আওয়ার ইসলাম: রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল আটটায় এ ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। তিন সিটির মোট ভোটার ৮ লাখ ৮২ হাজার ৩৬ জন।
তিন সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল রোববার বিকেলেই সব কটি কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। তিন নগরে পুলিশ, বিজিবি সদস্যদের পালা করে টহল শুরু হয়েছে গত শনিবার থেকেই।
প্রায় পক্ষকাল ধরে তিন সিটিতে চলেছে নির্বাচনী প্রচার। এবারই প্রথম এই তিন সিটিতে মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে।
আজ নির্বাচন হলেও নির্বাচনী প্রচারের কোলাহল শেষ হয়েছে শনিবার মধ্যরাতেই। এরপরও গতকাল থেমে ছিল না নীরব জনসংযোগ। কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চেয়েছেন গতকাল। আর শীর্ষ নেতারা বসেছিলেন ভোটের কৌশল প্রণয়নে। শেষ মুহূর্তের ভোটের হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা। আজ এসব হিসাব-নিকাশের অবসান হবে।
নির্বাচনী প্রচারের সময় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও পুলিশের ধরপাকড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শঙ্কাও ছিল সিটির মানুষের মধ্যে। বিএনপির প্রার্থীরা তাঁদের নেতা-কর্মীদের ওপর নিগ্রহের অভিযোগ করেছেন অনেকবার। সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কার কথাও বলেছেন তাঁরা। তবে বারবারই নির্বাচন কমিশন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নিঃসংকোচে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিন সিটির মধ্যে সিলেট মেয়র পদে প্রার্থী সাতজন। এর মধ্যে একজন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বাকি ছয় প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান (নৌকা), বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী (ধানের শীষ), সিপিবি-বাসদের মো. আবু জাফর (মই), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোয়াজ্জেম হোসেন খান (হাতপাখা), স্বতন্ত্র প্রার্থী নগর জামায়াতের আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের (টেবিল ঘড়ি) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এহছানুল হক তাহের (হরিণ)।
২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী সংখ্যা ১২৭ জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ৬২ জন। এ সিটিতে ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন।
দেশের উত্তরের জনপদ রাজশাহী সিটিতে এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩৮। মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), বিএনপির মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন (ধানের শীষ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মো. হাবিবুর রহমান (কাঁঠাল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. শফিকুল ইসলাম (হাতপাখা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মুরাদ মোর্শেদ (হাতি)।
৩০টি ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত (নারী) ১০টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশনের আয়তন ৫৮ কিলোমিটার। মৌজার সংখ্যা ২৭টি। সিটি করপোরেশনের হালনাগাদ ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন। এবার এই সিটি করপোরেশনের চতুর্থ নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৯৪ জন এবং নারী কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১২৩টি এবং ভোট কক্ষ সংখ্যা ৭৫০টি। ছয় মেয়র প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির তাঁদের প্রার্থী প্রত্যাহার করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে। আছেন আওয়ামী লীগের সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ (নৌকা), বিএনপির মো. মজিবর রহমান সরোয়ার (ধানের শীষ), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির আবুল কালাম আজাদ (কাস্তে), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের মনীষা চক্রবর্তী (মই), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ওবাইদুর রহমান মাহাবুব (হাতপাখা)।