মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৭ শাওয়াল ১৪৪৫


যে কারণে ইন্দোনেশিয়ায় বারবার ভূমিকম্প হয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আব্দুল্লাহ আফফান: সারা বিশ্বে ছোট বড়ো ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্প হয় আমাদের বাংলাদেশেও। ভূ-পৃষ্ঠের বহু নিচে শিলা বা প্লেট রয়েছে। ভূমিকম্প হয় মাটির নিচের শিলা বা প্লেট আচমকা ভেঙে যাওয়ার ফলে। হঠাৎ এই ভাঙন মাটির তলায় প্রচণ্ড শক্তির সৃষ্টি করে এবং এটা ঢেউয়ের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে মাটি কেঁপে ওঠে এবং মাটির ওপরে থাকা সবকিছু দুলতে থাকে।

যখন মাটির নিচে দুটি ব্লক অথবা দুটি শিলার মধ্যে সংঘর্ষ হয়, তখন সেগুলো নিজেদের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে যায়। তবে এটি খুব ধীরে ধীরে হয় এবং ভেঙে যাওয়া শিলাগুলো একে অপরের সাথে গায়ে গায়ে লেগে থাকে এবং একে অপরের ওপর চাপ দিতে থাকে।

ভেঙে যাওয়া শিলাগুলো চাপের মধ্যে থাকায় একসময় সেগুলো ভাঙতে শুরু করে। যখন শিলাগুলো ভেঙে যায়, তখনই ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। যে স্থানে শিলাগুলো ভেঙে যায়, সেটাকেই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল বলা হয়।এভাবেই দুটি শিলার সংঘর্ষের মাধ্যমে মাটির নিচে ভূমিকম্প হয়। এ ছাড়াও মাটির নিচে বড় ধরনের বিস্ফোরণ হলেও ভূমিকম্প হতে পারে।

এসে গেল যাদুকরী মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার

বর্তমান সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পের ঘটনা খুব বেশি ঘটছে। তার কারণ ইন্দোনেশিয়া অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ একটি ভৌগলিক অঞ্চলে অবস্থিত। একে বলা হয় ‘রিং অব ফায়ার’। এটি প্রশান্ত মহাসাগরের অববাহিকায় একটি বৃত্তাংশ, যেটি পানির নিচে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ও ভূ-পৃষ্ঠের ফাটল বা ফল্ট লাইন দিয়ে গঠিত।

Image result for ‘রিং অব ফায়ার

এই রিং অব ফায়ারের আকার অনেকটা ২০ হাজার কিলোমিটার আয়তনের এক পাটি জুতোর মতো। এই এলাকায়ই পুরো পৃথিবীর অধিকাংশ ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।

কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার – বিস্তারিত জানুন

বিশ্বের সবচেয়ে ভূকম্পনশীল অংশগুলোর মধ্যে অন্যতম এই এলাকাটি প্রশান্ত মহাসাগরের একদিকে জাপান ও ইন্দোনেশিয়া থেকে অন্যদিকে ক্যালিফোর্নিয়া ও সাউথ আমেরিকা পর্যন্ত বিস্তৃত।

ভূ-পৃষ্ঠের ফাটলগুলোর সৃষ্টি ‘টেকটনিক প্লেটে’র কারণে। ‘লিথোস্ফিয়ার’ নামক পৃথিবীর সবচেয়ে বাইরের কঠিন স্তরটি অনেকগুলো বড়, ছোট ও মাঝারি খণ্ড নিয়ে গঠিত। খণ্ডগুলো ঠিক নিচে থাকা তুলনামূলক নরম এবং আংশিক গলিত স্তর ‘অ্যাসথেনোস্ফিয়ারে’র ওপর দিয়ে নড়তে এবং এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরে যেতে পারে।

লিথোস্ফিয়ারের দুই খণ্ডের মাঝের ফাটলগুলোকেই বলে ফল্ট লাইন। খণ্ডগুলো সবসময়ই ভূগর্ভস্থ কম্পনের কারণে কোনো এক দিকে একটু একটু করে সরে যাচ্ছে। এর ফলে ফল্ট লাইনগুলোতে কম্পন অনেক বেশি অনুভূত হয় এবং সেখানে থাকা আগ্নেয়গিরিগুলো থেকে যখন তখন অগ্নুৎপাত হতে থাকে।

এই ভূগর্ভস্থ আলোড়নগুলোই ব্যাপক মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে এর ওপরে অবস্থিত দেশগুলোকে তছনছ করে দেয়।
একই সঙ্গে টেকটনিক প্লেট এবং রিং অব ফায়ার এলাকায় থাকাই ইন্দোনেশিয়াতে একের পর এক ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির উদগীরণের মূল কারণ বলে জানিয়েছেন সিএনএনের ভূ-তত্ত্ববিদ অ্যালিসন চিন্টার। কারণ দেশটির নিচে থাকা পৃথিবীর অংশটি প্রতিনিয়ত নড়ছে, সরে যাচ্ছে এবং পরিবর্তিত হচ্ছে।’

একেকটি ভূমিকম্পের পর সেখান থেকে সামলে ওঠার সুযোগও খুব একটা পাচ্ছে না ইন্দোনেশিয়া ও এর আশপাশের এলাকার মানুষ। কেননা প্রত্যেকটা বড় ভূমিকম্প একা আসছে না। আসছে অনেকগুলো ছোটবড় ভূমিকম্পের সিরিজ হিসেবে। আর সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্পটির পরও অসংখ্য আফটারশকে কম্পিত হচ্ছে পুরো অঞ্চল।

আরও পড়ুন: হেফাজত, কওমি স্বীকৃতি ও সংবর্ধনা বিষয়ে দীর্ঘ কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ