শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


৮ দফা দাবিতে আগামীকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: সংসদে পাসকৃত ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’র ধারা সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে আগামীকাল রোববার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।

শনিবার (২৭ অক্টোবর) ফেডারেশনটির সভাপতি সংসদ সদস্য ওয়াজিউদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক উছমান আলী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে যুগোপযোগী আধুনিক ও উন্নত সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নের দাবি করে আসছে।

আমাদের দাবিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সরকার আইন পাস করলেও অনেকগুলো ধারা শ্রমিক স্বার্থের বিরুদ্ধে করা হয়েছে।

যেখানে পরিবহন শ্রমিকদের চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আইনে সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে গণ্য না করে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে জামিন অযোগ্য করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা জানি দুর্ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটে না, কিন্তু অপরাধ পরিকল্পিতভাবেই ঘটে। দুর্ঘটনা মামলায় তদন্ত করে অপরাধী হিসেবে বিচারে ৩০২ ধারায় শ্রমিকদের ফাঁসি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এমনিতেই প্রতিমুহূর্তে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে পরিবহন শ্রমিকরা রাস্তায় গাড়ি চালায় তার ওপর আবার বিচারের মৃত্যুর ঝুঁকি। এ কারণে শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পেশা ছেড়ে দেবার চিন্তা শুরু করে দিয়েছে।

সেখানে আরও বলা হয়, সড়ক পরিবহন জনগুরুত্বপূর্ণ সেবা খাত। সড়ক পরিবহন এর প্রধান চালিকা শক্তি শ্রমিক।

এই শ্রমিকদের সমাজ ও জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে আইনের এই ধারাগুলো বিশেষ মহলকে খুশি করতে পারলেও জাতীয় জীবনে চরম বিপর্যয়ের সম্ভাবনা এনে দিয়েছে। যা আমাদের কাম্য নয়।

এ অবস্থায় এই আইনের সংশোধন করা ও বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে আমরা ৮ দফা দাবি উত্থাপন করেছি। এবং একই লক্ষ্যে আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হবে।

৮ দফা দাবিগুলো হলো- সড়ক দুর্ঘটনায় সকল মামলা জামিনযোগ্য করতে হবে। শ্রমিকদের অর্থদণ্ড ৫ লাখ টাকা করা যাবে না।

সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্সে শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করতে হবে। ওয়েস্কেলে জরিমানা কমানো ও শাস্তি বাতিল করতে হবে। সড়কে পুলিশের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

গাড়ির রেজিস্ট্রেশন এর সময় শ্রমিকদের নিয়োগপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সত্যায়িত স্বাক্ষর থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।

সকল জেলায় শ্রমিকদের ব্যাপক হারে প্রশিক্ষণ দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করতে হবে। লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।

সড়ক দুর্ঘটনায় সব ধরনের মামলা জামিনযোগ্য করতে হবে। শ্রমিকদের অর্থদণ্ড ৫ লাখ টাকা করা যাবে না। সড়ক দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখতে হবে।

ড্রাইভিং লাইসেন্সে শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করতে হবে। ওয়েস্কেলে (ট্রাক ওজন স্কেল) জরিমানা কমানোসহ আটটি দাবি।

এর আগে গত ৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ সাত দফা দাবিতে পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘট শুরু হয়েছিল।

সেসময় (৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছিল ট্রাক পরিবহন শ্রমিকরা। শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) কেরানীগঞ্জে ট্রাকচালক-শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক শ্রমিক নিহত হয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবার একই দাবি নিয়ে ফুসে উঠেছে পরিবহন শ্রমিকরা এবং এ কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়। এছাড়া শনিবার (২৭ অক্টোবর) এ দাবিতেজাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দুপুর ২টা পরিবহন শ্রমিকরা জড়ো হয়ে ৩টা থেকে রাস্তা অবরোধ করে সমাবেশ করছে।

আরো পড়ুন-
কওমি সনদের স্বীকৃতি: তসলিমারা কেন ভীত?
বিজেপি নেতার সঙ্গে তসলিমার অবৈধ সম্পর্ক ফাঁস, আছে সন্তানও
‘জামায়াত স্বাধীনতা বিরোধী কিন্তু হেফাজত স্বাধীনতা বিরোধী নয়’


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ