শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


যে ৭ টি গুণের কারণে স্বামী আপনাকে ভালোবাসবেন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মদ
অাওয়ার ইসলাম

আমরা জানি, জান্নাতী নারীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে স্বামী যে স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন, সে স্ত্রী জান্নাতী।হজরত উম্মে সালামা রা. এর বর্ণনা মতে, রাসুলে রা. বলেন, কোন স্ত্রী লোক যদি এমন অবস্থায় মারা যায় যে, তার স্বামী তার ওপর সন্তুষ্ট, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [তিরমিযি]

একজন নারী ভালো জীবনসঙ্গী হিসেবে তার স্বামীর কাছে  ভালো স্ত্রী হতে পারেন নানান উপায়ে। স্বামীর কাছে  স্ত্রীরা যেসব গুণাবলীর কারণে ভালো হয় তার মাঝে উল্লেখযোগ্য ৭ টি গুণ হলো —

১. সালিহা হওয়া (খুঁত না ধরা) :  মেয়েদের মধ্যে আল্লাহ এমন বিশ্লেষণী ক্ষমতা দিয়েছেন যে তারা চাইলে যে কোনো কিছুরই খুঁত ধরতে পারে। একজন মেয়ের স্বামী যতই তার সাথে ভালো করুক না কেন, সে চাইলেই তার দোষ ধরতে পারবে– এই গুণ তার আছে। কিন্তু একজন ‘সালিহা’ গুণের অধিকারী স্ত্রী কখনো এমন করেন না।

২. কানিতা হওয়া ( স্বামীর দোষ উপেক্ষা করা)  :  আল্লাহ্‌ বলছেন একজন স্ত্রীর সবচাইতে বড় গুণ হলো স্বামীর দোষ এড়িয়ে যাওয়া, দেখেও না দেখার ভান করা, ভুলে যাওয়া। প্রত্যক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে তার প্রতি বিরক্তি প্রকাশ না করা।  রাসূলুল্লাহ সা. আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন–  কেউ যদি তার স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে কোনও দোষ  দেখে বিরক্ত বোধ করে, তখন সে তার এমন গুণের কথা স্মরণ করুক যার জন্য সে তাকে ভালবাসে।

৩. হাফিযা হওয়া (স্বামীর অবর্তমানে তার দোষের কথা  না বলা):  ‘হাফিযা’ শব্দের অর্থ প্রতিনিয়ত রক্ষা করা। এর প্রথম অর্থ হলো– স্বামীর অবর্তমানে মেয়েরা তার সম্মান রক্ষা করবে, তার দোষের কথা মানুষকে বলবে না, তার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করবে না। স্বামী-স্ত্রী হচ্ছে একে অপরের অংশ।

একজন স্বামী/স্ত্রী যখন নিজের তার সঙ্গীর অবর্তমানে দোষের কথা বলে, তখন সে তার নিজের একটা অংশেরই অপমান করে। ‘হাফিযা’ হওয়ার দ্বিতীর অর্থ হলো–  স্বামী যখন তাদের দেখছে না তখনও মেয়েরা তার বিশ্বাস ভঙ্গ করবে না। এ দুটি গুণের কারনেও স্বামী তার স্ত্রীকে ভালোবাসবেন।

৪. নামাজ এবং অন্যান্য ইবাদাত ঠিকমতো আদায় করা :  যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদাত না করে, নামাজ না পড়ে এবং আল্লাহর নির্দেশিত পথে না চলে, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট নন। স্বামী/স্ত্রী নিয়মিত নামাজ না পড়ার কারণে অনেক সংসার ভেঙে গেছে। আল্লাহর প্রতি কর্তব্য পালনে অলসতা-উপেক্ষা করার কারণে মুসলিম সংসারে অত্যন্ত দ্রুত ভাঙ্গন ধরে যায়।সুতরাং, আপনি সঠিকভাবে-সময়মতো নামাজ আদায় করুন। অবশ্যই এ গুণটি একজন মুসলিম নারীর জন্য গর্বের।

৫. দীনের প্রতি অনুরাগী হওয়া : যে স্ত্রী সন্তানদেরকে ইসলামিক জ্ঞানে এবং আচরণে বড় করার ব্যাপারে সচেতন থাকেন। সন্তানদের ইসলামিকভাবে বড় করা নিয়ে স্বামীর সাথে আলোচনায় বসে, ঘরে সুন্নাতের শিক্ষা  চালুর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করে, তাদের প্রতি স্বামীর ভালোবাসা বেড়ে যায়। স্বামী তার স্ত্রীর ইসলামি মূল্যবোধকে সম্মান করে। ইসলামের প্রতি স্ত্রীর অনুরাগ দেখে তাকে ভালোবাসেন।

৪. স্বামীর জন্য সাজগোজ করা:  মনোবিজ্ঞানীরা বলেন– ছেলেরা সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ বোধ করে চোখের দেখায় । মেয়েদের সহজাত প্রবণতা হলো– স্বামী ছাড়া পৃথিবীর সবার জন্য সে সাজবে। অথচ, একটা মেয়েকে সুন্দর দেখার সবচেয়ে বেশি অধিকার হলো তার স্বামীর।

আপনার স্বামীর জন্য সাজুন। আপনার চার-পাঁচজন সন্তান আছে, সেটা কোন ব্যাপার না, তবুও স্বামীর জন্য সাজুন। বাইরে চারপাশে শয়তান আর ফিতনা ছড়িয়ে আছে। আপনার স্বামীর আপনার মাঝেই সৌন্দর্য দেখা উচিৎ, বাইরের কোন কিছুর মাঝে নয়।

৫. সন্দেহ ও গীবত পরিত্যাগ :  কখনো সন্দেহ করতে যাবেন না। সন্দেহ সম্পর্ককে ধ্বংস করে। আপনার জীবনসঙ্গী আপনার খুব কাছের মানুষ এটা সত্যি। কিন্তু খুঁতখুঁত করে যদি তার বিষয়ে অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করেন, আপনি নিঃসন্দেহে হতাশ হবেন। মানুষ কখনো নিখুঁত নয়।

আর মনে রাখবেন, প্রত্যেকে তার নিজ নিজ হিসাব দিবে। তাই সন্দেহ দূর করুন। স্বামী বা স্ত্রী একে অপরের চাদরস্বরূপ, ছোট-খাটো ভুলত্রুটি বা সীমাবদ্ধতা নিয়ে অন্যদের কাছে বলে বেড়াবেন না, গীবত করবেন না। আপনি এ দুটি পরিত্যাগ করুন, আপনার স্বামী অবশ্যই আপনার প্রতি তার ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেবেন।

৬. পেছনের কথা তোলা বাদ দিন : অনেকের নিজের বর্তমান ভালোবাসার মানুষটির সামনে কথায় কথায় পুরনো দিনের কথা বলে থাকেন। এই অভ্যাসটি আপনার বর্তমান সম্পর্কের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। ‘তুমি এই কাজটি করেছিলে, তুমি ওই কথাটা বলেছিল ’ এই ধরনের কথাবার্তা আপনাকে শুধুমাত্রই একজন বিরক্তিকর মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করে। সুতরাং এ অভ্যাসটি পরিত্যাগ করলে স্বামী আপনাকে ভালোবাসবেন।

৭.  বাড়াবাড়ি না করি : আপনার স্বামী কি করছেন, কি খেলেন কিংবা কোথায় যাচ্ছেন তা জিজ্ঞেস করা অবশ্যই আপনার কর্তব্য। কিন্তু এই সামান্য কুশল বিনিময় বিরক্তির পর্যায়ে তখনই পরে যখন আপনি অযথাই তার ওপর খবরদারি করতে যান। ‘এখানে যাবেন না, সেখানে কেন গেলেন, এর সাথে কথা বলবেন না, তার সাথে মিশবেন না’ এই ধরনের অতিরিক্ত অধিকার খাটিয়ে কথা বলা বিরক্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। বুঝতে হবে কোন আচরণটি আকর্ষণীয় এবং কোনটি বিরক্তিকর। যে স্ত্রী এমন বাড়াবাড়ি আচরণ পরিত্যাগ করেন, স্বভাবতই স্বামী তাকে ভালোবাসবেন।

আরও পড়ুন : যে ১০ টি গুণের কারণে স্ত্রী আপনাকে ভালোবাসবেন
দ্রুত বিয়ে করতে যে আমলটি করবেন

আরএম/


সম্পর্কিত খবর