মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৭ শাওয়াল ১৪৪৫


খাশোগির হত্যার বিচার দেশেই করতে চায় সৌদি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যায় জড়িতদের তুরস্কের কাছে হস্তান্তর করতে চাইছে না সৌদি আরব।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের বলেছেন, হত্যার বিচার সৌদি আরবেই করা হবে। তুরস্ক সরকার খাশোগি হত্যায় জড়িত ১৮ সৌদি নাগরিকের বিচারের জন্য তাদের হাতে হস্তান্তরের আহ্বান জানানোর প্রেক্ষিতে এ কথা বললেন তিনি।

শনিবার বাহরাইনের রাজধানী আম্মানে আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘খশোগি হত্যায় জড়িত সন্দেহে যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই সৌদি নাগরিক। তাদেরকে সৌদিতেই আটক করা হয়েছে, তাদের তদন্ত এবং বিচার সেখানেই হবে।’

এর আগে পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছিলেন, ‘সৌদি আরবে যে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে তারা নিশ্চয়ই জানে কে খাশোগিকে হত্যা করেছে এবং তার লাশ কোথায় সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’

গত ২ অক্টোবর ইস্তম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ঢুকে আর বের হননি ভিন্নমতাবলম্বী সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তিনি নিহত হয়েছেন এমন খবর প্রকাশ হলেও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয় খাশোগি কনস্যুলেট থেকে বের হয়ে গেছেন।

কিন্তু তদন্তে বের হয়ে আসে যে খাশোগি কনস্যুলেট থেকে বের হওয়ার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে বিভিন্নি মিডিয়ায় গোপন সূত্রের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ হয় যে, খাশোগিকে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে।

তুর্কি পুলিশের তদন্তেও ক্রমশ উন্মোচিত হতে থাকে রহস্য। এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে দুই সপ্তাহ পর সৌদি আরব শিকার করে যে, খাশোগি কনস্যুলেটের ভেতরে হাতাহাতির এক পর্যায়ে নিহত হয়েছেন। কিন্তু তাদের সেই স্বীকারোক্তি হালে পানি পায়নি।

তদন্তে জানা যায়, ঘটনার দিন সৌদি আরব থেকে ইস্তাম্বুল যাওয়া ১৫ সদস্যের একটি দল এই হত্যাকাণ্ড ঘটনায়। অত্যন্ত নৃশংসভাবে হত্যার পর খাসোগির শরীর টুকরো টুকরে করে ব্যাগে ভরে দূতাবাস থেকে বের করা হয়। তবে সেই লাশের খোজ এখনো পাওয়া যায়নি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ওই সাংবাদিককে হত্যার নীলনকশা তৈরি করা হয়। গত মঙ্গলবার তুরস্কের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ‘নগ্ন সত্য’
প্রকাশ করতে গিয়ে এ কথা বলেছেন এরদোগান।

এরদোগান তার ওই বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘তিন সদস্যের একটি সৌদি দল হত্যাকাণ্ডের এক দিন আগে ইস্তাম্বুল আসে। তারা ইস্তাম্বুল ও ইয়ালোভার বনাঞ্চলেও গিয়েছিলো।’ তিনি বলেন, আরো দুটি পৃথক দলে ভাগ হয়ে কনস্যুলেটে আসে হত্যাকারীরা।

এরদোগান বলেন, ‘সৌদি কনস্যুলেটের ক্যামেরাগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। হার্ড ডিস্ক থেকে সব ভিডিও ও ছবি সরিয়ে দেয়া হয়। খাশোগি কনস্যুলেট ভবন থেকে বেড়িয়ে গেছেন এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সৌদি সরকার এই ঘটনার কথা ৪ অক্টোবর অস্বীকার করে, কনসাল জেনারেল রয়টার্সের এক সাংবাদিককে আমন্ত্রণ করে দেখানোর চেষ্টা করে যে কিছুই ঘটেনি সেখানে’।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তবে ভুললে চলবে না যে এটি হয়েছে তুরস্কের মাটিতে।

প্রমাণ বলছে, পরিকল্পিত কাজের ফল হিসেবেই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। ওই দলটি কেন ইস্তাম্বুল এসেছিলো? তাদের কে নির্দেশনা দিয়েছে? কনস্যুলেট কেন এতদিন পর আমাদের তদন্ত করার অনুমতি দিয়েছে? কেন তাদের বক্তব্যের মধ্যে একেক ধরনের তথ্য ছিলো? হত্যার শিকার মানুষটির লাশ কোথায়? আমাদের সেসব প্রশ্নের উত্তর জানা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘আমি সৌদি সরকারকে অনুরোধ জানাই খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ইস্তাম্বুলেই বিচারের আওতায় আনার সুযোগ দিতে।’

আরো পড়ুন-
কওমি সনদের স্বীকৃতি: তসলিমারা কেন ভীত?
বিজেপি নেতার সঙ্গে তসলিমার অবৈধ সম্পর্ক ফাঁস, আছে সন্তানও
‘জামায়াত স্বাধীনতা বিরোধী কিন্তু হেফাজত স্বাধীনতা বিরোধী নয়’

এটি/আওয়ার ইসলাম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ