সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৮ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ, প্রতিবাদ জানালেন শায়খ আহমাদুল্লাহ বিবাহ একটি ইবাদত, এর পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি নারী অধিকার কমিশনের সুপারিশে আলেম প্রজন্ম-২৪-এর আপত্তি  জুলাই-আগস্টের ত্যাগের পরও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ পাইনি: মির্জা ফখরুল নারীবিষয়ক সুপারিশগুলো কোরআন-হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: জামায়াত আমির ‘১৬ বছরের জঞ্জাল দূর না করে নির্বাচন দিলে সমস্যা সমাধান হবে না’  প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা সরকারি নিবন্ধন পেল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কলরব’ ‘সিরাহ মিউজিয়াম’ চালু করছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী মহাসমাবেশ সফল করতে যেসব কর্মসূচি নিয়েছে হেফাজত

যে ঘর প্রদক্ষিণ করেছেন সব নবি-রাসূল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ হাশেমী
প্রাবন্ধিক

মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবাঘর। এ কাবা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের এক অপূর্ব নিদর্শন। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম আল্লাহ তাআলার নির্দেশে ফিরিশতাগণ কাবাঘর নির্মাণ করেন। পবিত্র কুরআন মাজিদে এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে- "নিশ্চয়ই সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এ ঘর। যা মক্কায় অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়।" (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং- ৯৬)।

এরপর হজরত আদম আ. আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের আদেশে কাবাঘর পুনঃনির্মাণ করেন। এরপর হজরত শিষ আ.কাবাঘর পুনঃনির্মাণ করেন। এরপর হজরত ইবরাহিম আ. স্বীয় পুত্র হজরত ইসমাইল আ.-কে সাথে নিয়ে কাবাঘর পুনঃনির্মাণ করেন।

পবিত্র কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে- "আর স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম ও ইসমাইল কাবা গৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিলো। তখন তারা দোয়া করে বলেছিলো- হে আমাদের রব! আমাদের থেকে এ খিদমত কবুল করে নাও। নিশ্চয়ই তুমি সবকিছু শ্রবণকারী, সবকিছু জ্ঞাত।" (সূরা আল বাকারাহ, আয়াত নং- ১২৭)। এরপরেও বিভিন্ন সময়ে মহিমান্বিত এ ঘরের সংস্কার কাজ সাধিত হয়েছে।

পবিত্র কাবা মুসলমানদের ইবাদত ও সামাজিক জীবনের প্রাণকেন্দ্র। মুসলমানগণ কাবামুখি হয়ে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। আর জিলহজ মাসে বিশ্বের নানা প্রান্তের লাখ লাখ মুসলমান কাবাকে ঘিরে গড়ে তোলেন ঐক্য ও ভালোবাসার মিলনমেলা।

কাবাঘর এমন এক স্থান, যার চারদিকে প্রদক্ষিণ করেছেন পৃথিবীতে আগমনকারী প্রায় সব নবি-রাসূল। এ পৃথিবীতে আল্লাহ তাআলা অসংখ্য নবি-রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাঁদের সঠিক সংখ্যা কেউ জানেনা। এক লাখ চব্বিশ হাজার বা দুই লাখ চব্বিশ হাজারে নবি-রাসূলের সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়।

এ ব্যাপারে বিজ্ঞ আলিমগণের অভিমত হলো- আল্লাহ রাব্বুল আলামিন প্রেরিত রাসূল এবং নবিগণের নির্দিষ্ট সংখ্যা সর্বসম্মতভাবে প্রমাণিত নয়।আল্লাহ তাআলা যতো নবি প্রেরণ করেছেন, অনির্দিষ্টভাবে তাঁদের সকলের উপর ইমান আনা আমাদের জন্য অত্যাবশ্যক।

এ সকল নবি ও রাসূল পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকায় আগমন করেছিলেন। তবুও মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কয়েকজন ব্যতিত সব নবি-রাসূলকে পবিত্র কাবাঘরে হজ পালন করার নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। কয়েকজন নবি অন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত থাকায় হজ করতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে সাহাবি হজরত উরওয়া ইবনে জুবায়ের রা.-এর বর্ণনাটি উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন- "সকল নবিই হজ পালন করেছিলেন। তবে হজরত হুদ আ. ও হজরত সালেহ আ.-এর বিষয়টি ব্যতিক্রম। স্বীয় উম্মতের ব্যস্ত থাকা অবস্থায় তাঁদের ইন্তিকাল হয়। হজরত নুহ (আ.) হজ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর সময়কালের প্লাবনে পবিত্র কাবা আক্রান্ত হয়।

হজরত ইবরাহিম আ. পরবর্তীতে এ ঘরের পুনঃনির্মাণ করলে পরবর্তী সব নবি-রাসূল কাবাঘরের হজ করেছিলেন।" (বায়হাকি)। এছাড়াও সাহাবি হজরত আবু মুসা আল আশয়ারি রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদিসও প্রণিধানযোগ্য।

তিনি বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- "৭০ জন নবি 'রাওহা' (মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী একটি অঞ্চল) অতিক্রম করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে হজরত মুসা আ.ও ছিলেন। এ নবিগণ খালি পায়ে ও আবায়া পরে আল্লাহ তাআলার প্রাচীন ঘরের (পবিত্র কাবাঘর) দিকে গমন করেছিলেন।" (আত তারগিব ওয়াত তারহিব)।

লেখক:  প্রাবন্ধিক ও কলেজ শিক্ষক

আরও পড়ুন : জাপানে তৈরি হচ্ছে ব্যতিক্রমী ‘মোবাইল মসজিদ’


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ