০১৯ ইং এর ইজতেমার জন্য নিরাধারিত তারিখ প্রথম পর্ব ১৮,১৯,২০ জানুয়ারি ও দ্বিতীয় পর্ব ২৫,২৬,২৭, জানুয়ারির সাথে অাজকের মজমা ঐক্যমত পোষন করছে।
৯. কাকরাইল মারকাযের উলামা শুরার চিঠিপত্র ছাড়া কোন তাকাজা কিশোরগঞ্জ জেলায় বাস্তবায়ন করা যাবে না।
১০. কেন্দ্রীয় মারকায কাকরাইলের অাহলে শরার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৯ সালের বিশ্ব ইজতেমার অাগে ও পরে কোন জেলা ইজতেমা হবে না।
উক্ত সিদ্ধান্ত উপেক্খা করে কাকরাইলের ফায়সালা ছাড়াই সাদ সাহেবের অনুসারীগণ কিশোরগঞ্জ জেলায় বিভ্রান্তিকর ইজতেমা করার ঘোষনা দেন, তা তাবলীগ জামাতের উসূল ও প্রচলিত অাইনের দৃষ্টিতে অবৈধ।
আজকের ওয়াজাহাতি জোড় এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। পাশাপাশি এ অবিতর্কিত ইজতেমা বন্ধের ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
উক্ত ওয়াজাহাতি জোড়ে কিশোরগঞ্জ ইমাম-ওলামা পরিষদের সভাপতি, আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মহা-পরিচালক আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ'র সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন মারকাজুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার
শিক্ষাসচিব ও বিভাগীয় তাখাসসুস ফী উলুমিল হাদীস এর প্রধান আল্লামা আব্দুল মালেক।
মুফতি কেফায়াতুল্লা আল আজহারী, কাকরাইল মুরুব্বী বাংলাদেশ আলমি শুরা মাওলানা জুবায়ের, মাওলানা রবিউল হক।
মাওলানা আব্দুল বার, মাওলানা আব্দুল মতিন, আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওঃ মাহফুযুল হক, মুফতি আমানুল হকসহ প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন।
মহানবির কটূক্তিতে ফাঁসির আদেশ হওয়া এশিয়া বিবির বেকসুর খালাস!
-এটি