মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫


‘অনুমোদন পাচ্ছে না’ ইভিএম প্রকল্প!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

অাওয়ার ইসলাম: ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, ত্রুটিমুক্ত, বিশ্বাসযোগ্য ও আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর করতে দেড় লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার কথা। এজন্য পরিকল্পনা কমিশনে গত ১৬ আগস্ট এ প্রকল্পের প্রস্তাবও পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

কিন্তু এর প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তাতে কোনো অগ্রগতি নেই। প্রকল্পটি নিয়ে মূল্যায়ন কমিটির যে সভা হওয়ার কথা ছিল, সেটি স্থগিত হয়ে আছে।

গত ১৯ আগস্ট (রোববার) দুপুর ১২টায় ইভিএম কেনার প্রস্তাব নিয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হওয়ার কথা ছিল। যা হঠাৎ করেই স্থগিত হয়ে যায়। এরপরে ২৩ দিন চলে গেলেও আর কোনো তারিখ নির্দিষ্ট করা হয়নি ওই পিইসি সভার জন্য। ফলে আপাতত স্থগিত হয়েই আছে ইভিএম কেনা, সংরক্ষণ ও ব্যবহার প্রকল্পের কাজ।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, দেড় লাখ ইভিএম কেনার প্রকল্পটি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বহির্ভূত। এমন প্রকল্পে পিইসি সভা শুরু হওয়ার আগে পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমোদন লাগে। যা নিয়ে মন্ত্রী এখনও ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনো সাড়া দেননি। পুরোই স্থগিত রেখেছেন প্রকল্পটি।

মাত্র দেড় লাখ ইভিএম সিস্টেম এবং সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি কেনার জন্য প্রকল্পটির প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৮২১ কোটি সাত লাখ টাকা। এতে প্রতি ইউনিট ইভিএমের দাম পড়বে প্রায় দুই লাখ টাকা। আর এমন বিশাল ব্যয়ের প্রকল্পের আওতায় ইভিএম কিনতে হলে অবশ্যই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে হবে। আবার একনেকে অনুমোদনের আগে পিইসি সভা বাধ্যতামূলক।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠেয় একনেক সভায় ইভিএম প্রকল্পটি উপস্থাপনের কোনো সম্ভাবনা নেই। এরপরে বর্তমান সরকারের মেয়াদে ১৮ সেপ্টেম্বর শেষ একনেক সভা। ওই সভায়ও প্রকল্পটি উপস্থাপনের সম্ভাবনা থাকছে না। এই হিসেবে বলাই যায়, বর্তমান সরকারের মেয়াদে অনুমোদন পাচ্ছে না ইভিএম কেনার প্রকল্প।

পরিকল্পনা কমিশনের ইভিএম সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দেড় লাখ ইভিএম কেনার প্রকল্প একেবারেই স্থগিত হয়ে আছে। অগ্রগতি বলতে গত ১৯ আগস্ট পিইসি সভার তারিখ ছিল। যা স্থগিত। এখনও একই অবস্থা। বর্তমান সরকারের মেয়াদে আরও দু’টি একনেক সভা হবে। কালকে (মঙ্গলবার) এটা একনেকে উঠছে না। এমনকি পরবর্তী একনেক সভায়ও এটা ওঠার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ একনেক সভায় প্রকল্প উপস্থাপনের আগে আমাদেরও প্রকল্প যাচাই-বাছাই করতে পিইসি সভা করতে হয়।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন মেয়াদ চলতি সময় থেকে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত। যদিও বর্তমান সরকারের মেয়াদ ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে শেষ হবে। তার আগে এ ডিসেম্বরে নতুন সরকার গঠনের জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে ভোটের বাকি মাত্র কয়েক মাস।

প্রকল্পের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য (সচিব) মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্‌ত  বলেন, ইভিএম কেনা প্রকল্পের সভা স্থগিত হওয়ার পরে কোনো অগ্রগতি নেই। প্রকল্পটি এখনও স্থগিতই আছে।

সামনে কবে নাগাদ পিইসি সভা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সভা হলেই আপনারা জানবেন। এর বেশি কিছু তথ্য আমাদের হাতে নেই।

এদিকে, ইসি’র পাঠানো প্রস্তাবনায় দেখা গেছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের তিন হাজার ১১০ জন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্বাচন প্রক্রিয়া বিষয়ে সামগ্রিক দক্ষতা বৃদ্ধি, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বিষয়ক জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

নানা যুক্তি তুলে ধরে বিশাল ব্যয়ের এ প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব করেছে ইসি। প্রস্তাবনায় ইসি জানায়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মূল দায়িত্ব হলো জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করা। এছাড়াও ইভিএমের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হয় এতে।

ইভিএম পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম ব্যবহার করা হয় রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। ওই সময় একটি কেন্দ্রের ছয়টি কক্ষে ইভিএম ব্যবহার করে সফলতার সঙ্গে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা হয়। বাংলানিউজ।

আপনার ব্যবসাকে সহজ করুন। – বিস্তারিত জানুন

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ