শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


সমকামিতার বৈধতা; আসমানি আজাব টেনে আনার পায়তারা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তাওহীদ আদনান
ইন্ডিয়া থেকে

গতকাল ৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার হিন্দুস্তানী সুপ্রিমকোর্টে দুঃখজনক এবং চরম দুঃখজনক একটি ফায়াসালা হয়েছে৷ সমকামিতাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে৷

১৮৬১ সনে তৈরি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় সমকামিতাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সেই ৩৭৭ ধারা বাতিল করে দিয়েছেন।

১৮৬১ সনে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ নং ধারায় সমকামিতাকে অবৈধ সাব্যস্ত করে এর শাস্তি স্বরূপ সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৩ বৎসরের কারাদণ্ড নির্ধারিত ছিল৷ পরবর্তীতে উক্ত নিয়মে সংস্করণ করে সর্বনিম্ন ১০ বৎসর এবং সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নির্ধারণ করা হয়৷

১৯৯৫ পর্যন্ত তো হিন্দুস্তানে সামকামিতার শাস্তি আমৃত্যু কারাদণ্ড নির্ধারিত ছিলো৷ এমনকি ২০১৩-তেও যখন সমকামিতার বিষয়ে ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টে আলোচনা উঠে তখনও সমকামিতাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়৷ কিন্তু গতকাল হঠাৎ করেই সুপ্রিমকোর্টে বিষয়টির বৈধতা দিয়ে দেয়া হলো৷

লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, গতকাল ফায়সালা শুনানির পরপরই ২৫ লাখ মানুষ নিজেদের সমকামি হিসেবে পরিচয় প্রদান করেছে৷ কিন্তু যেহেতু আদালতে বৈধতা দেয়া হয়েছে তাই নিঃসন্দেহে এর সংখ্যা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে৷

এটা সত্য, সমকামিতা বহু পুরনো একটি ব্যাধি৷ হিন্দুস্তানের প্রাচীন ধর্মগ্রন্থেও এর আলোচনা পাওয়া যায়৷ আবার হিন্দু ধর্মের অধিকাংশ লোকই সমকামিতা অবৈধ হওয়ার পক্ষে নয়৷ কিন্তু ইসলাম ধর্মে তো সমকামিতাকে শুরু থেকেই অবৈধ সাব্যস্ত করা হয়েছে৷

কেবলইতো মালয়েশিয়াতে সমকামিতার শাস্তি স্বরূপ দুই মেয়েকে বেত্রাঘাত করা হয়েছে ছয়বার করে এবং জরিমানা করা হয়েছে ৮০০ মার্কিন ডলার৷ অথচ ভারতে এটাকে বৈধ সাব্যস্ত করা হলো৷ এটা ভারতবর্ষের জন্য এক ভীতিকর সংবাদ৷

সমকামিতা এমন এক অপরাধ যার দরুন পূর্ব যুগে আল্লাহ পাকের আযাব পর্যন্ত নাযিল হয়েছে৷ যেমন- কওমে লুতের ঘটনা সকলেরই জানা৷ তাদের পুরো কওমকে একমাত্র সমকামিতার অপরাধেই সাগরে নিমজ্জিত করা হয়েছে৷

হযরত লুত আলাইহিসআলাইহিস সালাম যিনি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ভাতিজা ছিলেন৷ তার উম্মতদেরকেই বলা হয় কওমে লুত৷ আল্লাহ তাআ'লা তাকে নবুওত দান করে সামুদ গোত্রের লোকদের এসলাহের জন্য প্রেরণ করেন৷

সামুদ গোত্রের আবাদস্থল ছিলো খুবই সবুজ-শ্যামল ও তরুতাজা৷ ফসলাদি ও ফল-মুলের অাধিক্যতা ছিলো৷ সেখানে কম-বেশি পাঁচ-ছয়টি বড় বড় শহর ছিলো৷ নেয়ামতের প্রাচুর্যতায় সেই জনপদের অধিবাসীদের আহমিকায় পেয়ে বসে৷ ফলে তাদের কাছে আল্লাহ পাক হযরত লুত আলাইহিস সালামকে নবী বানিয়ে প্রেরণ করেন৷

সৌন্দর্য্য মণ্ডিত একাধিক শহর থাকার কারণে সেই আবাদস্থলে পর্যটকদের প্রচুর ভিড় হতো৷ যার দরুন সেই জনপদের লোকদের কাজে-কর্মে কিছুটা অসুবিধা হতো৷

ইবলিস শয়তান এই সুযোগে তাদের ওয়াসওয়াসা দিলো৷ ইবলিসের প্ররোচনায় তারা ভাবতে লাগলো বহিঃর্গামী যে সমস্ত লোক এখানে আসে তাদের নাবালক সুশ্রী ছেলেদের সাথে সমকামিতা আরম্ভ করে দিলে পর্যটকদের আসা বন্ধ হবে৷

ভিজিট ও সাবস্ক্রাইব করুন আওয়ার ইসলাম টিভি

যেই ভাবা সেই কাজ৷ তারা ইবলিসের বুদ্ধিতে প্ররোচিত হয়ে গেলো৷ পরবর্তীতে তারা এই বদ-আদতে অভ্যস্ত হয়ে গেলো৷ হযরত লুত আলাইহিস সালাম তাদের বুঝালেন৷ কিন্তু তারা মানলো না৷ ফলে আল্লাহ পাকে আযাব নাযিল হলো৷

হযরত জিব্রীল আলাইহিস সালাম আল্লাহ পাকের হুকুমে সেই জনপদকে উল্টিয়ে দিলেন৷ তাদের ওপর পাথুরে বৃষ্টি বর্ষণ হলো৷ বর্ষিত পাথরের সামনের অংশে ছিলো আগ্নিস্ফুলিঙ্গ৷ এই আযাবে পতিত হয়েই তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে ধ্বংস হয়েছে৷

বর্তমানে ডেট-সী বা মৃত সাগর খ্যাত স্থানটাই সেই কওমে লুতের জনপদ ছিলো৷ এই সাগরের অবস্থান অন্যান্য সাগর থেকে আরো নিচু স্থানে৷ ফলে এর থেকে পানি আসা-যাওয়া করার কোনো রাস্তা নেই৷ এই সাগরে সাপ, কিট-পতঙ্গ, মাছ ইত্যাদি কোনো প্রাণীই জীবিত থাকতে পারে না৷

কওমে লুতের এহেন করুণ পরিস্থিতি পৃথিবীর সকল ঐতিহাসিক ও বুদ্ধিজীবীদের ভালো করেই জানা৷ এরপরেও এই পশ্চিমা কালচার নিয়ে কথিত বুদ্ধিজীবীরা একের পর এক আস্ফালন করেই যাচ্ছে৷ কারণটা বোধগম্য নয়৷

পশ্চিমা বিশ্বের এহেন নষ্ট কালচারের বিস্তর ছড়াছড়ি ভারত উপমহাদেশেও বাড়ছে দিন দিন৷ এই জনপদের বাসিন্দারাও যদি এখনই সতর্ক না হয় তাহলে সেদিন বেশি দূরে নয়, আল্লাহর আযাব এই ভূখণ্ডকেও গ্রাস করে নিবে৷

সমকামিতা, প্রেসিডেন্ট ওবামা ও বাংলাদেশ

বিসফটি – বিস্তারিত জানুন


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ